২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্যার পানি বাড়ছেই

বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে নিয়ন্ত্রণ বাঁধ; জামালপুরে পরিস্থিতি ভয়াবহ; সুনামগঞ্জে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে (বাঁয়ে); নওগাঁয় বাঁধ ভেঙে বানের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে : নয়া দিগন্ত -

নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। রংপুরে তিস্তার পানি কমতে শুরু করলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। সুনামগঞ্জে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন র্বোড।
নওগাঁর মান্দা ও আত্রাই উপজেলায় নতুন করে আরো ছয়টি স্থানে আত্রাই নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। বাঁধভাঙা পানিতে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া ফসলি জমি তলিয়ে গেছে এবং মৎস্যচাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত বুধবার রাতে মান্দা উপজেলার জোকাহাট, চকরামপুর, কয়লাবাড়ি ও পার নুরুল্যাবাদ এলাকায় আত্রাই নদের দক্ষিণ পাড়ের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ (মান্দা ও আত্রাই সড়ক) ভেঙে যায়। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ হাট ও বৈঠাখালি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়।
পানি বাড়তে থাকায় জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙে যমুনার পানি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিপদসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে নদ-নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চার লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট। সর্বত্র পানি থাকায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে না বন্যার্তরা। রাস্তঘাট তলিয়ে গেছে। পানি এখনো ওঠেনি এমন রাস্তায় কিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তারা খোলা স্থানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গবাদিপশুর খাদ্যের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে পানিবাহিত রোগও দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীতীরবর্তী গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের নতুন নততুন এলাকা প্লøাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের এক লাখ ২২ হাজার ৩২০ জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তারা ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্যসঙ্কট। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পানিবন্দী প্রায় পাঁচ লাখ বন্যার্ত মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেয়া দিয়েছে খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ গোখাদ্যের তীব্র সঙ্কট। ঘরে বন্যার পানি ওঠায় উঁচু স্থানে বসবাস করছে বন্যার্ত এলাকার মানুষ। যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জে হু হু করে বাড়ছে পানি
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে পানি। নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। দেওয়ানগঞ্জ বাজার-বেলতলী বাজার-মলমগঞ্জ বাজার- জিলবাংলা সুগার মিলস্-উপজেলা পরিষদ-সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-রেলস্টেশন সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির সাথে নদ-নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়কের মণ্ডল বাজার এলাকায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে পাউবো।
ইসলামপুরে খাদ্যসঙ্কটে বানভাসিরা
ইসলামপুর (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থতি চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। যমুুনা-ব্রহ্মপুত্র, দশআনীসহ সব নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যাকবলিত মানুষ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে চরম খাদ্য, চিকিৎসা ও খাবার পানি, গোখাদ্য ও শিশুখাদ্যসঙ্কটে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বানভাসি মানুষ ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে। অনেক এলাকায় এখনো ত্রাণ পৌঁছেনি।
বকশীগঞ্জে বন্যার পানি বাড়ছেই
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যার পানি বেড়েই চলেছে। এ উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন, মেরুরচর, বগারচর, নিলক্ষিয়া ও বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্রতিদিনিই প্লাবিত হচ্ছে। দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে গ্রাম থেকে গ্রামের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামের মধ্যে সব ক’টি গ্রামেই প্লাবিত হয়েছে।
চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব বন্যাকবলিত এলাকার মানুষকে। গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যার্তরা। বিশেষ করে অনেকের বাড়িতে চুলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না করতে সমস্যায় পড়েছেন গৃহিণীরা। রাস্তাঘাট, ফসল, রোপা আমনের বীজ তলা, সবজি খেত তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। বকশীগঞ্জ উপজেলা থেকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সব সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
বকশীগঞ্জ থেকে খুটারচর, বকশীগঞ্জ থেকে মাদারেরচর হয়ে দেওয়ানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাথে বিভিন্ন এলাকার আন্তঃযোগাযোগ বন্ধ হতে চলেছে।
চৌহালীতে বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু
চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জের চৌহালীর পূর্বখাষকাউলিয়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে সাবিয়া খাতুন (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি স্থানীয় ট্রাঙ্ক মিস্ত্রি আবু সাঈদের ছোট মেয়ে। চৌহালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও নিহতের প্রতিবেশী রোকনুজ্জামান জানান, পরিবারের অজান্তে শিশুটি দুপুরের দিকে বাড়ির উঠানে আসা বন্যার পানিতে ডুবে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে শিশুটির লাশ ভেসে উঠে। চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া জানান, বানের পানিতে ডুবে মৃত শিশুটির পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেয়া হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
রংপুর অঞ্চলে কমছে পানি : বাড়ছে ভাঙন
রংপুর অফিস জানায়, তিস্তার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। এরই মধ্যে বন্যা প্রটেকশন ওয়ালের তিনটি অংশে প্রায় ১৩০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। বিভিন্নস্থানে বাড়িঘর বসভিটে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অন্য দিকে দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, খাবারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় গঙ্গাচড়ার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান আকবরিয়া ইউসুফিয়া ডিগ্রি মাদরাসার সামনে তিস্তার পানির স্রোতে ধসে পড়েছে ৬০ মিটার বন্যা প্রটেকশন ওয়াল।
এ ছাড়াও ওই ইউনিয়নের গাটুপাড়ায় ৪০ ও বেরাতি পাড়ায় ৩০ মিটার এলাকার বন্যা প্রটেকশন ওয়ালের সিসি ব্লক ধসে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। অন্য দিকে নোহালী ইউনিয়নের ফোটামারি টি হেড গ্রোয়েন ও আলসিয়া পাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ ভাঙনের মুখে পড়ায় সেখানেও জিও ব্যাগে বালু ফেলছে পাউবি। অন্য দিকে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫০টি বাড়িঘর ও শতশত একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গজঘণ্টার ছালাপাক থেকে গাউছিয়া বাজার এবং পূর্ব রমাকাণ্ড থেকে গাউছিয়া বাজার যাওয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন কাজ ভালো না হওয়ায় এই ভাঙন।
পাইকান জুমাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, আমার স্কুলের সামনে বন্যা প্রটেকশন ওয়ালে ধস ধরেছে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো জিও ব্যাগ ফেলা হয়নি। যদি জিও ব্যাগ ফেলা না হয়, তাহলে স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। পাইকান আকবরিয়া ইউসুফিয়া ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ বাকের আলী জানান, আমরা পাঁচ দিন আগ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলে আসছিলাম মাদরাসার সামনে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য। কিন্তু তারা তা করেনি। সে কারণেই ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে। এখন যে গতিতে কাজ চলছে সেটা খুবই ধীর।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, পাইকান মাদরাসার সামন, গুটিপাড়া ও বৈরাতিতে প্রায় ১১০ মিটার প্রটেকশন ওয়ালের সিসি ধসে গেছে। সাথে সাথেই ওই তিনটি ভাঙন পযেন্টে দুই হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরো তিন হাজার ব্যাগ প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নোহালী মূল রক্ষা বাঁধ রক্ষায় ১৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে নদীতে।
এ দিকে কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নের গনাইচর এলাকার হযরত আলী জানান, বানের পানি টিওবওয়েল এবং টয়লেট নষ্ট হয়ে যাওযায় তারা বিশুদ্ধ খাবার পানি পাচ্ছেন না। নোংরা পানি দিয়ে করতে হচ্ছে নিত্য দিনের কাজ। এ ছাড়াও টয়লেট নষ্ট হওয়ায় প্রাকৃতিক কাজ সারতে তারা ভীষণ অসুবিধায় পড়েছেন।
পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুরিয়া গ্রামের মমিনুর রহমান জানান, ওই গ্রামে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এতে মানুষ খুব খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন। অনেকেই দুই তিন দিন না খেয়ে আছেন। এ ছাড়াও বানের পানিতে সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গরু ছাগলের খাবার নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। রংপুর ডিসি আসিব আহসান জানিয়েছেন, বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ১০০ টন চাল, সাড়ে ২২ লাখ টাকা এবং পশু খাদ্যেও জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেগুলো বিতরণ কার্যক্রম চলছে।
আত্রাইয়ে বাঁধ ভেঙে দুর্ভোগ বৃদ্ধি
নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানি ও উজান থেকে আসা পানির ঢলে আত্রাই নদীর পানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়কের জাতআমরুল নামক স্থানের সড়ক, পাঁচুপুর পালপাড়া সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, আত্রাই-সিংড়া সড়কের বৈঠাখালী বেড়িবাঁধ, ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন শিবপুর গ্রামের অর্ধেকাংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পানিবন্দী হয়ে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা জানান, নওগাঁর আত্রাইয়ে তিন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আত্রাই নদীর পানি কিছুটা কমলেও গতকাল বৃহস্পতিবার বিপদসীমার প্রায় ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ দিকে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে আত্রাই-সিংড়া এবং আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ।
গত কয়েক দিন থেকে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এ দিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের জাতআমরুল নামক স্থানে এবং আত্রাই-সিংড়া পাকা সড়কের বৈঠাখালী ও পাঁচুপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নভেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, পানিবন্দী প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। গতকালও পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার চিঁড়া, মুড়ি, গুড়, খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। এ দিকে আত্রাই-সিংড়া এবং আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার লোকজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে এসব রুটে চলাচলকারী সিএনজি, অটোচার্জার ও রিকশা ভ্যান চলকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
মান্দায় বাঁধে ভাঙন
মান্দা (নওগাঁ) সংবাদদাতা জানান, গত কয়েক দিনের একটানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর পানি। এ নদীর পানি জোতবাজার পয়েন্টে এখন বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মান্দায় ৭টি বাঁধ ভেঙে ৪ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি সাহায্য পৌঁছেনি।
আত্রাই ও রানী (ফকিরনি) নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এ দুই নদীর উভয় তীরের ৭টি বেড়িবাঁধ ও জোকাহাট দাসপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ৪ সহস্রাধিক মানুষ। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। এসব বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা আত্রাই নদীর ডান তীরে পারনুরুল্লাবাদ থেকে মিঠাপুর পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মাত্র এক ফুট নিচে পানি অবস্থান করছে। কোথাও কোথাও মূল বাঁধ টপকে পানি পার হচ্ছে। বালুর বস্তা ফেলে পানি ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, এ দুর্যোগ মুহূর্তে সহযোগিতা করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন। রাস্তায় তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আত্রাই নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া পরিষ্কার হলে দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে। পানি বাড়তে থাকায় বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো তদারকি করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন।
সুনামগঞ্জে আবারো বন্যার পূর্বাভাস
সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে তৃতীয় দফা বন্যার পূর্বাভাস জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ কারণে জেলা হাওর পাড়ের বিছিন্ন গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক’দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় জেলা শহরের আশপাশে বাসা বাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করলেও হাওর এলাকায় বন্যার পানি রয়েছে স্থিতিশীল।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে হালকা বৃষ্টি ও রোদের আলোয় আকাশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় বানবাসির মনে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু এত আশার মধ্যেও পাউবোর তৃতীয় দফা বন্যার পূর্বাভাসে হাওরবাসীর মনে নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দক্ষিণা বাতাসে হাওরের উত্তাল ঢেউ আর বৈরী আবহাওয়া শঙ্কা জাগায় হাওরবাসীর মনে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সবিবুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শহরতলীতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আগামী ২০-২১ জুলাই থেকে পুনরায় জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
সিরাজগঞ্জে ফুঁসে উঠেছে যমুনা
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাবিক গতিতে পানি বেড়ে ভয়ঙ্করভাবে ফুঁসে উঠে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে যমুনা নদী। পানির তীব্র স্রোতে ভাঙছে যমুনার দুইকূল। যমুনা নদী অববাহিকার সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যাকবলিত পাঁচটি উপজেলা সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরের বানভাসি পানিবন্দী এক লাখ ৭৩ হাজার মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমদশায় পৌঁছেছে। দুই দফা বন্যায় খাদ্য, জ্বালানি, বিশুদ্ধ খাবার, শিশু খাদ্য, গরু ছাগল, হাঁস-মরগি খাদ্যের সঙ্কটের সাথে টয়লেট-পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যায় দুর্বিষহ মানবতার জীবন-যাপন করছে তারা। যমুনা নদীতে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যাপূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এ দিকে এক মাসের ব্যবধানে যমুনা নদীর প্রবল ঘূর্ণাবর্তে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলা শিমলা স্পারটি তিনবার ধসে পাকা কংক্রিটের ৫০ মিটারসহ মাটির সম্পূর্ণ অংশ (৫০) মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকূল ইসলাম জানান, শিমলা এলাকায় যমুনা নদীর প্রবলস্রোত বাঁক নিয়ে স্পারটিতে আঘাত করতে থাকলে জিও ব্যাগে বালু ও মাটিভর্তি করে ফেলেও নদীর প্রবল ঘূর্ণাবর্তের কারণে স্পারটি রক্ষা করা যায়নি।
সারিয়াকান্দিতে ভয়াবহ অবস্থা
বগুড়া অফিস ও সারিয়াকান্দি সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সারিয়াকান্দির কাছে যমুনা নদীর পানি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিপদসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ৬টি ইউনিয়নÑ কাজলা, শেরপুর, চালুয়াবাড়ী, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল, চন্দনবাইশার প্রায় ৪০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন এবং ৭ হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ, শাকসবজি, বীজতলা আক্রান্ত হয়েছে। এতে করে প্রায় সাড়ে ৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান। পানি বৃদ্ধি অব্যাহৃত থাকায় হাইস্কুল প্রাইমারিসহ বেশ কয়েটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। প্রতিনিয়ত বাঁধ ও উঁচুস্থানে বানভাসী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রৌমারীর শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ জলিলের কুড়া নামক স্থানে ২০ মিটার অংশ ভেঙে ১০টি গ্রামসহ উপজেলা পরিষদ চত্বর ও হাট-বাজারে বন্যার পানি প্রবেশ করায় লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এতে উপজেলা সদরের সাথে ছয়টি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে। ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ১০১ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর সদর পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
রৌমারী শহর রক্ষাবাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত
ইউএনবি জানায়, বন্যার পানির তোড়ে রৌমারী শহররক্ষা বাঁধের ২০ মিটার অংশ ভেঙে বুধবার রাতে নতুন করে ১০টি গ্রামসহ রৌমারী উপজেলা পরিষদ ও রৌমারীবাজার প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। রাজীবপুর উপজেলা পরিষদসহ পুরো উপজেলা শহরও পানিতে ডুবে গেছে।
এ দিকে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ধরলার পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১০১ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ৬০ ইউনিয়নের ৫২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত বুধবার সকালে চিলমারীর মাছাবন্ধা গ্রামে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে রাকু মিয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দফা বন্যায় ১০ শিশু, যুবক ও দুই বৃদ্ধসহ ১৩ জন পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
মানিকগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
মানিকগঞ্জ ও ঘিওর সংবাদদাতা জানান, পদ্মা-যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে মানিকগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে জেলার শিবালয়, দৌলতপুর এবং ঘিওর উপজেলার বিভিন্ন নদনদী ও খালবিলে দ্রুত পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর ও ফসলি জমিও তলিয়ে যাচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলো দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।


আরো সংবাদ



premium cement