২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন

৭ মার্চ জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস

ঈদুল আজহায় কর্মস্থল ত্যাগ নয়
-

১৯৭১ সালের তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণের দিন ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে পালন করবে সরকার। এ দিন বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন-বঞ্চনার শিকার বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণায় সম্মতি দেয়া হয়েছে। তবে দিনটিকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং দেশের সব জেলা-উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের বিষয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করলে তা নতুন করে আনতে বলেছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘ক’ শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় করেছিল। হাইকোর্টে রিট পিটিশন হয়েছিল, সেখানে দুটো সিদ্ধান্ত ছিল। ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা এবং প্রতি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা। তিনি বলেন, এগুলো সভায় আলোচনা হয়েছে। ৭ মার্চ একটি ঐতিহাসিক দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এসব বিষয়ে আলোচনার পর ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ৭ মার্চ ও স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে সরকার অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। তাই মন্ত্রিসভা আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধুর কোনো ম্যুরাল করার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে। কারণ ওই প্রোগ্রামের মধ্যেই অনেক কিছু আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হাইকোর্টকে এ জিনিসটি অবহিত করা হবে। পুরো যে প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হচ্ছে হাইকোর্ট সম্ভবত সে বিষয়ে অবহিত নয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এখন হাইকোর্টে বিষয়টি উপস্থাপন করবে। এরপর ৭ মার্চকে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে নতুন করে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব আনতে বলা হয়েছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৪.৭৯ শতাংশ : মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে গতকাল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। তিনি বলেন, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার ১০টি বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ৭১টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৪৬টি। ২৫টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ সময়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। খন্দকার আনোয়ার জানান, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৪টি নীতি বা কর্মকৌশল এবং ৪টি চুক্তি বা প্রটোকল অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে ৭টি।
কর্মস্থল ত্যাগ নয় : মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঈদের সময় যে তিন দিন ছুটি আছে এই ছুটি আর বর্ধিত হবে না। যে যেখানে থাকবেন, যার যেখানে কর্মস্থল তিনি তার হেডকোয়ার্টার ত্যাগ করতে পারবেন না। ঈদের ছুটির সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকতে হবে বলে জানান তিনি।
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা অনুযায়ী এবার আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্ট মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।
আগামী ১ আগস্ট (শনিবার) ঈদুল আজহা ধরে সরকারের ২০২০ সালের ছুটির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ৩১ জুলাই, ১ ও ২ আগস্ট (শুক্র, শনি ও রোববার) ঈদুল আজহার ছুটি থাকবে। এক্ষেত্রে দু’দিনই চলে যাচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে। ৩১ জুলাই (শুক্রবার) ঈদ হলে ছুটি থাকবে ৩০ ও ৩১ জুলাই এবং ১ আগস্ট (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি)। এক্ষেত্রেও ছুটির দু’দিন চলে যাচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সাধারণ ছুটি থাকে। আর এই দুই ঈদের আগের ও পরের দিন থাকে নির্বাহী আদেশে ছুটি।
করোনাভাইরাস কেভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গতকাল ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টায় এই বৈঠক শুরু হয়ে পৌনে ১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষে সাতজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রী তার ওখানে ছিলেন।’
সচিবালয় প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী মো: আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, রেলপথমন্ত্রী মো: নূরুল ইসলাম সুজন ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ভিডিও কনফারেন্সের মধ্যমে যুক্ত ছিলেন। এসব মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে।
মন্ত্রিসভা হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। সাধারণত প্রতি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিংবা সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এর আগে গত ৮ জুন জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। এরপর অবশ্য ১১ জুন বাজেট অনুমোদনের বিশেষ মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল