২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহাবিপাকে বেসরকারি শিক্ষকরা

গত তিন মাস বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে
-

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা ঘরে বসে বেতন পেলেও মহাবিপাকে পড়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মূলত ছাত্রছাত্রীদের মাসিক বেতন ও টিউশন ফির ওপর নির্ভরশীল। করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকারি প্রণোদনাতো নাই-ই, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকেও তারা গত তিন মাস বেতন নিতে পারেননি। বিশেষ করে রাজধানী কিংবা রাজধানীর অদূরে গড়ে ওঠা প্রাথমিক, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে রাজধানীর ভাড়া বাসা ছেড়েছেন অনেকেই। কবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তাও কেউ বলতে পারছেন না। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আলো ছড়ানো এসব শিক্ষকের জীবনই এখন আর্থিক দৈন্যদশায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আসমাউল বিশ্বাস। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তিনি ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। গত তিন মাস ১৮ হাজার টাকা করে বাসা ভাড়া বহন করেছেন। কিন্তু অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি এখন বাসা ছেড়ে দিবেন নাকি রেখে দেবেন তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন। তার শুভাকাক্সক্ষীদের অনেকেই শুধু ঘরের আসবাবপত্র রাখার জন্য ছোট্ট একটি রুম ভাড়া নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এখন সব আসবাবপত্র বাড়িতে নিয়ে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে সেগুলোতো আবার আনতে হবে এই সমস্যাও আছে। আসমাউল বিশ্বাস বলেন, এতদিন বড় অঙ্কের বাসা ভাড়া বহন করে যাচ্ছি। সামনে হয়তো আরো অনেক দিন ভাড়া বহন করতে হবে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া এতদিন বড় অঙ্কের বাসা ভাড়া টেনে নেয়া কতখানি সম্ভব।
রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে উঠেছে বাড্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ওই স্কুলে রয়েছে প্রায় ৪০০ ছাত্রছাত্রী। স্কুলের ভাড়া বাবদ দিতে হয় ৬৫ হাজার টাকা। স্কুলটি পরিচালনায় রয়েছেন ১৯ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী। করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতির মধ্যে গত তিন মাসের ভাড়া দিতে পারেননি তারা। স্কুলের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে সবাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন শিক্ষক বাসা ভাড়া দিতে না পেরে বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল্লাহ আল মামুননয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের স্কুল মূলত ছাত্রছাত্রীদের বেতনের ওপর নির্ভরশীল। করোনার মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন উঠাতে পারছি না। এজন্য স্কুলের ভাড়া বাকি পড়েছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারছি না। তারপর আবার বাড়িওয়ালা সিকিউরিটির জন্য দুই লাখ টাকার চেক নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা খুবই বিপদে আছি। কোনো মতে ডালভাত খেয়ে দিন পার করছি। আর্থিক দৈন্যে কয়েকজন শিক্ষক ইতোমধ্যে বাসা ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন। এভাবে আর কত দিন চলব। সরকারি প্রণোদনা না এলে আমাদের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাবে।
রাজধানীর অদূরে সাভারের জিনজিরা ও কলমা এলাকায় জিটিএফসি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দু’টি শাখা রয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রী রয়েছে প্রায় ৬০০ এবং অর্ধশতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। করোনা পরিস্থিতিতে অন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো তারাও কঠিন বিপদে পড়েছেন। গত তিন মাসেরও বেশি সবকিছু তালাবদ্ধ। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন উঠাতে পারছে না। ফলে দু’টি শাখার ভাড়া ৬০ হাজার টাকা করে তিন মাস বকেয়া পড়েছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতনভাতাও বন্ধ হয়ে পড়েছে। কলমা শাখার প্রিন্সিপাল নাজমুল হাসান বলেন, করোনার এই পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। বেতনভাতা বন্ধ। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সামনে কিভাবে চালাব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তিনি বলেন, অনেকেই আর্থিক দৈন্যে বাড়ি চলে গেছেন। এক শিক্ষককে ফোন দিয়েছি আসার জন্য, কিন্তু তার কাছে আসার ভাড়া পর্যন্ত নাই। দীর্ঘদিন বেতনভাতা দিতে পারছি না। অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজার ২টি হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান, তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের তীব্র তাপদাহে পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির ৬ জেলায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ, সিলেট বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা মাতামুহুরিতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ২ আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ ফেনীতে ইসতিসকার নামাজে মুসল্লির ঢল গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে ইসরাইলের সামরিক ব্যয় মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা : কাদের গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন

সকল