২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনার মাধ্যমিকে বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ ৫

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩.৭৫ শতাংশ; মাদরাসায় ৮২.৫১ ও কারিগরিতে ৭২.৭০ শতাংশ; পাস ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে মেয়েরা
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার এসএসসির ফলাফল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে হয়েছে : নয়া দিগন্ত -

করোনার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর গতকাল রোববার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল। কাক্সিক্ষত ফলাফল হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত লাখো শিক্ষার্থী। ঈদের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটা আনন্দের বার্তা যেন পৌঁছে গেছে পাস করা শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারে। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এ বছর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন, যা গত বছর পেয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ও জিপিএ ৫ দুটোই বেড়েছে।
নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্য দিকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৫১৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭২ দশমিক ৭০ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৮৫ জন।
এ বছর সর্বোচ্চ পাসের হার রাজশাহী বোর্ডে ৯০ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম সিলেটে ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ফলাফল ভালো। মেয়েদের পাসের হারও বেশি এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্যায় তারা এগিয়ে। এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাধ্যমিকের এ ফল প্রকাশ করেন। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ফেসবুক লাইভে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর পরীক্ষা শেষে ৬০ দিন পর পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হলেও এবার করোনাভাইরাসের কারণে তা বিলম্ব হয়েছে। তবে নকলমুক্ত পরিবেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আগেই একটি উত্তরপত্র প্রশিক্ষিত নিরীক্ষকদের বিতরণ করা হয়েছে। তার আলোকে শিক্ষকরা খাতা মূল্যায়ন করেছেন।
এবারে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে মেয়েদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আর ছেলেদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। সব শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি, দাখিল, এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১০ লাখ ২১ হাজার ৪৯০ জন ছাত্র অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছে ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯২ জন। বিপরীতে ফেল করেছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৯৮ জন।
অপর দিকে ১০ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ জন ছাত্রী এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছে ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩১ জন। আর ফেল করেছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৯০৭ জন। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হয়েছে বিধায় ফল প্রকাশের দিন কোনো অবস্থাতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমায়েত না হতে শিক্ষার্থীদের আগেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া দেশের বাইরে ৯টি দেশে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩৩৬ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও ৩১৮ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শতভাগ পাস চারটি ও শতভাগ ফেল একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এবার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ফল পাঠানো হয়নি। তাই ফল প্রকাশের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসও বন্ধ রাখতে বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে আগেই নির্দেশনা দেয়া হয়।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৮ জন পরীক্ষার্থী। গতবারের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ২৮৪ জন বেশি পরীক্ষার্থী ফলের সর্বোচ্চ এ সূচক অর্জন করেছে। গতবার মোট এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement