১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জমে উঠেছে কোরবানির পশুহাট

ঢাকায় কোরবানির হাটে তুলতে ব্যাপক গবাদিপশু আনা হচ্ছে। গতকাল বুড়িগঙ্গা-১ সেতুর ওপর থেকে তোলা ছবি : নাসিম সিকদার -

রাজধানীতে কোরবানির পশুহাট জমে উঠেছে। প্রথম দিকে হাটগুলোতে গরুর যে সঙ্কট ছিল তা কেটে গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিটি হাটেই অনেক গরু এসেছে। দামও ক্রেতার সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। বেচাকেনাও বেড়েছে আগের থেকে। তবে ক্রেতার আগমন এখনো আশানুরূপ নয়। আগামী দুই দিন পুরোদমে বেচাকেনা চলবে বলে মনে করছেন ক্রেতাবিক্রেতারা।
হাজারীবাগ অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের তুলনায় হাটে গরুর সরবরাহ বেড়েছে। লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন আশপাশের প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সবই ভরে গেছে হরেক রকম গরুতে। বেপারিরা জানান, মঙ্গলবার রাতে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা থেকে অনেক গরু এসেছে। এ হাটে কথা হয় পাবনার নগরবাড়ী ঘাটের ব্যবসায়ী বারেক আলীর সাথে। তিনি জানান, ২২টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। রায়ের বাজারের আশিকুর রহমান একটি গরু কিনেন ৬৪ হাজার টাকায়। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষকে খুশি দেখা যায়।
শাজাহানপুর মৈত্রী সঙ্ঘের মাঠে দেখা যায়, দুপুর থেকেই পুরো হাট গরুতে কানায় কানায় ভরে গেছে। আগের দিনও যেখানে হাটের অনেক স্থান ফাঁকা দেখা গেছে সেখানে মাঠের আশাপাশের সব জায়গা গরুতে ভরে গেছে। বিক্রিও আগের থেকে বেড়েছে। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থেকে চারজনে মিলে ২০টি গরু এনেছেন। এদের একজন শরীফ হোসেন জানান, গত দুই দিনে তারা চারটি গরু বিক্রি করেছেন। এর প্রতিটিতেই লাভ হয়েছে তাদের। তবে এখনো হাটে ক্রেতার স্রোত শুরু হয়নি জানিয়ে আরো ক্রেতার সমাগম আশা করেন তিনি। হাটে কথা হয়, ইকবাল হোসেন নামে এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, গরুর দাম স্বাভাবিক আছে। গত বছর যে গরুর দাম ছিল এক লাখ ৫০-৬০ হাজার টাকা। এবারো সে রকম। ইসতিয়াক হোসেন নামে এক ক্রেতা ৬৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেন। তিনি জানান, বিক্রেতা গরুটির দাম চাচ্ছিলেন ৭৫ হাজার টাকা। ৬৫ হাজার টাকায় কিনেছি। মনে হয়েছে বিক্রেতা অতিরিক্ত দাম হাঁকাননি।
গোপীবাগের হাটেও গতকাল নতুন করে অনেক গরু আসতে দেখা যায়। আগের দিন পর্যন্ত যেখানে হাটের পরিধি শুধু মাঠ ও আশপাশের সড়কে সীমাবদ্ধ ছিল সেখানে বিকেলে দেখা যায় হাট টিটিপাড়া ও কমলাপুর স্টেডিয়াম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। একইভাবে মেরাদিয়া হাটেও দেখা যায় অনেক গরুর সমাগম হয়েছে। মূল সড়ক থেকে আশপাশের অলিগলি গরুতে ভরে গেছে। এখনো ট্রাক ভর্তি করে গরু আসছে। আফতাব নগর হাটে আগেই অনেক গরু ছিল। গত দুই দিনে আরো অনেক এসেছে। বিক্রিও বেড়েছে বেশ। তবে বিক্রেতারা মনে করছেন আজ বৃহস্পতিবার ও কাল শুক্রবার কোরবানির পশুর হাটে মূল বেচাকেনা হবে। এ হাটে আসা হাবিবুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, রাজধানীতে গরু কিনে বেশিদিন রাখার জায়গা নেই। আবার গরুর খাবার কেনা, খাওয়ানোও ঝামেলার কাজ। এজন্য শহরের মানুষ শেষ দুই দিনে বেশি গরু কেনেন। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার থেকে হাট পুরোপুরি জমে উঠতে পারে।
একইভাবে রাজধানীর স্থায়ী হাট গাবতলীতে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। দরদাম যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি বিক্রিও বেড়েছে। বেচাকেনায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই খুশি। তারা বলছেন, গতবারের মতো দামে বিক্রি হচ্ছে পশু। এতে ব্যবসায়ীরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন এবং ক্রেতাও ঠকছেন না। রাজধানীর হাটগুলোতে পশুর সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এবার শেষ পর্যন্ত দাম সহনীয় থাকবে বলে মনে করছেন হাটসংশ্লিষ্টরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement