২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাজেট ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি

-

২০২০-২১ অর্থবছরের সংসদে পাস হওয়া বাজেটকে অবাস্তবায়নযোগ্য উল্লেখ করে একে ‘ঘৃণাভরে’ প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরার বাসা থেকে ইন্টারনেটে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই বাজেট কোনো মতেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। অর্থাৎ এত আয় তারা কোত্থেকে করবে সেটা তারা সুনির্দিষ্টভাবে বলেনি। রাজস্ব আয় যেটা বলেছে, এটা একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ গত বছরের সমস্ত অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, ৫০ ভাগও তারা আদায় করতে পারেনি। এই বাজেট করোনাকালীন সময়ের বাজেট নয়। এটি হচ্ছে একটি ব্যুরোক্র্যাটিভ বাজেট। এই বাজেট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই বাজেট ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন একটা আপদকালীন বাজেট সরকারের তৈরি করা উচিত ছিল। অর্থাৎ করোনাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আপদকালীন, একদিকে স্বাস্থ্য, মানুষের জীবন এবং অন্যদিকে জীবিকা। মানুষের মানবিক দিকটা সবচেয়ে বড় করে আসা উচিত ছিল মানুষকে বাঁচানোর জন্য। সেগুলো এই বাজেটে নেই।
এই বাজেট প্রত্যাখ্যানে দল থেকে কোনো কর্মসূচি দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিবাদ কোনো কর্মসূচি নির্ভর করে সময় ও কালের ওপরে। এখন যে সময়টা চলছে এই সময়ে কোনো কর্মসূচি দেয়াটা খুবই কঠিন। আমরা তো আমাদের বক্তব্য বলে যাচ্ছি। আমাদের নেতাকর্মী তাদেরকে বাঁচানোটা আমাদের একটা দায়িত্ব¡। ইতোমধ্যে আমাদের প্রায় ৭৬ জনের বেশি নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের অসংখ্য কর্মী আক্রান্ত হয়েছে। এমন কোনো কর্মসূচি আমরা করবো না সেখানে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অবশ্যই আমাদের ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে হবে। সে জন্য সমাবেশ বা সেই ধরনের কোনো কর্মসূচি করতে গেলে সোশ্যাল ডিসন্টেনসিং রক্ষা করা সম্ভব হয় না। সেই কারণে আমরা আপাতত সেই ধরনের কোনো কর্মসূচি দেইনি। ভবিষ্যতে অবশ্যই সুযোগ হবে তখন এ ধরনের কর্মসূচি আমরা দেবো।
বাজেটে যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছে তা সার্বজনীন নয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, কর্মসূচিগুলো কিছু নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে গৃহীত। এভাবে মূলত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় গোষ্ঠীতন্ত্র লালন করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল যে মন্দা থাকবে তাতে মানুষের আয় এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়ে রাজস্ব আয়ে চরম ঘাটতি তৈরি হবে। তাই বলা যায়, এই ঘাটতি গিয়ে ঠেকবে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকায়। ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারের মূল পদক্ষেপ হবে ঋণ করা। বাজেটেই উল্লেখ করা হয়েছে ব্যাংক থেকে নেয়া হবে ৮৫ হাজার কোটি টাকা যেটা শেষ পর্যন্ত দ্বিগুণে গিয়ে দাঁড়াবে। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের এই অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা ধার করার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ একেবারে শূন্যের কোঠায় চলে আসবে যা কর্মসংস্থানের পথ একেবারেই বন্ধ করে দেবে। এতেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। তাই সরকারকে বিপুল পরিমাণ টাকা ছাপাতে হবে। এই টাকা ছাপানো উচ্চমূল্য স্ফীতি তৈরি করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে প্রচণ্ডভাবে দুর্বল করে দেবে, যার ফল হবে মারাত্মক।
তিনি বলেন, এই বাজেট করোনার সময় স্বাস্থ্য সঙ্কটে পড়া মানুষের নাভিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়ার বাজেট, করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া কোটি কোটি অনাহারী মানুষকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ঠেলে দেয়ার বাজেট। গরিব মানুষের সুবিধা কমিয়ে ধনীদের সুবিধা বাড়িয়ে অর্থনৈতিক বৈষম্য আরো বৃদ্ধির বাজেট। সর্বোপরি এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটকারীদের আরো সুযোগ সৃষ্টির বাজেট। জনগণের কাছে ন্যূনতম জবাবদিহিতাহীন, আমলাচালিত, ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট সরকারের কাছে এমন বাজেটই প্রত্যাশিত। আমরা এই বাজেটকে প্রত্যাখ্যান করছি ঘৃণাভরে। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে, থকৃষিখাতে কম বরাদ্দ, মেগা প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ দেয়ার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
বাজেট পাসের পরদিন অর্থমন্ত্রী আ ন ম মুস্তফা কামাল লন্ডনে যাওয়ার কঠোর সমালোচনাও করে তিনি বলেন, বাজেট পাসের পরের দিনই অর্থমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য বিলেতে চলে গেছেন। যেখানে লক্ষাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত, প্রায় সহাস্রাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, হাজারো মানুষ করোনার পরীক্ষা করানোর জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে, লাইন ধরছে এবং পরীক্ষা করতে পারছে না। পরীক্ষার কিটের অভাবে, যেখানে হাসপাতালের অভাব, হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে রোগীরা মারা যাচ্ছে সেখানে অর্থমন্ত্রী বিদেশে গেলেনÑ এটা জনগণের সঙ্গে মশকরা ছাড়া আর কিছু নয়।
মোবাইল ফোনের ওপর কর না কমানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। করোনাভারাইস সংক্রমণ শনাক্তকরণে পরীক্ষার ফি নির্ধারণের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য একটাই টেস্টকে নিরুৎসাহিত করা। এটা (ফি) মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আইন-২০২০ এর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কেনো মতামত বিএনপি দেয়নি তার ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোয় নিবন্ধন আইনের মতো এমন একটি বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ কোনো বিবেচনাতেই স্বাভাবিক কিংবা সময়োপযোগী নয়, বরং অস্বাভাবিক, অনভিপ্রেত, অগ্রহণযোগ্য এবং মহল বিশেষের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অপকৌশল বলে আমরা মনে করি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল