২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চরম ব্যয় সঙ্কোচনের পথে সরকার

এডিপিতে নিম্ন অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সব প্রকল্পের অর্থছাড় স্থগিত
-

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ‘নি¤œ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত’ সব প্রকল্পের অর্থছাড় স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পে এখন থেকে আর কোনো ব্যয় করা বা অর্থছাড় করা হবে না। তবে স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়কে এ সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের এডিপির আওতাধীন প্রকল্পগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
চলতি ‘২০২০-২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে’ শীর্ষক পরিপত্রে বলা হয়েছে, সীমিত সম্পদের ব্যয়সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে চলতি অর্থবছরের এডিপিভুক্ত প্রকল্পগুলোর উচ্চ/ মধ্যম/ নি¤œ অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ দফতর/সংস্থাগুলো ‘উচ্চ অগ্রাধিকার’ চিহ্নিত প্রকল্পগুলো যথানিয়মে বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘মধ্যম অগ্রাধিকার’ চিহ্নিত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে প্রকল্পের যেসব খাতে অর্থ ব্যবহার অবশ্যাম্ভাবী বলে বিবেচিত হবে, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ দফতর/সংস্থাগুলো স্বীয় বিবেচনায় সেসব খাতে অর্থ ব্যয় করবে। এ ক্ষেত্রে যেসব অর্থনৈতিক কোডের ব্যয় পরিহার করা সম্ভব, সেসব কোডের ব্যয় আবশ্যিকভাবে পরিহার করতে হবে।
প্রকল্পের অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের ‘উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ অবমুক্তি ও ব্যবহার নির্দেশিকা ২০১৮’ সহ বিদ্যমান আর্থিক বিধিবিধান ও নিয়মাচার যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্যও পরিপত্রে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, রাজস্ব আয়ের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এই অর্থ আমরা কোথা থেকে পাবো। তাই এডিপির কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অর্থছাড় স্থগিত করে এই খাত থেকে আমরা অর্থ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যয় করব।
এর আগে গত মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ব্যয়সাশ্রয়ী হতে হবে। যে যে খাতে সম্ভব ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের এডিপি আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এডিপিতে মোট প্রকল্পে সংখ্যা ১ হাজার ৫৮৪টি। উন্নয়ন প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন খাত। এই খাতে ৫২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১০টি খাতের মধ্যে আরো রয়েছেÑ ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন; বিদ্যুৎ; শিক্ষা ও ধর্ম; বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি; গ্রামীণ অর্থনীতি তথা পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান; স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ; কৃষি; পানিসম্পদ ও জনপ্রশাসন।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা।
২০২০-২০২১ অর্থবছরের ১ হাজার ৫৮৪টি প্রকল্পের মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ১ হাজার ৪৫৬টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১২৭টি এবং জেডিসিএফ অর্থায়িত প্রকল্প একটি। এ ছাড়াও, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে ৮৯টি প্রকল্প রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement