১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
স্থায়ী কমিটি সদস্যদের সাক্ষাৎ

সাহস না হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান খালেদা জিয়ার

-

দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর পর বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ঈদের দিন সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’র দোতলায় তাদের এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় সবাইকে ঘরে থাকা এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিলে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় আসেন। সেখানেই ‘কোয়ারেন্টিনে’ সময় পার করছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৫ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বাইরে থেকে শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেয়া ও চিকিৎসার বন্দোবস্ত করছেন। এর মধ্যে গত ১১ মে ওই বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে খালেদা জিয়া মুক্ত হওয়ার পর ঈদের দিন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথেÑ এটাই তার প্রথম সাক্ষাৎ। ‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে’ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দলীয় প্রধানের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এই চরম সঙ্কটে সামাজিক দূরত্বকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবুও তিনি আমাদেরকে সময় দিয়েছেন। আমরা পুরোপুরি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে, আমাদের নেত্রীকে নিরাপদ রাখার জন্য সবাই স্পেশাল পিপিই পরে, হাতে গ্লাভস নিয়ে তার সাথে দেখা করেছি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থা আমি আগেও বলেছি, উনার কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নতির মধ্যে যেটুকু হয়েছে আগে থেকে মানসিক অবস্থাটা তার অনেক ভালো হয়েছে, শারীরিক অবস্থার তার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। করোনা সংক্রমণ সুরক্ষায় খালেদা জিয়ার পরামর্শ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের মাধ্যমে উনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মহামারী করোনার সব স্বাস্থ্য বিধি মোকাবেলা করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি ম্যাডাম আহ্বান জানিয়েছেন। দেশবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাড়িতে থাকুন, একটু কষ্ট করুন। বাড়িতে থেকেই এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে হবেÑ এ কথা তিনি বারবার বলেছেন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপি নেতাকর্মীরা দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করায় খালেদা জিয়া সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বারবার বলেছেন, এখন সাহস না হারিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
ডা: জাফরুল্লাহর খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া : করোনায় আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত মঙ্গলবার তিনি প্রথমে ডা: জাফরুল্লাহকে ফোন করেন। কিন্তু ঘুমিয়ে থাকায় খালেদা জিয়ার ফোন ধরতে পারেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরে সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার বাসা থেকে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য কিছু ফল ও একগুচ্ছ ফুল পাঠানো হয় ঈদের শুভেচ্ছা এবং তার দ্রুত সুস্থতা কামনায়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দেয়া ঈদের শুভেচ্ছা ও ফল ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। এ বিষয়ে জানতে শিমুল বিশ্বাসকে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে শামসুদ্দিন দিদার বলেন, আমরা বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য ফুল ও ফল নিয়ে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাই। পরে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে কুশল বিনিময় করেছি। বেগম খালেদা জিয়ার ঈদ শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি। প্রত্যুত্তরে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ম্যাডামের জন্য সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন।
শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত : ঈদুল ফিতরের দিন সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ। পরে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের চরম সমন্বয়হীনতা রয়েছে এবং সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে তার রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মুনাজাত করেছি। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য সুস্থতা কামনায় মুনাজাত করেছি। আমরা প্রতি বছর আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাথে নিয়ে মাজার জিয়ারত করতাম। কিন্তু তাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দী রাখা হয়। সম্প্রতি তাকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে সরকার। আমি মনে করি এটা তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। তাকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া উচিত। এ সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় কারাবন্দী সবার মুক্তি দাবি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন মির্জা ফখরুল।


আরো সংবাদ



premium cement
সিদ্ধিরগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকাসহ ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় গাজায় মানবিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ : রাশিয়া পিকআপচালককে হত্যা করে রেললাইনে লাশ ফেল গেল দুর্বৃত্তরা এক মাস না যেতেই ভেঙে গেলো রাজকীয় বিয়ে! ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭ নোয়াখালীতে মেলায় সংর্ঘষ নিহত ১ কবরস্থান থেকে বৃদ্ধার বস্তাবন্দি লাশের রহস্য উন্মোচন : পুত্রবধূ ও নাতনি গ্রেফতার মিরসরাইয়ে বজ্রপাতে কৃষকের তিন গরুর মৃত্যু হবিগঞ্জে বাসচাপায় পিকআপের চালক ও হেলপার নিহত

সকল