২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় আরো ৪৬ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩,৪৮৯

-

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে এক দিনে আরও ৪৬ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ১৯৭ জন। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জনে। আইইডিসিআরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই হাজার ৭৩৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ৮০ হাজার ৮৩৮ জনে।
গতকাল বুধবার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৮ মার্চ। তা দেড় লাখ পেরিয়ে যায় গত ২ জুলাই। সেদিন চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ। আর ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ৫ জুলাই তা দুই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ এবং আটজন নারী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৮ জনের এবং বাড়িতে থাকা অবস্থায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন রাজশাহী বিভাগের, চারজন সিলেট বিভাগের, চারজন খুলনা বিভাগের, একজন রংপুর বিভাগের এবং তিনজন বরিশাল বিভাগের। এই ৪৬ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৯০ বছরের বেশি। এ ছাড়া তিনজনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, ছয়জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৬ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, দুইজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, দুইজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
বুলেটিনে জানানো হয়, আইসিডিডিআরবি মলিক্যুয়াল ডায়াগনোস্টিক ল্যাবরেটরিতে কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ৭৫টি পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ সব পরীক্ষাগারে গত এক দিনে ১৫ হাজার ৬৭২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে পরীক্ষা হয়েছে আট লাখ ৮৯ হাজার ১৫২টি নমুনা। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, মৃত্যু হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৯২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৮৫৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮০৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৮৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৩ হাজার ১৪৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে দুই হাজার ৬৯১ জনকে। এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৮৪ হাজার ২৯৯ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ১৩৪ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ২১ হাজার ৩০১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬২ হাজার ৯৯৮ জন।
চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু ২০০ ছাড়াল
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে এক দিনে আবারো ছয়জনের প্রাণহানি ঘটাল মহামারী করোনাভাইরাসে। এই নিয়ে চট্টগ্রামে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে নগরে পাঁচজন ও উপজেলায় একজন। তাতে করে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেলেন ২০৪ জন, যাদের মধ্যে ১৪৫ জন নগরের ও ৫৯ জন উপজেলার বাসিন্দা। একই সাথে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে আরো ২৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: সেখ ফজলে রাব্বি নয়া দিগন্তকে এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, চট্টগ্রামের সরকারি চারটি ও বেসরকারি দু’টি ল্যাব মিলিয়ে মোট এক হাজার ৪৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ২৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে নগরের ২১৬ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৭৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)-তে ২৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে মাত্র ১৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ মিলেছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে ২০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে ২৮ জনের শরীরে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৫৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করে দিনের সর্বোচ্চ ১১৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন ৫৬ জন। অন্যদিকে বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায় ৩৯ জনের। শেভরণ ল্যাবে আগের দিনের চেয়ে একটু কম ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করেই ৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিনও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়া চট্টগ্রামে ১০ হাজার ৭৭২ জনের মধ্যে নগরের সাত হাজার ৫০২ জন ও বিভিন্ন উপজেলার তিন হাজার ২৭০ জন বাসিন্দা আছেন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১৪ জন করোনা রোগী। এ নিয়ে সুস্থ হয়েছে মোট এক হাজার ২৭৯ জন করোনা রোগী।
রাজশাহী বিভাগে আরো তিনজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬৭
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী বিভাগে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে নতুন করে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে এ নিয়ে মোট ১০৩ জনের মৃত্যু হলো করোনায়। মঙ্গলবার নতুুন তিনজনের মৃত্যু হয়। এ দিন নতুন আরো ১৬৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মারা যাওয়া নতুন তিনজনের মধ্যে দুইজনের বাড়ি বগুড়া। অন্যজন নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। এ পর্যন্ত বগুড়ায় ৬৪ জনের মৃত্যু হলো করোনায়। এ ছাড়া রাজশাহীতে ১২, নওগাঁয় আট, নাটোরে এক এবং সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় ৯ জন করে মারা গেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও জয়পুরহাটে এখনো কারও মৃত্যু হয়নি। নতুন ১৬৭ রোগীর মধ্যে ৬০ জনই রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। এ ছাড়া পাবনায় দুইজন, বগুড়ায় ৫৫ জন, নাটোরে তিনজন, সিরাজগঞ্জে ৩০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৫ জন, নওগাঁয় দুইজন শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ৬২৭ জন। এর মধ্যে বগুড়ায় সর্বোচ্চ তিন হাজার ৫০১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা রাজশাহীতে এক হাজার ৩৩৮ জন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১৬ জন, নওগাঁয় ৫৮৬ জন, নাটোরে ২৫৬ জন, জয়পুরহাটে ৫১১ জন, সিরাজগঞ্জে ৭২০ জন এবং পাবনায় ৫৯৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার করোনামুক্ত হয়েছেন ৩২৮ জন। তাদের মধ্যে ১৭৯ জন বগুড়ার বাসিন্দা। এ দিন রাজশাহীর ৮৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫, নওগাঁর দুই, নাটোরের তিন, সিরাজগঞ্জের ১১ এবং পাবনার আটজন সুস্থ হয়েছেন।
রাজশাহীর দু’টি ল্যাবে নতুন শনাক্ত ৮২ জন : রাজশাহীর দু’টি ল্যাবে মঙ্গলবার নতুন করে ৮২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে রাজশাহীর ৬৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৬ জন এবং নাটোরের তিনজন রয়েছেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: সাইফুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার তাদের ল্যাবে ১৮২টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে পজিটিভ ৩৯টি। এ ছাড়া এদিন রামেকের ভাইরোলজি বিভাগের ল্যাবে ৪৩ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহীর বাসিন্দা ২৪ জন। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৬ এবং নাটোরের তিনজন।
সাতক্ষীরায় উপসর্গ নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অবসরপ্রাপ্ত এক স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অবসরপ্রাপ্ত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর নাম আমজাদ হোসেন (৬৫)। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ^রীপুর গ্রামের গোলাম সরদারের ছেলে। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: ভবতোষ কুমার মণ্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হন আমজাদ হোসেন। বুধবার সকাল ১০টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ দিকে সাতক্ষীরায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি রিপোর্ট পজিটিভ এবং বাকি সব রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে সাতক্ষীরার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা নগরীতে ২২ জনসহ নতুন করে কুমিল্লায় ৮১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় ১৮৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৯৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফল এসেছে ২০ হাজার ৩৪০টি নমুনার। জেলায় সর্বমোট করোনা শনাক্ত হয়েছে চার হাজার ১৬৭ জনের। কুমিল্লার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বুধবার নতুন করে করোনা আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ২২ জন, বরুড়া ও নাঙ্গলকোটে সাতজন করে, লাকসামের ১৩ জন, চৌদ্দগ্রামে ১৫ জন, চান্দিনায় পাঁচজন, বুড়িচংয়ে তিনজন, মনোহরগঞ্জে চারজন, সদর দক্ষিণে দুইজন, ব্রাক্ষণপাড়া ও আদর্শ সদরে একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন কুমিল্লায় ১৮৬ জনসহ এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ১২৪ জন। এ দিন একজনের মৃত্যুসহ মোট এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১১২ জন।
গলাচিপায় উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় নমুনা দেয়ার তিন দিন পর করোনা উপসর্গ নিয়ে ফজলুর রহমান প্যাদা (৫৫) মারা গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য বরিশাল নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও মৃত আহম্মেদ আলী প্যাদার ছেলে। জানা গেছে, ফজলুর রহমানের করোনা উপসর্গ দেখা দিলে গত রোববার হাসপাতালে নিজে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন। এর পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। বুধবার হঠাৎ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নোয়াখালীতে একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৮
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু ও ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৬২ জন। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন নোয়াখালী সদর উপজেলায় ৯ জন, সুবর্ণচরে একজন, হাতিয়ায় ১৭ জন, বেগমগঞ্জে একজন সোনাইমুড়ীতে সাতজন, সেনবাগে একজন, কোম্পানীগঞ্জে একজন ও কবিরহাটে একজন।
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, সর্বশেষ প্রতিবেদনে জামালপুরে নতুন করে আরও ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে একজন করে মেডিক্যাল কলেজছাত্রী, পলিটেকনিক কলেজছাত্র, আনসার সদস্য, ডাক্তারের ব্যক্তিগত চেম্বারের স্বাস্থ্যকর্মী, ওষুধ কোম্পানির গাড়িচালক ও ব্যবসায়ী, ষাটোর্ধ্ব বয়সের দুইজন নারী ও ১২ বছর বয়সের এক শিশু রয়েছে। এর মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় ১০ জন, সরিষাবাড়ী উপজেলায় দুইজন ও ইসলামপুর উপজেলায় একজন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৬১ জন। অন্যদিকে সর্বশেষ চারজনসহ মোট সুস্থ হয়েছে ৪৩৬ জন এবং করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জন। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে জামালপুর স্বাস্থ্য বিভাগ।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪৪ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৩৭ জনে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪১০ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৪১৭ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পঞ্চগড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
পঞ্চগড় সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুলসুম বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। তিনি পঞ্চগড় পৌর এলাকার রাজনগরের ইসমাইল হোসেন খোকনের স্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রতন মুনশী (৪৮) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। মৃত রতন মুনশী কালিগঞ্জ উপজেলার ফয়লা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শিরিন জানান, রতন মুনশী ঠাণ্ডা, কাশি, গলাব্যথা ও জ¦র নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ দিকে ঝিনাইদহে গতকাল নতুন করে আরও ১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে আসা ৩৯ ফলাফলের মধ্যে ১৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৩৩ জনে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম এ তথ্য জানিয়েছেন।
বগুড়ায় করোনায় দুইজন এবং উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানায়নি সিভিল সার্জন অফিস। এ নিয়ে করোনায় মারা গেলেন ৬৪ জন। এ ছাড়া গতকাল বুধবার সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গাবতলী উপজেলার মরিয়া এলাকার আব্দুল কালাম (৫০) মারা গেছেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ দিকে বুধবার নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৫৫ জন। গত কয়েকদিন ধরেই বগুড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। নতুন ৫৫ জন আক্রান্ত নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত দাঁড়াল তিন হাজার ৫০১ জনে। গতকাল সকালে অনলাইন বিফ্রিংয়ে বগুড়ার সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানিয়েছেন, জেলায় ৭ জুলাই পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৫০১ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজর ৩৫৭ জন। আক্রান্তদের পুরুষ ৩৯ জন, নারী ১৫ জন ও শিশু একটি। বগুড়া সদরে আক্রান্ত ৪৩ জন, শিবগঞ্জে তিন, শাজাহানপুরে চার, গাবতলী দুই, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও দুপচাঁচিয়ায় একজন করে।
গাজীপুরে করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধার মৃত্যু
গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরে করোনাভাইরাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার আছিয়া খাতুন (৬২) নামে এক বৃদ্ধা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি কাপাসিয়া থানার রানীগঞ্জ এলাকার মিয়ার উদ্দিনের স্ত্রী। হাসপাতালের পরিচালক ডা: খলিলুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগছিলেন বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন। নমুনা পরীক্ষা করা হলে তার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ আরও ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৭৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে বুধবার বিকেলে পাওয়া নমুনা রিপোর্ট এই ৩১ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য বিভাগ।
চৌগাছায় শ্বাসকষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু
চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জেল হোসেন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মাড়–য়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি কৃষক ছিলেন। কয়েকদিন আগে ক্ষেতে কাজ করার সময় তাকে ভীমরুলে কামড়ায়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: লুৎফুন্নাহার লাকি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার : পরিবেশমন্ত্রী সাকিবকে ডিপিএলে চান বিসিবি প্রধান নির্বাচক কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি টি-২০ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল খুলনায় হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র? জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা

সকল