২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাদ্যাভাবে মৃত্যুঝুঁকিতে লাখো শিশু

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মিনিটে একজনের মৃত্যু; ব্রাজিলে এক দিনে ৭০ হাজার আক্রান্ত ; ভারতে এক দিনে আক্রান্ত অর্ধলাখের বেশি; জুলাইয়ে আক্রান্ত দ্বিগুণ আফ্রিকার দেশগুলোতে
-

করোনাভাইরাস বিপর্যয়ের বাস্তবতায় দুনিয়াজুড়ে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠীর লাখো শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। এ ছাড়া বলা হয়েছে, বিদ্যমান বাস্তবতায় ক্রমবর্ধমান অপুষ্টির পরিণতি হবে দীর্ঘমেয়াদি। এটি একটি প্রজন্মকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে।
করোনাভাইরাস এবং এ ভাইরাসকেন্দ্রিক নানা বিধিনিষেধের ফলে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠী এমনিতেই খাদের কিনারায় গিয়ে পৌঁছেছে। ক্ষুদ্র খামারগুলো বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গ্রামগুলো খাদ্য ও চিকিৎসাসহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় করোনার প্রথম বছরেই বিশ্বজুড়ে এক লাখ ২৮ হাজার শিশু-কিশোরের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ।
এর আগে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানায়, করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় চরম খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা এই বছর দ্বিগুণ বাড়তে পারে। ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ পরিচালক আরিফ হুসেইন বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য কোভিড-১৯ সম্ভবত বিপর্যয়কর হতে যাচ্ছে। দৈনিক মজুরি পেলে খাওয়া সম্ভব হয় এমন লাখ লাখ মানুষের জন্য এই মহামারী মারাত্মক বিপর্যয়কর। লকডাউন আর বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা মন্দায় ইতোমধ্যে তাদের সামান্য সঞ্চয় শেষ হয়েছে।’ খবর এপি, এনডিটিভি, সিএনএন, রয়টার্স, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, এএফপি, সিনহুয়া, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর, ইন্ডিয়া টাইমস, ওয়ার্ল্ডোমিটার, ব্লুমবার্গ ও বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মিনিটে একজনের মৃত্যু : বিশ্বের মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারীতে সর্বাধিক ভুক্তভোগী দেশের তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হয়েছেন ৪৫ লাখ ৬৮ হাজার ছয় শ’ ৩৫ জন এবং মারা গেছেন এক লাখ ৫৩ হাজার আট শ’ ৪৫ জন। এ ছাড়া দেশটিতে প্রতি মিনিটে অন্তত একজন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জটিলতায় মারা যাচ্ছেন। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৪৬১ জন, যা গত ২৭ মে’র পর থেকে সর্বোচ্চ। ওই দিন দেশটিতে মৃতের তালিকায় নাম উঠেছিল ১ হাজার ৪৮৪ জনের। গত দুই মাসের মধ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে সর্বোচ্চ হারে। গত ১১ দিন ধরে দৈনিক এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন সেখানে। সর্বাধিক করোনা সংক্রমিত ২০টি দেশের মধ্যে প্রতি লাখে মৃত্যুর হারে ছয় নম্বরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে করোনায় মারা গেছেন অন্তত ৪৫ জন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমের পাঁচটি রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে রেকর্ডসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ওই পাঁচ রাজ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন। আরকানসাস, ফ্লোরিডা, মন্টানা এবং ওরিগন রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে। মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে ক্যালিফোর্নিয়ায়ও। মিশিগান অঙ্গরাজ্যে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৯৯৬ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
ইউরোপে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তরুণরা : ইউরোপের দেশগুলোতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা বলছেন, ইউরোপে নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে তরুণ-যুবকদের ভূমিকা থাকতে পারে। সংস্থাটির ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক ডা: হ্যান্স ক্লুগ বলেন, তরুণ-যুবকদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে। ইউরোপে হঠাৎ করেই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হয়তো এটাই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারের উচিত এখনই তরুণ জনগোষ্ঠীকে সঠিক বার্তা দিয়ে সতর্ক করা। একের পর এক বিভিন্ন দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা বুঝতে পারছি এটি হচ্ছে মানুষের আচরণে পরিবর্তনের কারণে। কয়েকটি দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে কম-বয়সীরা অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে। সুতরাং তাদেরকে কিভাবে সাবধান করা যায় তা নিয়ে বিশেষ ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন আছে।
হ্যান্ডগ্লাভস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা : করোনা প্রতিরোধে অনেকেই হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করছেন। তবে এ নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞ ডা: অ্যালিসন বার্টলেট বলেন, হ্যান্ডগ্লাভস আসলে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ধরনের সুরক্ষা দিচ্ছে না। হ্যান্ডগ্লাভস হয়তো করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে না। হ্যান্ডগ্লাভস নিয়ে সুরক্ষার বিষয়ে আমাদের ভুল ধারণা রয়েছে। গ্লাভস পরেই নাক, মুখ, চোখে স্পর্শ করা হলে ভাইরাস সারা দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, বারবার হাত পরিষ্কার করা করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সবচেয়ে ভালো উপায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মাত্র দু’টি আঙুলের সাহায্যে হাতের কব্জির সামনে থাকা অংশ টেনে গ্লাভস খোলা উচিত। এরপর তা সঠিক জায়গায় ফেলে দিতে হবে কিংবা ধুয়ে ফেলতে হবে। গ্লাভস খোলার পর সাবান কিংবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। তাহলেই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকানো যাবে।
সুশৃঙ্খল-নিরাপদ দূরত্বে হজযাত্রীরা : এবার প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে খুবই সীমিত পরিসরে পালন করা হচ্ছে হজ। এবার মাত্র এক হাজার নাগরিককে এই ধর্মীয় বিধান পালনের সুযোগ দিয়েছে সৌদি সরকার। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। এবার হজে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। হজের জন্য মনোনীতদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। হজ শুরুর আগেই দুই ধাপে কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হজে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজকদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। কাবা শরিফ স্পর্শ বা চুম্বন নিষিদ্ধ। একজন থেকে অন্যজনের শারীরিক দূরত্ব থাকবে ১.৫ মিটার। তাওয়াফ, নামাজ, সাঈ প্রতিটি কাজেই এই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ ছাড়া মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় ২ আগস্ট পর্যন্ত হাজীদের জন্য অবস্থান নির্ধারিত থাকবে। সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রিভেনটিভ হেলথের সহকারী উপমন্ত্রী ড. আবদুল্লাহ আসিরি বলেন, ‘হজযাত্রীরা যাতে করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র হজ পালন করতে পারেন, সে জন্য আমরা সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীসহ (পিপিই) সব ধরনের স্বাস্থ্যকর পণ্য তাদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।’
ব্রাজিলে এক দিনে ৭০ হাজার আক্রান্ত : বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমিত দেশ ব্রাজিলে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বুধবার লাতিন আমেরিকার দেশটি করোনারোগী শনাক্ত ও মৃত্যু উভয় ক্ষেত্রেই গড়েছে নতুন রেকর্ড। বুধবার দেশটিতে নতুন করে ৬৯ হাজার ৭৪ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, যা এখন পর্যন্ত তাদের এক দিনে রোগী শনাক্তের রেকর্ড। একই দিন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৯৫ জন, এটিও এক দিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড। এ পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৯০ হাজার ১৩৪ জন। জুলাই থেকেই ব্রাজিলে দৈনিক প্রতিদিনই করোনায় ১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। জুনের মাঝামাঝি থেকেই এই সময়ের মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে।
জার্মান হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ৫ জনে ১ জনের মৃত্যু : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিক থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানির হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ২২ শতাংশ রোগী মারা গেছেন। নতুন এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বার্লিনের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, জার্মানির হাসপাতালগুলোর জরুরি সেবা ও জরুরি ওষুধ বিভাগ (ডিআইভিআই) যৌথভাবে পরিসংখ্যানটি চালিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষ রোগী মৃত্যুর হার ছয় গুণ বেশি। পরিসংখ্যানে আরো দেখা গেছে, ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী রোগীর মৃত্যুর হার ২৭ শতাংশ। তবে ৩৮ শতাংশ মৃতের বয়স ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে। জার্মানির ৯২০টি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ১০ হাজার ২১ জন রোগীর ওপর পরিসংখ্যান চালিয়ে ফলাফল বের করা হয়েছে।
জুলাইয়ে আক্রান্ত দ্বিগুণ আফ্রিকার দেশগুলোতে : আফ্রিকার দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০০ শতাংশ বেড়ে গেছে গত দুই মাসে। আর কেবল জুলাই মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। করোনা আক্রান্তদের শনাক্তের সরঞ্জামাদির স্বল্পতা এবং অন্যান্য উপকরণের অভাবের মধ্যেই মহামারী আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) শঙ্কা, করোনাভাইরাসের সাথে লড়াইয়ের বিষয়টি এখনো অন্ধকারেই রয়েছে, সরকারিভাবে দেয়া তথ্যের চেয়ে প্রকৃত করোনারোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। করোনা পরীক্ষার স্বল্পতা, দেরিতে ফল প্রদান, বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য অবকাঠামো এবং শনাক্তদের ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপের অভাবে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আইআরসির সিনিয়র প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা স্ট্যাসি মেয়ার্নস বলেছেন, আফ্রিকার দেশগুলোতে জুলাই মাসে করোনারোগী দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কিন্তু উদ্বেগের।
পর্যটন খাতের ক্ষতি ৩২ হাজার কোটি ডলার : কোভিড-১৯ মহামারীর প্রথম ৫ মাসেই বিশ্বের পর্যটন খাত ৩২ হাজার কোটি ডলার আয় হারিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও)। এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে পর্যটন খাতের যে ক্ষতি হয়েছে, তা ২০০৯ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের ক্ষতির তিনগুণ। সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধের কারণে ৫ মাসে বিশ্বজুড়ে পর্যটকের সংখ্যা কমে মাত্র ৩০ কোটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। পর্যটকের এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৬ শতাংশ কম। পর্যটন খাতের অচলাবস্থা লাখ লাখ মানুষকে বিপাকে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেছেন ইউএনডব্লিউটিওর মহাপরিচালক জুরাব পললিকাশভিলি। আন্তর্জাতিক পর্যটনে যে নাটকীয় ধস দেখা দিয়েছে তা উন্নয়নশীল দেশগুলোসহ বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের জীবনধারণকে ঝুঁকিতে ফেলেছে বলেছেন তিনি।
ভিয়েতনামজুড়ে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে : হঠাৎ করে ভিয়েতনামের পর্যটন শহর দানাংয়ে ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছে যা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সরকার। নতুন দফায় ভিয়েতনামে অন্তত ৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তারা সবাই সম্প্রতি সৈকত শহর দানাংয়ে গিয়েছিলেন বা এমন কারো সংস্পর্শে এসেছেন। এ অবস্থায় সপ্তাহের শুরুতেই পর্যটকদের জন্য দানাংয়ের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শহরটিতে পূর্ণ লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি দানাং ভ্রমণে গিয়েছেন এমন সবাইকে খুঁজে বের করে অন্যদের থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছে। দানাংয়ে নতুন করে ভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী গুয়েন সুয়ান ফুকে। বুধবার দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, পুরো দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের আরো দ্রুত এবং আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে হবে। ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজের রূপ পরিবর্তন করতে থাকে। তাই বছরের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সাথে এখনকার ভাইরাসের স্ট্রেইন আলাদা হতে পারে।
ভারতে এক দিনে আক্রান্ত অর্ধলাখের বেশি : মহামারী করোনাভাইরাস রোধ করা ভারতের জন্য কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহামারী শুরুর পর প্রথমবার এক দিনে পঞ্চাশ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ১২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফলে ভারতে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯২ জন। বুধবার সারা দিনে ৭৭৫ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ হাজার ৯৬৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই ভাইরাস। তবে চিকিৎসা নিয়ে সারা দেশে মোট ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৮২ জন মানুষ করোনাকে হারিয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে গেছেন, এক দিনে সুস্থ ৩২ হাজার পাঁচশর বেশি। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার বেড়ে ৬৮.৩৪ শতাংশ।
১০ আগস্ট বাজারে আসছে রাশিয়ার ভ্যাকসিন : বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে আগামী দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে যাচ্ছে রাশিয়া। এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ১০-১২ আগস্টের মধ্যে নিজেদের উৎপাদিত ভ্যাকসিন ছাড়তে দেশটি পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা। মস্কোভিত্তিক গামালিয়া ইনস্টিটিউট এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। জনগণের জন্য ভ্যাকসিনটি উন্মুক্ত করা হলেও প্রথমে তা স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো সামনের কাতারের কর্মীরাই আগে পাবেন। রাশিয়ার এই ভ্যাকসিন তৈরি ও গবেষণা কাজে অর্থায়ন করেছে দেশটির সার্বভৌম সম্পদ তহবিল। সোভিয়েত আমলে ১৯৫৭ সালে বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ সফলতার দিকে ইঙ্গিত করে তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, ‘এটি একটি স্পুটনিক মুহূর্ত।’ তিনি বলেন, ‘স্পুটনিকের হুইসেল শুনে আমেরিকানরা অবাক হয়েছিল। এই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও একই অনুভূতি হবে। ভ্যাকসিন আনার কাজে রাশিয়াই প্রথম হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement