২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় সুস্থ লাখ ছাড়াল

এক দিনে মৃত্যু ৩৩, শনাক্ত ৩,১৬৩; মোট মৃত্যু ২,৩৫২, শনাক্ত ১,৯০,০৫৭; ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৪,৯১০, মোট সুস্থ ১,০৩,২২৭
-

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ১২৯তম দিনে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেল, সেই সাথে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন হাজার ১৬৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৫৭ জনে। গত এক দিনে আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাস। তাতে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৪২৪ জন। আইইডিসিআরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও চার হাজার ৯১০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা এক লাখ তিন হাজার ২২৭ জন হলো।
গতকাল মঙ্গলবার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৮ মার্চ। তা দেড় লাখ পেরিয়ে যায় গত ২ জুলাই। সেদিন চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ। আর ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ৫ জুলাই তা দুই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
ডা: নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ জনের এবং বাড়িতে থাকা অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, তিনজন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভাগের, পাঁচজন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের, দুইজন রংপুর বিভাগের এবং পাঁচজন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এই ৩৩ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ১১ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ছয়জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং দুইজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত এক দিনে ৭৯টি ল্যাবে মোট ১৩ হাজার ৪৫৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে; এ পর্যন্ত দেশে পরীক্ষা হয়েছে ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৪০০টি নমুনা। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং মৃত্যু হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৬১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬৬০ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৫৭২ জন এবং এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৪৭১ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৮ হাজার ১৩১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে দুই হাজার ৫০ জনকে। এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৯৮ হাজার ৩০৫ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬১৮ জন এবং এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৩৬ হাজার ৬৬২ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬১ হাজার ৬৪৩ জন।
চট্টগ্রামে টানা দুই দিন করোনায় মৃত্যু নেই
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, গত দুই দিনে চট্টগ্রামে করোনায় সংক্রমিত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। তবে গত এক দিনে ৮৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ১৬৭ জন। এর মধ্যে ৯৬ জন নগরের ও ৭১ জন বিভিন্ন উপজেলার। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ১১ হাজার ৭৬৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার ১৯০ জন নগরের ও তিন হাজার ৫৭৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এ দিকে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন মোট ২১৭ জন। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনে ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪০ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে নগরের ১১ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ২৯ জন আছেন। ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে সোমবার ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের করোনা মিলেছে। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে চট্টগ্রামের ২৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৪ জনের দেহে করোনা মিলেছে। শেভরণ ল্যাবে ১১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট এক হাজার ৪১৪ জন করোনা রোগী।
চিকিৎসক আইরিনের মৃত্যু : দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা: সুলতানা জামান আইরিন (৩৪) মঙ্গলবার দুপুরে মারা গেছেন। আইরিন গত মাসের মাঝামাঝিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর তিনি বাসায় চিকিৎসা নেন। গত শুক্রবার তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানেই গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ২টার দিকে তিনি মারা যান। আইরিনের স্বামী বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সাংগঠনিক সম্পাদক মইজ্জুল আকবর জানান, আইরিন চার মাস ধরে উচ্চতর শিক্ষা সংক্রান্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটিতে থাকা অবস্থায় তিনি করোনা আক্রান্ত হন। এরপর তিনি বাসায় চিকিৎসা নেন। গত শুক্রবার তাকে চমেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিজুয়ান রেহান জানিয়েছেন, ভর্তির সময় থেকেই তার শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল ছিল। হঠাৎ করে সকালে তার ফুসফুসের জটিলতা দেখা দেয়। অক্সিজেন স্যাচুরেশান কমে যায়। এর পর লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সেখানে মারা যায়। আইরিন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ১৪তম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। তার একটি মেয়ে সন্তান আছে।
খুলনায় উপসর্গ নিয়ে চারজন ও করোনায় একজনের মৃত্যু
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় সোমবার মধ্যরাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত করোনায় ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। খুমেক হাসপাতাল আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: মিজানুর রহমান জানান, সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা এলাকার মোহাম্মদ আলী (৫৮) করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ১৩ জুলাই দুপুর পৌনে ১২টার দিকে করোনা সন্দেহে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে করোনা টেস্টের জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্র যায়। সোমবার রাত ৩টার দিকে যশোরের মনিরামপুরের মহাদেবপুর এলাকার মতিয়ারের (৪৫) মৃত্যু হয়। তিনি করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই রাতেই করোনা সন্দেহ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। তার নমুনা অবশ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। একই রাতে খুমেক হাসপাতালে করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয় যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা পাড়ার দিলীপ রায়ের (৬৪)। তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ১৩ জুলাই বিকেলে খুমেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন।
এ ছাড়া নগরীর খালিশপুর থানার নয়াবাটি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হালিম (৩৭) কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গত সোমবার তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেকটেড ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তার মৃত্যু হয়। করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সোমবার রাতে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন নগরীর ৯ রামচন্দ্র দাস লেনের মোল্লা আলিম হোসেনের স্ত্রী খুরশিদা আক্তার (৫৬) মৃত্যুবরণ করেন।
বগুড়ায় করোনায় দলিল লেখক ও উপসর্গে দুইজনের মৃত্যু
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে দলিল লেখক ও করোনা উপসর্গে এক বৃদ্ধা ও ধুনটে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- বগুড়া শহরের জলেশ^রীতলার বৃদ্ধা মেহের নিগার (৭৬) এবং শেরপুর উপজেলার দলিল লেখক আমজাদ হোসেন (৫৭) ও রফিকুল ইসলাম (৩৫)। সোমবার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আমজাদ হোসেন বগুড়ার শেরপুরের শাহ-বন্দেগী ইউনিয়নের চকমকন্দ গ্রামের বাসিন্দা। একই হাসপাতালে রাত প্রায় সাড়ে ১২টায় করোনা উপসর্গে মেহের নিগার (৭৬) নামের একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বগুড়ার জলেশ্বরীতলার বাসিন্দা মাহাবুবুল আলম জোয়ারদারের স্ত্রী। তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ (টিএমসি) ও রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা যায়। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ দিকে বগুড়ায় নতুন করে আরো ৪৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৮০৮ জনে দাঁড়াল। মঙ্গলবার বগুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন আক্রান্ত ৪৫ জনের মধ্যে সদরে ৩৭, শাজাহানপুর তিন, দুপচাঁচিয়া দুই, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি ও ধুনটে একজন করে রয়েছেন। আর ১৪ জুলাই এর প্রতিবেদন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ১৫ জুলাই জানানো হবে।
কুমেকে করোনা উপসর্গে আরো পাঁচজনের মৃত্যু
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে আরো পাঁচজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে সবাই পুরুষ। হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসিইউতে একজন এবং আইসোলেশনে চারজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সোমবার সকালে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা: মোয়াজ্জেম এসব তথ্য জানান। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে আইসোলেশনে কুমিল্লার সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আসমত আলীর ছেলে আলম হোসেন (৫১), কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার নিপেল চন্দ্র দাস (৭০), কুমিল্লার লালমাই উপজেলার কেরামত আলীর ছেলে দুদু মিয়া (৭০) ও কুমিল্লার সদর উপজেলার মান্নান (৮২)। এ ছাড়া আইসিইউতে মারা যায়, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুস ছোবাহানের ছেলে হাসান ইমাম (৬৮)। মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২০৩ জন। তাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ৬৮ জন ও করোনা উপসর্গ ১৩৫ জন।
এ দিকে কুমিল্লা নগরীতে ১১ জনসহ মঙ্গলবার কুমিল্লায় নতুন করে ৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুমিল্লা নগরীতে ২১ জনসহ এ দিন কুমিল্লা জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৫১ জন। এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৩২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ২২ হাজার ৩০ জনের। রিপোর্ট প্রাপ্তদের মধ্যে করোনার পজিটিভ চার হাজার ৬১৫ জন। কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে কুমিল্লা নগরীতে ১১ জন,লাকসাম ও চান্দিনায় চারজন করে, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া ও বুড়িচংয়ে পাঁচজন করে, দেবিদ্বারে ৯ জন, মুরাদনগর তিনজন, মনোহরগঞ্জ দুইজন, লালমাই ও আদর্শ সদরে একজন করে।
রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ী জেলায় গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৩০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ৭৫৭ জন। এর মধ্যে রাজবাড়ী পৌর এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন শতাধিক। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন পাঁচজন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পাংশা উপজেলার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সদর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১৬ জন। রাজবাড়ী সদরে আটজন ও গোয়ালন্দে ছয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ব্যাংক কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যসহ মোট ৩২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১৪ জুলাই মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪২২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে ১৪ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে পাওয়া নমুনা রিপোর্টে ৩২ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য বিভাগ।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, ট্রিপল নাইন বা ৯৯৯ দেখে কেউ হয়ত মনে করতে পারেন যে নিশ্চয়ই এটি কোনো ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানের হট নাম্বার। কিন্তু না, এটি কোনো প্রতিষ্ঠানের হট নাম্বার নয়। এই ৯৯৯ হচ্ছে টাঙ্গাইলের বর্তমান মোট করোনা রোগীর সংখ্যা। গতকাল মঙ্গলবার জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৪ জন। এ দিন আরও ১৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৫৪৪ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৩৪ জন। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার নতুন আক্রান্ত ৩৪ জনের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে সর্বোচ্চ ১৮ জন, মির্জাপুরে পাঁচজন, মধুপুরে চারজন, কালিহাতীতে তিনজন ও বাসাইলে তিনজন। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মির্জাপুরে সর্বোচ্চ ৩১২ জন, টাঙ্গাইল সদরে ২৩৫ জন, ভূঞাপুরে ৩১ জন, ঘাটাইলে ৩৬ জন, নাগরপুরে ৪২ জন, মধুপুরে ৫৮ জন, সখিপুরে ৩৫ জন, গোপালপুরে ৪০ জন, দেলদুয়ারে ৫১ জন, ধনবাড়িতে ৩০ জন, কালিহাতীতে ৪৭ জন এবং বাসাইলে ১৯ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মির্জাপুরে সর্বোচ্চ ছয়জন, টাঙ্গাইল সদরে পাঁচজন, ঘাটাইলে দুইজন, ধনবাড়িতে দুইজন, গোপালপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, সখিপুর, মধুপুর ও বাসাইলে একজন করে রয়েছেন।
শেরপুর সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে গতকাল নতুন করে আরও দুইজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের উভয়ের বাড়িই শেরপুর সদর উপজেলায়। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন ২৬৯ জন। শেরপুর সদর উপজেলায় মোট আক্রান্ত ১১৪ জন।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে এক দিনে আরও ৩০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং সুস্থ হয়েছে ১৫ জন। এ নিয়ে নোয়াখালী জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৫৭১ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের ও সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৫৬ জন। নোয়াখালীর করোনা আক্রান্তের সংখ্যার উপজেলা ভিত্তিক তথ্য হচ্ছে- সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭৫৬ জন, বেগমগঞ্জে ৭০২ জন, চাটখিলে ১৫১ জন, সোনাইমুড়ীতে ১৪১ জন, কবিরহাটে ২৯১ জন, কোম্পানীগঞ্জে ১৬৭ জন, সেনবাগে ১১৫ জন, হাতিয়ায় ৭১ জন ও সুবর্ণচরে ১৭৭ জন।
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে ব্যাংক কর্মচারী, কারিগরি কলেজের নারী প্রভাষক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, সরকারি হাসপাতালের নৈশপ্রহরীসহ নতুন করে আরও ১২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় চারজন, সরিষাবাড়ী উপজেলায় ছয়জন, মেলান্দহ উপজেলায় একজন ও ইসলামপুর উপজেলায় একজন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪০ জন। অন্যদিকে সর্বশেষ ৯৪ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৩৫ জন এবং করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।
কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের কেশবপুর উপজেলায় আরও তিন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে কেশবপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৫ জনে।
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় আরও চারজনসহ সর্বমোট ১২৯ জন করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন নারী, একজন তরুণ ও ৭০ বছররের এক বৃদ্ধ রয়েছেন। এ দিকে গত ১২ জুলাই পাঠানো নমুনায় বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন পুরুষ চিকিৎসক নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে উপজেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৯ জন। তাদের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল