২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

জ্ঞানচর্চার সাথে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান সিনেট ভবনের সামনে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন : নয়া দিগন্ত -

করোনার প্রকোপের মধ্যেই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে উদযাপিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস এবং ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯২১ সালের এই দিনে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পথচলা শুরু হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। দিনটি উপলক্ষে গতকাল বুধবার বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করা হয়। শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমান নিশ্চিত করার অঙ্গীকার গ্রহণের মধ্য দিয়ে উদযাপিত দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গ : আন্দোলন ও সংগ্রাম’। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, জ্ঞানচর্চার সাথে সাথে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
এর আগে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে সীমিত কর্মসূচি পালন করা হয়। এর মধ্যে ছিলÑ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড্ডয়ন ও ভার্চুয়াল আলোচনা সভা।
সকাল ১০টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির নেতা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বেলা ১১টায় অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শাহাদাৎবরণকারী, বিগত বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুবরণকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং করোনা মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসক, নার্স ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সবার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গ : আন্দোলন ও সংগ্রাম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। সভায় প্রোভিসি (শিক্ষা), প্রোভিসি (প্রশাসন), কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন, সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মো: লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো: নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: আমিরুল ইসলামসহ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা যুক্ত হন।
ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব আন্দোলনে বিভিন্ন সময় অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হন এবং আত্মত্যাগ করেন। দেশ ও জাতির প্রত্যাশা পূরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান তুলে ধরেন তিনি।
সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, গবেষণার সম্প্রসারণ ও শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করাই হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার জন্য তিনি শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং উত্তরোত্তর গুণগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement