২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি কম ঈদভাঙা বাজারে

-

গতকাল ছিল ঈদুল ফিতরের পর চতুর্থ দিন। অন্যান্য বছর এমন সময়ে বেশির ভাগ বাজারে বেচাকেনা শুরুই হয় না। যারা এটা সেটা কিনতে বাজারে আসেন তারা অনেক কিছুই খুঁজে পান না। পেলেও গুনতে হতো বাড়তি দাম। করোনা আক্রান্ত ঈদে এবারের চিত্র ভিন্ন। বেশিরভাগ কাঁচাবাজারই গতকাল খোলা ছিল। বিশেষ করে যেসব দোকানি লকডাউনের কারণে গ্রামের বাড়ি যেতে পারেননি তারা দোকান খুলে বসেছেন। আবার এবার বেশির ভাগ মানুষ ঢাকায় ঈদ করতে বাধ্য হওয়ায় গতকাল বাজারে এসেছেন তাদের অনেকেই। তবে ঈদভাঙা বাজার বলে কথা! সাধারণ সময়ের তুলনায় ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি ছিল বেশ কম। আর বেচা-কেনাও হয়েছে সামান্যই। বেশির ভাগ পরিবারে ঈদ উপলক্ষে কেনা মুদিপণ্য স্টকে থাকায় এসবের বিক্রি হয়েছে খুবই কম। স্বাভাবিক কারণে দামও কিছুটা কমতির দিকে। তবে সবজির দোকানগুলোয় চাখে পড়ে ক্রেতাদের বাড়তি চাপ।
গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারে আসা অধিকাংশ ক্রেতাই নিরাপত্তা পোশাক পরেই এসেছেন। দোকানিদেরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাস্ক, গ্লাভস প্রভৃতি পরতে দেখা গেছে। উপস্থিতি কম থাকায় শারীরিক দূরত্বও অনেক ক্ষেত্রে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। পবিত্র রমজান মাস শেষে চাহিদা কমে যাওয়ায় কমেছে ছোলাসহ বেশির ভাগ মুদিপণ্যের দাম। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলেন, একে তো করোনার প্রভাব তার ওপর ঈদের ছুটির আমেজ কাটেনি। সব মিলিয়ে বাজারে ক্রেতা কম। এরই মধ্যে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। ঈদের আগে ঢাকার বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজির দর ১৯০ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ১৫০ টাকায় নেমেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কক মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ ও দেশী মুরগি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা জানান, ঈদের পর সাধারণত সবজির চাহিদা বেড়ে যায়। এতে দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবার সবজির চাহিদা আগের মতো বাড়েনি। করোনাভাইরাসের কারণে এবার ঈদের আমেজ কারো মধ্যে ছিল না। যে কারণে এবার রাজধানীর বেশির ভাগ মানুষের ঈদের দিন সাধারণ দিনের মতোই কেটেছে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। বাজারে বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৪০ থেকে ৬০ টাকা। তারা বলেন, ৩১ মে থেকে অফিস খুলছে। সেই সাথে গণপরিবহন চলাচলের কথা বলা হয়েছে। তখন রাজধানীতে মানুষের চলাচল বাড়বে। আবার যারা ঢাকার বাইরে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন তারাও ফিরে আসবেন। ফলে সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের চাহিদা বাড়বে। এতে তখন দামও কিছুটা বাড়বে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে আগামী কিছুদিন সহনীয় দামেই সবজি পাওয়া যাবে বলে আশ^াস দেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে বর্তমানে ঝিঙে, বরবটি, কচুরলতি, কচুমুখী, কাঁকরোল, পটোল, করলাসহ শীতকালীন সব ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। ৪০ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি। তবে কোল্ডস্টোরেজ থেকে এনে বিক্রি করা হচ্ছে গাজর। এজন্য দাম বাড়তি। দেশী গাজর ৮০ টাকা এবং চীনা গাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। শসা পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পাকা টমেটোর দাম কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ঝিঙার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। নতুন সবজি হিসেবে কচুমুখীর দাম একটু বেশি। ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি। এছাড়া চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কচুরলতির কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুনের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও খুচরায় তেমন কমেনি। খিলগাঁও বাজারে গতকাল ভালো মানের দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। অবশ্য ভ্যানে করে একই পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেও দেখা যায়। ভারতীয় পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। আদার কেজে এখনো ১৫০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। যদিও পাইকারি বাজারে এসব পণ্য ঈদের আগের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমেছে বলে জানান বিক্রেতারা। এ ক্ষেত্রে আগের কেনা অজুহাতে খুচরা বিক্রেতারা দাম কমাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
আগের মতোই রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৪০০ টাকায়। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, চাষের শিং ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। ডিমের ডজন ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। গরুর গোশতে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। আর খাসির গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।
এ দিকে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় চালের দাম কিছুটা কমেছে। মিনিকেট ও নাজিরশাল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৬ টাকা। লুজ সয়াবিন তেল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, ভালো মানের পাম অয়েল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বড় দানার মসুরের ডাল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, ছোট দানার মসুরের ডাল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ১২০ টাকা। চিনির কেজি ৭০ টাকা। বাজারে সুগন্ধি চালের দাম আগে থেকেই চড়া। খোলা চিনিগুঁড়া চালের প্রতি কেজির দাম মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement
নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা

সকল