২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

চাষাবাদ আধুনিকায়নে কর্তারা বিদেশ যাবেন

-

চাষাবাদকে আধুনিকীকরণ না করার ফলে কৃষিকাজে অনেক বেশি সময় ও অর্থ খরচ হচ্ছে। তিন হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নিচ্ছে। আর কিভাবে এ সময় ও অর্থ সাশ্রয় করা যায় সেটার প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাসফরে বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা বিদেশ যাবেন। যাদের পেছনেই খরচ হবে প্রায় ৮ কোটি টাকা। প্রথমে প্রকল্পটির সমীক্ষা দেশব্যাপী না হওয়ায় এ নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তোলে। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে বলে একনেক সূত্রে জানা গেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার তথ্যানুযায়ী, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পোন্নয়নের কারণে মানুষ এখন আর কৃষিশ্রমিকের মতো পরিশ্রম করতে চায় না। ফলে মওসুমের সময় কৃষিশ্রমিক পাওয়া যায় না। এতে ধান রোপণ ও কাটার সময় শ্রমিকের মজুরি অনেক বৃদ্ধি পায়; যা কৃষকের উৎপাদন খরচ ও সময় বৃদ্ধি করে। ফলে কৃষি দিনদিন অলাভজনক হয়ে উঠছে। চীনসহ বিশ্বের উন্নত দেশে কৃষিকাজে রোবট, ড্রোন, সেন্সর ও কৃত্রিম বুদ্ধিচালিত যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তাই কৃষিব্যয় কমাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ অপরিহার্য। এর জন্য তিন হাজার ১৯৮ কোটি ৫২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রস্তাব করা হয়। পরে পিইসি থেকে কিছুটা কমিয়ে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকায় চূড়ান্ত করা হয়। কৃষিশ্রমিকের অভাবে শ্রমের মজুরি বেশি হওয়াতে উৎপাদন খরচ ও সময় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অলাভজনক হচ্ছে কৃষি। তাই তৃতীয় প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিতে ৫১ হাজার ৩ শ’টি বিভিন্ন ধরনেরই যন্ত্রপাতি যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পটি আগামী পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছর অনুমোদন পেলে আগামী ২০২৫ সালের জুনে সমাপ্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৬৪টি জেলার সব উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও প্রকল্পটি সমীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ২৬ জেলার ৫২ উপজেলায়। গত অর্থবছরের আরএডিপিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া নতুন অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায়ও রয়েছে। এর আগেও একই লক্ষ্যে দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সালে খামার যান্ত্রিকীকরণ নামে প্রকল্পে ব্যয় করা হয় ১৫০ কোটি টাকা। আর জুলাই ২০১৩ সাল থেকে জুন ২০১৯ সাল সময় পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় ৩৩৯ কোটি টাকায়। আর নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২৮ দিনব্যাপী ৯ হাজার গ্রামীণ মেকানিক প্রশিক্ষণ, ৫ দিনব্যাপী ১৫ হাজার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ, এক হাজার কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ, ৩০ হাজার যৌথভাবে জমি ব্যবহারকারী কৃষক বা উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ, এক হাজার ৪৪০ জন যন্ত্র উপযোগী ধানের চারা উৎপাদন কৌশল প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ ২ শ’টি, ১৯৭টি কৃষিমেলা, সমন্বিত খামারে ১২ শ’ ৪০ মেট্রিকটন বীজ সহায়তা প্রদান করা হবে। এ ছাড়াও রয়েছে ৪৩টি কর্মশালা, ১৮টি প্রশিক্ষণ ভবন ও ডরমেটরি নির্মাণ, একটি কৃষি যন্ত্রপাতি টেস্টিং ও প্রশিক্ষণ সেন্টার সুবিধা বৃদ্ধি, একটি টেস্টিং শেড নির্মাণ এবং ৩শ’টি উপকরণ সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলো হলোÑ উন্নয়নসহায়তা কার্যক্রমের আওতায় ৫১ হাজার ৩০০টি বিভিন্ন প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি যেমনÑ কম্বাইন্ড, হারভেস্টার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, পাওয়ার থ্রেসার, ড্রায়ার, পাওয়ার উইডার, পাওয়ার স্পেয়ার, পটেটো ডিগার, মেইজ শেলার ইত্যাদি সংগ্রহ ও বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া ৩০০টি ব্যাচে ৯ হাজার গ্রামীণ মেকানিককে ২৮ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পাশাপাশি এক হাজার ২০০ জন কর্মকর্তাকে ৪০টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ, এক হাজার ব্যাচে এক লাখ যৌথ জমি ব্যবহারকারী কৃষক বা উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ এবং সাড়ে ১২ হাজার জনকে ৫০ ব্যাচে যন্ত্র উপযোগী ধানের চারা উৎপাদন কৌশল সংক্রান্ত পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সেইসাথে সমন্বিত খামারে এক হাজার ২৪০ মেট্রিকটন বীজ সহায়তা দেয়া হবে। এর বাইরে ১৮টি এটিআই প্রশিক্ষণ ভবন ও ডরমেটরি নির্মাণ, একটি কৃষি যন্ত্রপাতি টেস্টিং ও প্রশিক্ষণ সেন্টারের সুবিধা সৃষ্টি, একটি টেস্টিং শেড নির্মাণ এবং ৩০০টি কৃষি যন্ত্রপাতি উপকরণ সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হবে।
আগে দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরও এখন আবার তিনজন পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যাদের পেছনে খরচ হবে ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্মকর্তারা বিদেশে শিক্ষাসফর করবেন। যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানতে বিদেশে প্রশিক্ষণ নেবেন ৫০ জন। এর জন্য ব্যয় হবে দেড় কোটি টাকা।
কমিশনের কৃষি উইং বলছে, শুধুমাত্র ২৬ জেলার ৫২ উপজেলার তথ্যাদির ভিত্তিতে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। ফলে সমীক্ষায় সারা দেশের প্রতিটি উপজেলার তথ্যাদি সঠিকভাবে উঠে আসেনি। প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পে ৩৮ হাজার ৩৩৮টি বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি খামারিদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের মাধমে ২৫ হাজার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কৃষকদের সরবরাহ করা হয়েছে। সমাপ্ত দুই প্রকল্পে আইএমইডির কোনো মূল্যায়ন হয়েছে কি না তা স্পষ্ট না। কারণ ওই ধরনের কোনো প্রতিবেদন ডিপিপিতে যুক্ত করা হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement
মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

সকল