২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

লকডাউনে দেরি বহু মৃত্যুর কারণ

নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা; ৪০ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
-

আক্রান্ত : ৫২,৩৪,১০০ মৃত্যু : ৩,৩৫,৭৩০
দেশ আক্রান্ত মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র ১৬,২৫,০২১ ৯৬,৫২৬
রাশিয়া ৩,২৬,৪৪৮ ৩,২৪৯
ব্রাজিল ৩,১২,০৭৪ ২০,১১২
স্পেন ২,৮০,১১৭ ২৭,৯৪০
ব্রিটেন ২,৫৪,১৯৫ ৩৬,৩৯৩
ইতালি ২,২৮,০০৬ ৩২,৪৮৬
ফ্রান্স ১,৮১,৮২৬ ২৮,২১৫
জার্মানি ১,৭৯,১৬০ ৮,৩১৬
তুরস্ক ১,৫৩,৫৪৮ ৪,২৪৯
ইরান ১,৩১,৬৫২ ৭,৩০০
লকডাউন ও অন্যান্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহুসংখ্যক মানুষের করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য বের হয়ে এসেছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ফাইন্ডিংস অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৫ মার্চের পরিবর্তে ৮ মার্চ সামাজিক দূরত্বের ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করলে ৩৬ হাজার মৃত্যু ঠেকানো যেত। আর যদি লকডাউন ও অন্যান্য প্রচেষ্টা ১ মার্চ থেকে শুরু করা হতো, তবে ৩ মে নাগাদ ৫৪ হাজার মানুষের মৃত্যু কম হতো। মহামারী বিশেষজ্ঞ জেফ্রি শমন এবং তার দলের দ্বারা তৈরি মডেলিংয়ে এ বিষয়টি বের হয়ে এসেছে বলে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে। জেফ্রি শমন উল্লেখ করেন, গবেষণায় দেখা গেছে সময়মতো পদক্ষেপ মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস করার জন্য অবিশ্বাস্য রকম গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৫০ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। হু-এর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সারা বিশ্ব লড়ছে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে, কিন্তু সেই লড়াই শেষ হতে এখনো অনেক পথ বাকি। বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা যে দিন ৫০ লাখের গণ্ডি ছাড়াল, সেদিনই এ হুঁশিয়ারি দিলেন হুর ডিরেক্টর জেনারেল তেদরস আধানোন গেব্রেইয়েসুস।
এ দিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে, বিশ্বের ৫০ লাখের বেশি লোক এখন করোনাভাইরাস থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন এবং প্রায় ১৯ লাখ মানুষ সুস্থ হয়েছেন। সংক্রমণ ও মৃত্যুর এ মিছিলে শীর্ষে এখনো আমেরিকাই। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ লাখের কাছাকাছি, আর মৃত্যু বরণ করেছে প্রায় ৯৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যেই লকডাউন তোলার পথে হেঁটেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। তবে, শুধু আমেরিকা নয়, জাপানও ওসাকা এবং আরো দু’টি সংলগ্ন এলাকায় জরুরি অবস্থা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাপানের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংক্রমণের পরিস্থিতি দেখেই এ সিদ্ধান্ত। গ্রিসে ১৫ জুন থেকে ফের পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হতে পারে দরজা। অন্য দিকে লাতিন আমেরিকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু এবং ৩ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি সংক্রমণসহ, ব্রাজিল দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে রাশিয়ার নিকটবর্তী হয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় করোনাভাইরাস হটস্পটে পরিণত হচ্ছে। খবর রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, আল জাজিরা, এনডিটিভি, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াল্ডোমিটার ও অন্যান্য সূত্রের।
বার্ষিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করবে না চীন
চীন ২০২০ সালের জন্য বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে না। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতি পুনর্নির্মাণ চেষ্টার প্রেক্ষিতে দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনায় অর্থনীতির ঐতিহাসিক সঙ্কোচনের পরে, চীন সরকার এ বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়। একই সাথে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যয় বাড়িয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। শুক্রবার চীনা সংসদের বার্ষিক অধিবেশন শুরুতে বার্ষিক ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের ভাষণে এ কথা বলা হয়েছে।
ভারতে এক দিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত
ভারতে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৬,০৮৮ জনে উন্নীত হয়েছে যা এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। একই সময়ে দেশে মোট ১৪৮ জন মৃত্যু বরণ করেছে । ফলে দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার এবং মৃতের ৩ হাজার ৫৮৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ভারতে করোনা পজিটিভ কেসের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৩৩০ জন। আরোগ্য লাভের হার ৪০.৯৭ শতাংশ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভারতে চরম পর্যায়ে পৌঁছতে পারে জুন মাসের শেষ দিকে। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে দেশজুড়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে কমতে শুরু করতে পারে এ সংক্রমণ। সংক্রমণ একেবারে কমের দিকে পৌঁছবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ নয় হাজার পর্যন্ত হতে পারে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষকসহ দেশের আরো তিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষকের করা সমীক্ষায় এ দাবি করা হয়েছে।
করোনার কারণে মানব-উন্নয়নে ধস নামবে
মানব-উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ প্রথম করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে মানব-উন্নয়নে ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জাতিসঙ্ঘ ১৯৯০ সাল থেকে বিশ্বের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান নিরূপণে সূচক তৈরি করে আসছে। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের বিশ্ব-অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা সঙ্কট সত্ত্বেও গত ৩০ বছর ধরে প্রতি বছর এ সূচক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইউএনডিপি প্রধান অসিম স্টেইনার বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কোভিড-১৯ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উপার্জন এ তিনটির ওপরই আঘাত হেনেছে, এতে এসব ক্ষেত্রে উন্নয়নের গতি পরিবর্তন হতে পারে। ইউএনডিপির হিসাবে করোনা মহামারীর কারণে ২০২০ সালে বিশ্বে মাথাপিছু আয় ৪ শতাংশ হ্রাস পাবে। স্কুল বন্ধ এবং দূরত্ব বজায় রেখে পড়াশোনার বৈষম্য ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষার ব্যবধান বাড়াবে। সংস্থা জানায়, দরিদ্র দেশগুলোর প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ের ৮৬ শতাংশ শিশু বর্তমানে পড়াশোনা করতে পারছে না, ধনী দেশগুলোতে এ সংখ্যা মাত্র ২০ শতাংশ।
ভ্যাকসিনে ১ শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের
যৌথভাবে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ভ্যাকসিন উন্নয়নে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের বায়োমেডিক্যাল অ্যাভভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বারডা)। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তত ৪০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এ সময়ে অন্তত ১০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে চায় ব্রিটিশ-সুইডিশ এই ওষুধ কোম্পানিটি। অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডারনার পাশাপাশি ভ্যাকসিন উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করছে ফ্রান্সের ওষুধ কোম্পানি সানোফি ও যুক্তরাজ্যের ওষুধ কোম্পানি গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৯০টিরও বেশি ভ্যাকসিন উন্নয়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আটটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর টিকা উদ্ভাবিত হয়নি। সবগুলোই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তবু বিশ্বনেতারা টিকাকেই স্থবির অর্থনীতি আবার সচল করতে মূল চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচনা করছেন। এতে করে টিকা প্রাপ্তির জন্য বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা শুরুর কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন তারা।
যুক্তরাজ্যে পৌঁছালেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন
যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ভ্রমণকারীদের ওপর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারি ব্র্যান্ডন লিউয়িস। এক বিবৃতিতে লিউয়িস জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাত্যহিক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ পদক্ষেপের বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল।
লিউয়িস আরো বলেন, আমরা এমন একটি দেশ যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজনকে স্বাগত জানানো হয়। তবে এটাও ঠিক যে আপনি যদি যুক্তরাজ্যে আসেন তবে আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্ব আমাদের। একই সাথে যুক্তরাজ্যের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্বও আমাদের। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। এর মাধ্যমে জানা যায় যে, তাদের দেহে করোনার কোনো লক্ষণ আছে কি না। কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তার রোধ করাও সম্ভব। ব্রিটিশ নাগরিকরা নিজেদের বাড়িতেই কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন করতে পারবেন। এর আগে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সতর্ক করে জানিয়েছে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের কারণে যুক্তরাজ্যের পর্যটন ও ভ্রমণ শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হবে। যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৫০ হাজার ৯০৮ জন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৬ হাজার ৪২ জন। এ ছাড়া ১ হাজার ৫৫৯ জনের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।


আরো সংবাদ



premium cement
অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান

সকল