বিনাসুদে ৬২২২ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ
করোনায় জরুরি সহায়তা- বিশেষ সংবাদদাতা
- ৩১ মে ২০২০, ০০:০০
করোনার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার ঋণসহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশী মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৬ হাজার ২২২ কোটি টাকা। আইএমএফ বলেছে, করোনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক দিকে যেমন অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে গেছে, অন্য দিকে কমেছে তৈরী পোশাক রফতানি ও রেমিট্যান্স। এ পরিস্থিতিতে ব্যালান্স অব পেমেন্ট ও রাজস্বচাহিদা মেটাতে ‘র্যাপিড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি’-এর (আরসিএফ) আওতায় এ জরুরি ঋণসহায়তা দেয়া হচ্ছে। আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় ২৯ মে এ সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। জানা গেছে, এ ঋণের কোনো সুদ দেয়া লাগবে না। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের মধ্যে এ ঋণ শোধ করতে হবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএমএফ জানিয়েছে, দুর্বল দেশীয় চাহিদা এবং রফতানি ও রেমিট্যান্স আয় তীব্র হ্রাসের সাথে কোভিড-১৯ মহামারী বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। দেশটির জনসংখ্যার ওপর মহামারীর প্রভাব হ্রাস করতে সরকার ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ সংরক্ষণে বেশ কয়েকটি উদ্দীপনা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
আইএমএফের পক্ষ থেকে আরো উল্লেখ করা হয়, করোনা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এতে বাইরের অর্থায়নের দু’টি প্রধান উৎস, তৈরী পোশাক রফতানি এবং রেমিট্যান্সপ্রবাহ দ্রুত হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সাথে প্রধান শহরগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং মহামারী প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নীতিগত প্রতিক্রিয়া অনিবার্যভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে শ্লথ করে দেবে। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে সংস্থাটি জানায়, কোভিডের প্রভাব প্রশমিত করতে এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। স্বাস্থ্য ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খাদ্য বণ্টন এবং নগদ স্থানান্তর কর্মসূচিকে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী সহায়তায়, রফতানিমুখী শিল্পে মজুরি প্রদান নিশ্চিতকরণ এবং ব্যবসায়ী ও কৃষকদের জন্য মূলধন সরবরাহ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার চেষ্টা করছে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বদ্ধপরিকর। সরকারের মূল নীতিগত চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে কর রাজস্ব শক্তিশালীকরণ এবং বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য অবকাঠামো ও প্রশাসনের উন্নতি করা।
আইএমএফ দেশটির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে এবং প্রয়োজনে আরো পরামর্শ এবং সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া জরুরি সহায়তার অর্থ যাতে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ব্যবস্থাও প্রণয়ন করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আইএমএফ মনে করে, এ জরুরি সহায়তা বাংলাদেশকে অর্থায়নের ঘাটতি মোকাবেলায় সহায়তা করবে। পাশাপাশি রোগের বিস্তার ঠেকাতে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আরো সহায়তা পেতে কাজ করবে।
একইসাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রশংসা করে আইএমএফ বলেছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য ঘাটতি মেটাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে এবং আর্থিক খাতে যাতে অর্থনীতির সহায়ক হতে পারে, সেই ব্যবস্থাও নিয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থার আরো অবনতি হলে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক আরো ছাড় দিতে পারে। অন্য দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে, এ ধাক্কা সামলাতে ধারাবাহিকভাবে মুদ্রার বিনিময় হার বাড়ানো, সাথে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঠিক রাখা।’ষ বিশেষ সংবাদদাতা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা