১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাংলাদেশসহ ছয় দেশের বিবৃতি

পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল না করার অনুরোধ

-

তৈরী পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল না করার জন্য আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশসহ ছয় দেশের ৯ সংগঠন। করোনাজনিত কঠিন সঙ্কটময় মুহূর্তে ক্রয় আদেশ স্থগিত না করে চুক্তির শর্ত যথাযথ পরিপালনের দাবি জানিয়েছেন তারা। বাংলাদেশের বিজিএমইএ-বিকেএমইএ ছাড়াও চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ও মিয়ানমারের তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠনের প্রধানরা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। বিবৃতিতে দেয়া আবেদনপত্রে তারা সঙ্কটময় সময়ে তৈরী পোশাক খাত বাঁচাতে ও পুনরুদ্ধার করতে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
সংগঠনগুলোর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময়ে বিশ্বের গার্মেন্ট খাতকে সঙ্কট থেকে বাঁচাতে ও পুনরুদ্ধার করতে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার সময় এসেছে। বিশেষত বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল এবং পোশাক সরবরাহকারী চেইনের ব্র্যান্ড সংস্থাগুলো ও খুচরা বিক্রেতাদের। তা না হলে লাখ লাখ শ্রমিকের মৌলিক অধিকার এবং তাদের পরিবারের জীবিকা নির্বাহের ওপর এর ব্যাপক মাত্রায় প্রভাব পড়বে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও টেকসই সরবরাহ চেইনের প্রতি বৈশ্বিক ব্যবসার প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং সম্মান দেখানোর এখনই সময় মন্তব্য করে চিঠিতে বলা হয়, শ্রম অধিকারের বিষয়টি মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, খুচরা বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের প্রতি টেকসই টেক্সটাইল অব এশিয়ান রিজিয়ন (স্টার নেটওয়ার্ক) সদস্যদের ছয়টি উৎপাদনকারী এবং রফতানিকারক দেশ থেকে ৯টি শীর্ষ টেক্সটাইল এবং গার্মেন্ট ব্যবসায়ী সংগঠন এ আহ্বান জানিয়েছে।
এশিয়ান স্টার নেটওয়ার্কের এসব সংগঠনের বিবৃতিতে দেয়া দাবিগুলো হলো : উল্লেখযোগ্য ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় সাপ্লাই চেইনে শ্রমিক, ছোট ব্যবসায়ের ওপর সব সম্ভাব্য প্রভাব সাবধানতার সাথে বিবেচনা করুন। ক্রয় চুক্তির শর্তগুলোকে সম্মান ও দায়বদ্ধতাগুলো পালন করুন এবং মূল্য বা অর্থ প্রদানের শর্তগুলো পুনরায় আলোচনা করুন। শিপমেন্ট নিন এবং ইতোমধ্যে উৎপাদিত এবং বর্তমানে প্রস্তুতকৃত সামগ্রী বাতিল না করে অর্থ প্রদানের সাথে এগিয়ে যান। উৎপাদন বা বিতরণ স্থগিত বা বাতিল হয়ে থাকলে শ্রমিকদের বেতন ও পণ্য সরবরাহকারীদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিন। এ মুহূর্তে পণ্য সরবরাহে বিলম্বের জন্য সরবরাহকারীদের ওপর কোনো দায় চাপাবেন না এবং এ জাতীয় বিলম্বের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করবেন না। অহেতুক আদেশ ও অপ্রয়োজনীয় পরিদর্শন এবং নিরীক্ষণ দ্বারা অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধি করে পণ্য সরবরাহকারীদের ওপর অনুচিত চাপ দেবেন না। স্থানীয় পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। সমস্যার পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানগুলো নিশ্চিত করতে সর্বদা সংলাপ এবং সহযোগী মনোভাব অবলম্বন করুন। ব্যবসায়ী অংশীদারদের যথাসম্ভব সমর্থন করুন। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা রক্ষায় এক হোন।
স্টার নেটওয়ার্কের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে দেশের শীর্ষ তৈরী পোশাকের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), চীনের চায়না ন্যাশনাল টেক্সটাইল এবং অ্যাপারিল কাউন্সিল (সিএনটিএসি), কম্বোডিয়ার গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (জিএমএসি), মিয়ানমার গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমজিএমএ), পাকিস্তান হোসিয়ারি গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিএইচএমএ), পাকিস্তান টেক্সটাইল এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিটিইএ), টাওয়েল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তান (টিএমএ) এবং ভিয়েতনাম টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ভিটাস)।
আবেদেনের বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে তৈরী পোশাক খাত গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিন পার করছে। একের পর এক পোশাক কারখানার ক্রয়াদেশ বাতিল হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে এ খাত ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে। তাই কঠিন এ সঙ্কটময় মুহূর্তে বায়ারদের ক্রয় আদেশ স্থগিত না করার আহ্বান জানিয়েছেন পোশাক মালিকরা।
বিজিএমইএর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ৮ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত দেশের তৈরী পোশাক খাতের এক হাজার ১১৯টি কারখানায় ৯৬ কোটি ৪০ লাখ পোশাক পণ্যের রফতানি আদেশ বাতিল ও স্থগিত করা হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ ৩ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ২৬ হাজার ১৮০ কোটি টাকা, বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে)।
বিজিএমইএ বলছে, রফতানি আদেশ বাতিল হওয়া এসব কারখানায় ২২ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করে। দেশে বর্তমানে পোশাক কারখানা রয়েছে চার হাজার ৫৬০টি। যেখানে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। দেশের অর্থনীতিতে রফতানি পোশাকের মোট অবদান ৮৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রফতানির উপখাত হিসাব করলে তৈরী পোশাক খাতের অবদান ৮৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মুন্সীগঞ্জে ২ পক্ষের হামলা পাল্টাহামলায় আহত ৭ শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে বড়াল বন্ধ সেচ কার্যক্রম ও নৌপথে ব্যবসা সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্যকে নষ্ট করতে দেবো না : নাছিম দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জি এম কাদেরের আইআরজিসিকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন দেখেন না সাবেক ব্রিটিশ গোয়েন্দা প্রধান বেতাগীতে সরকারি চাল দামি প্যাকেটজাত করে বিক্রি কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন ওমরাহ ভিসার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের হুঁশিয়ারি বিভিন্ন স্থানে বাংলা বর্ষবরণ কাশ্মিরে নৌকাডুবিতে ৪ জনের মৃত্যু উজিরপুরে মাদক মামলায় জামিনে এসে সাংবাদিকের ওপর হামলা

সকল