২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মৃত্যু ও আক্রান্ত বেড়েই চলছে

দেশে মোট আক্রান্ত ১৬৪ মৃত ১৭; লক্ষণ নিয়ে মৃত্যু ১৭ জনের; টাঙ্গাইল জেলা লকডাউন বরিশাল ও ফরিদপুরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা; শিবচরে নতুন করে পুরনোরা আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক; ভারতে থেকে দেশে আসা ১৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে
-

দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে গতকাল। এ দিন মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ জন। বাংলাদেশে এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪ জন। আর মারা গেছেন ১৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। এ ছাড়া গতকাল করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে আরো ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ৩, টাঙ্গাইলে ২, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ১, খুলনায় ১, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ১, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ১, পাকুন্দিয়ায় ১, কটিয়াদীতে ১, পটুয়াখালীর বাউফলে ১, নেত্রকোনার পূর্বধলায় ১, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ১, কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ১, নাঙ্গলকোর্টে ১, জন মারা গেছেন।
এ দিকে সংক্রমণ ঠেকাতে টাঙ্গাইল জেলা লকডাউন করে হাইওয়ে ছাড়া জেলার সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বরিশাল জেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ায়ও। অন্য দিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় সুস্থ হওয়ার পর আবারো করোনায় আক্রান্ত হলে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, মৃত পাঁচজন ব্যক্তির মধ্যে পুরুষ চারজন এবং একজন মহিলা। আক্রান্ত ৪১ জনের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং মহিলা ১৩ জন।
তিনি আক্রান্তদের নিজ এলাকার পরিচয় দিয়ে বলেন, আক্রান্তদের সবচেয়ে বেশি বাস করেন রাজধানীতে ২০ জন। এরপরই নারায়ণগঞ্জ জেলায় বাস ১৫ জনের। এ ছাড়া কুমিল্লার একজন, ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে একজন, চট্টগ্রামে একজন। অবশিষ্ট তিনজন অন্যান্য এলাকায় যা আইইডিসিআর থেকে ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।
যে পাঁচজন গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের দুইজন ঢাকায় বাস করতেন। আক্রান্তদের ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি ১০ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছরের বয়সীরা নয়জন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আবুল কলাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কোভিড-১৯’র নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৯২ জনের। তিনি বলেন, সারাদেশে গতকাল পর্যন্ত ১০ হাজার ৩১৬ কোয়ারেন্টিনে আছেন। এর মধ্যে হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে আছেন ১২৬ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ১৩৭ জন। তিনি আরো বলেন, করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতর ২১টি গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবস্থাপনা, জীবাণুমুক্তকরণ ও পরিবেশগত সংক্রমণ রোধ, আক্রান্ত রোগী যার হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই, গর্ভবতী মা ও শিশুর করণীয়, কুসংস্কার দূরীকরণ, মানসিক চাপমুক্ত থাকার জন্য কী করণীয় ইত্যাদি আরো কিছু বিষয় এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে করোনায় ব্যবসায়ী ও উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে তিনজন এবং অন্য একজন ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার করোনা ভাইরাসের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বাকি তিনজনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতরা হলেনÑ শহরের মাসুদা প্লাজার মালিক ব্যবসায়ী চৌধুরী মো: হাসান। সোমবার মধ্য রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃতের আত্মীয় মিজানুর রহমান জানান, জ্বর ও ঠাণ্ডা নিয়ে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তির পর সোমবার রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। তার করোনা পজিটিভ বলে ডাক্তার জানিয়েছে।
করোনার উপসর্গ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক (৫৭) রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন নাসিক ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু। তিনি সিদ্দিক মিশনপাড়ায় নিজের তিনতলা ভবনে থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফতুল্লা লামাপাড়া এলাকায় জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যবসায়ী জ্বর ও ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে ঘরের ভেতরে মারা গেছেন। মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছয়-সাত দিন ধরে তিনি জ্বর ও ঠাণ্ডায় ভুগছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর মঙ্গলবার রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল কিন্তু দুপুরে নিজ বাসায় তিনি মারা গেছেন।
সোমবার মধ্য রাতে শহরের দেওভোগ এলাকায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন নারায়ণগঞ্জ সঙ্গীত অঙ্গনের পরিচিত মুখ গিটারিস্ট হিরু। ছয়-সাত দিন ধরে তিনি জ্বর ও ঠাণ্ডায় ভুগছেন। রাতে হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনি মারা যান।
নাঙ্গলকোটে একজনের মৃত্যু
নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে করোনার উপসর্গ জ্বর, ডায়রিয়া ও গলাব্যথা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে মোশাররফ হোসেন (৪০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার দোলখাঁড় ইউনিয়নের দোলখাঁড় তালুকদার বাড়ির আলী আক্কাছের ছেলে। তিনি নার্সারি ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠিয়েছে। গতকাল দুপুরে করোনা আক্রান্ত রোগীদের দাফনে গঠিত উপজেলা দাফন কমিটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী তার দাফন সম্পন্ন করেছে।
কটিয়াদীতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে রোগীর মৃত্যু, হাসপাতাল লকডাউন
কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে রেনেসাঁ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতাল থেকে সজিবুল ইসলাম সুমন আকন্দ (৩০) নামে এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ গতকাল মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যুবরণ করায় সন্ধ্যায় হাসপাতালটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তানভীর হাসান জানান, পার্শ্ববর্তী পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের নামাপুটিয়া গ্রামের সুমন আকন্দ নামে এক ব্যক্তি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ নিয়ে কটিয়াদীতে রেনেসাঁ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু হয়েছে। ফলে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য রেনেসাঁ হাসপাতালটি সাময়িকভাবে লকডাউন করা হয়েছে।
পূর্বধলায় দুপুরে নমুনা সংগ্রহ, রাতে মৃত্যু
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনার পূর্বধলায় গত সোমবার রাতে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে রমজান আলী (৩৮) নামের আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে তিনিসহ দু’জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। রমজান আলী উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের কিছমত বারেঙ্গা গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে। তিনি শ্যামগঞ্জ বাজারে আবদুর রহিমের খাবার হোটেলে কাজ করতেন। এ ঘটনায় তার বাড়িসহ আশপাশের সাতটি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর আগে গত রোববার সকালে করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে উপজেলায় এক নারী মারা যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
লৌহজংয়ে ত্রাণ দিয়ে ঢাকায় ফিরে মৃত্যু, এলাকায় আতঙ্ক
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামের বাসিন্দা আবদুল ওহাব দেওয়ান (৬২) থাকেন ঢাকার ওয়ারীতে। গত শুক্রবার গ্রামের বাড়ি এসে করোনাভাইরাসের কারণে ১০-১৫ জন দুস্থের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তখন ছিলেন একদম সুস্থ। ঢাকায় ফিরে গিয়ে হঠাৎ জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও তিনি একে খুব একটা পাত্তা দেননি, যাননি হাসপাতালে। কিন্তু গত সোমবার সকাল ৭টার দিকে মারা যান ওহাব দেওয়ান। পরে আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস পজেটিভ আসে। এ দিকে করোনায় ওহাব দেওয়ানের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, তিন দিন আগে তার কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাওয়া দুস্থরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর মুখে মুখে।
আরো ১১ জনের নমুনা আইইডিসিআরে প্রেরণ : মুন্সীগঞ্জ জেলার ছয়টি উপজেলা থেকে গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে করোনা শনাক্তের জন্য আরো ১১ জনের সোয়াব ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেনÑ সদর উপজেলার দুইজন, শ্রীনগরের একজন, সিরাজদিখানের তিনজন, টঙ্গীবাড়ির দুইজন ও লৌহজং উপজেলার তিনজন। জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবুল কালাম আজাদ জানান, আইইডিসিয়ারে ৪ এপ্রিল থেকে ২৬ জনের সোয়াব পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে ১৮ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অন্যদের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
বুড়িচংয়ের বাসিন্দার ঢাকায় মৃত্যু, কুমিল্লøায় ২ বাড়ি লকডাউন
কুমিল্লøা সংবাদদাতা জানান, ঢাকায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ব্যবসায়ীর মায়ের মৃত্যুর পরে কুমিল্লøার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামে মৃতের সন্তানদের দু’টি বাড়ি লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর আগে গত রোববার রাত ১১টার দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফার মা সাহেদা খাতুনের (৬৫) মৃত্যু হয়। মৃতের শরীর থেকে নেয়া নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে সোমবার মোস্তফা পরিবার নিয়ে বুড়িচংয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা: মীর হোসেন মিঠু জানান, ওই ব্যবসায়ীসহ তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। পরে ওই ব্যববসায়ী ও তার ভাইয়ের বাড়ি দু’টি লকডাউন করা হয়।
বাজিতপুরে আইসোলেশনে থাকা রিকশাচালকের মৃত্যু
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় শ্বাসকষ্টে আমরু মিয়া (৫০) নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেøক্সে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। আমরু মিয়া উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের তাতালচর গ্রামের সবুর মিয়ার ছেলে। তিনি গত প্রায় ১৫ বছর ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর পর তার লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপ্তিময়ী জামান জানান, একজন করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ যেভাবে দাফন করা হয় ওই ব্যক্তিকে একই প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।
খুলনায় বৃদ্ধার মৃত্যু, এলাকা লকডাউন
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সালেহা বেগম নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের বাড়িতে ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী সালেহা মারা যান। গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, সালেহা বেগম ১০-১২ দিন আগে তার ছেলের ঢাকার বাসায় জ্বরসহ সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হন। ওই অবস্থায় তিনি তার নাতী রাসেলকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। তবে, তার অসুস্থতার কথা গ্রামবাসী জানতে পারেননি। রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আনিসুর রহমান জানান, জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত ওই বৃদ্ধা এক সপ্তাহ আগে তার ২২ বছর বয়সী নাতি রাসেলকে সাথে নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। তিনি তথ্য গোপন করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে তিনি বাড়িতে মারা যান। তিনি জানান, মৃত বৃদ্ধার নাতীকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। খুলনার সিভিল সার্জন ডা: সুজাত আহমেদ জানান, মৃত বৃদ্ধা ও তার নাতির নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা লকডাউন থাকবে। এ ছাড়া ওই নারীর সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
সিঙ্গাইরে একজনের মৃত্যু, জামির্তা ইউনিয়ন লকডাউন
মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্তা ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানায়, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা থেকে দুই কৃষিশ্রমিক সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্তা ইউনিয়নে কাজ করতে আসেন। গত বুধবার থেকে একজনের (৪৬) সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। গত শনিবার অসুস্থ শ্রমিকসহ দুই শ্রমিক গ্রামের বাড়ি চলে যান। গত সোমবার রাতে অসুস্থ ওই শ্রমিক মারা যান। সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, মঙ্গলবার থেকে ওই ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে তাবলিগ জামাতে সিঙ্গাইরে যাওয়া এক মুসল্লি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় গত রোববার থেকে সিঙ্গাইর পৌর এলাকা লাকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। এ ছাড়া সিঙ্গাইর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পাকুন্দিয়ায় যুবকের মৃত্যু গ্রাম লকডাউন
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় করোনার উপসর্গ নিয়ে সুমন আকন্দ (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে তিনি মারা যান। তিনি উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের নামাপুটিয়া গ্রামের আবুল হাসিম আকন্দের ছেলে। তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। এ ঘটনায় মৃতের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা জনস্বাস্থ্য অধিদফতরে জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে (আইপিএইচ) পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সব সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গ্রামটিকে লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বাউফলে মাদরাসাছাত্রীর মৃত্যু
পটুয়াখালী সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ডিএস আলিম মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাবেয়ার (১২) মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, ওই গ্রামের প্রতিবন্ধী ফোরকান বাগার মেয়ে রাবেয়া কয়েকদিন আগে জ্বর ও পাঁচড়ায় আক্রান্ত হয়। এরপর স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পর রাবেয়াকে ওষুধ দেয়া হয়। রোববার বিকেলে রাবেয়ার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের তাকে ওই চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। তখন ওই পল্লীচিকিৎসক রাবেয়ার শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাবেয়ার শরীর ফুলে ফেঁপে ওঠে। সোমবার সে মারা যায়। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবার মুখে করোনাভাইরাসে রাবেয়া মারা যাওয়ার খবর রটে যায়। পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতেও ভয়ে রাবেয়ার বাড়িতে গ্রামবাসীরা কেউ যাননি। এমনকি জানাজার নামাজ কিংবা লাশ গোসলের জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরাই রাবেয়াকে গোসল করিয়ে দাফন করেন।
সাতকানিয়ায় তিন বাড়ি লকডাউন, আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন ঢাকায়
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর বাড়িসহ তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি গত ২০ মার্চ চট্টগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার ওসি শফিউল কবির। ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা করেন। সেখানে তিনি আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকাতেই তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নে থাকেন। অন্য যে দু’টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে সেগুলোর মালিক আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী।
শিবচরে পূর্বে আক্রান্তরা ফের আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক
শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, শিবচরে করোনা ভাইরাসে পূর্বে আক্রান্ত হওয়া রোগী সুস্থ হয়ে পুনরায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রথম লকডাউন ঘোষিত এলাকা মাদারীপুরের শিবচর। শিবচরে এ পর্যন্ত আক্রান্ত মোট রোগী ৯ জন। তারা দুই ইতালি প্রবাসী পরিবারের সদস্য। গত ২৪ মার্চ তাদের মধ্যে একজন (এক ইতালি প্রবাসীর বাবা) মারা যান। বাকি আটজনের সবাই একে একে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ফলে শিবচর করোনা রোগী মুক্ত হয়। জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু গত ৫ এপ্রিল তাদের মধ্যে তিনজন আবার করোনা রোগীর উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হন এবং নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়।
আক্রান্ত এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে তাদের মধ্যে একজন স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়েছেন। মসজিদে মিলাদ পড়িয়েছেন। সেই মসজিদের মুসল্লিদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। এতে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে আবার আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসন পুরো উপজেলাকে লকডাউন করে রেখেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর দেশের যে ছয়টি স্থানকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শিবচর উপজেলা তার মধ্যে অন্যতম।
ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসা ১৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, দিনভর ভারতে ঘোজাডাঙ্গা জিরোপয়েন্টে অপেক্ষা শেষে গত সোমবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে নিজ দেশে ফিরলেন ১৩ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী। এর আগে সকাল ১০টায় তারা ভারতের ঘোজাডাঙ্গা ইমিগ্রশন অফিসে পাসপোর্ট এন্ট্রি করে জিরো পয়েন্টে আসার পর বিজিবি তাদের দেশে ঢুকতে বাধা দেয়। ফলে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ভারতে ঘোজাডাঙ্গা জিরোপয়েন্টে অপেক্ষা করতে হয়। ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্র জানায়, দিনভর অপেক্ষা শেষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবির সহযোগিতায় সন্ধ্যায় ভোমরা ইমিগ্রেশন হয়ে নিজ দেশে পা রাখেন তারা। সেখান থেকে সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান তাদের সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদফতর ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন সাফায়াত জানান, কোয়ারেন্টিনে আগামী ১৪ দিন থাকার পর তারা তাদের নিজ বাড়িতে ফিরবেন। তিনি আরো জানান, এখন থেকে যারাই ইমিগ্রেশন দিয়ে দেশে ফিরবেন তাদের সবাইকে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
শেরপুরে আরো ১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ
শেরপুর সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে প্রথমবারের মতো দুইজন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় তাদের সংস্পর্শে আসা আত্মীয়স্বজনসহ ১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ সন্দেহে পরীক্ষার জন্য সদর উপজেলার ১০ জন ও শ্রীবরদী পৌরসভার আটজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাদের বাড়ির অন্য লোকদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোবারক হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেছেন। সংগ্রহ করা নমুনা গতকাল সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাটুরিয়ায় ৭৯ তাবলিগকর্মী কোয়ারেন্টিনে
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় গত দুই দিনে শতাধিক তাবলিগ জামাতের কর্মী দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গোপনে বাড়ি ফিরেছেন। তারা বাড়ি ফিরেই নিজ নিজ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। এ নিয়ে সাটুরিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ ৭৯ জন তাবলিগফেরত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদের খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। সাটুরিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মামুন উর রশীদ জানান, যেসব তাবলিগকর্মী গোপনে বাড়িতে এসেছেন, তাদের প্রত্যেকের নমুনা পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা করা হবে।
বরিশালের ছয় বাড়ি লকডাউন
বরিশাল ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে সতর্কতার অংশ হিসেবে বরিশাল সদর ও উজিরপুর উপজেলার ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বরিশাল সদর উপজেলার তালতলি এবং অপর পাঁচটি উজিরপুরে। সোমবার রাতে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে সোমবার বিকেলে ইউসুফ আলী খান (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। করোনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে তার আগেই সতর্কতার অংশ হিসেবে মৃত ইউসুফ আলীর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তার সংস্পর্শে এসেছেন এমন লোকদের খুঁজে বের করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে সোমবার রাতে রশিদ উদ্দিন (৫৫) নামের এক ফল ব্যবসায়ী জ্বর, কাশি, গলাব্যথা নিয়ে উজিরপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডস্থ সিদ্দিক বেপারির গৃহে অবস্থানের সংবাদ পায় উপজেলা প্রশাসন। পরে তারা সেখানে গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির দেখভাল করার পাশাপাশি আশপাশের পাঁচটি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছেন। এসব বাড়ির লোকজন নিজ নিজ ঘর থেকে যাতে বাইরে বের না হয় অর্থাৎ হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার স্বাস্থ্য বিভাগ ওই ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে।
বরিশাল জেলায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা : করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাইরের জেলা থেকে বরিশাল জেলায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।
টাঙ্গাইল জেলা লকডাউন
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, মহামারী করোনাভাইসের বিস্তার রোধে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। এর ফলে অন্য জেলা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল টাঙ্গাইল। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিন বিকেল ৪টা থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। সভা শেষে জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে টাঙ্গাইলকে চার দিক থেকে লকডাউন করে দিচ্ছি। অন্য জেলার সাথে টাঙ্গাইলের সংযোগ সড়কে ব্লকসহ চেকপোস্ট বসানো হবে। শুধু রোগী, অ্যাম্বুলেন্স এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কোনো লোক ও কোনো গাড়ি যাওয়া-আসা করতে পারবে না। এতে অন্য জেলার সাথে আমাদের জেলা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এই জেলা উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার প্রবেশদ্বার হওয়ায় হাইওয়ে বন্ধ হবে না। হাইওয়ে থেকে জেলায় ঢুকার রাস্তা বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ রোডগুলোও বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে লোকজন চলাচল করতে না পারে। বিকেল ৫টার মধ্যে সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ইতোমধ্যে পাশের গাজীপুর ও জামালপুর জেলা আক্রান্ত হয়েছে। আমরা মাঝখানে পড়েছি। সেজন্য আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং লকডাউন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের সাথে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। সাধারণ জনগণ যাতে একেবারে ঘর থেকে বের হতে না পারে এজন্য তারা কাজ করবে। মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজে এই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এতে সভাপতিত্ব করেন।
রামগঞ্জে বৃদ্ধের মৃত্যু, ৩ বাড়ি লকডাউন
রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা জানান, করোনা উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও সর্দিতে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও স্বজনরা তাকে বাড়ি নেয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। পথেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরপরই রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামে মৃতের বাড়িসহ তিনটি বাড়ি লকডাউনে রাখা হয়েছে। রামগঞ্জ উপজেলার আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার রওশন জামিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মানিকগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫
মানিকগঞ্জ ও ঘিওর সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তাবলিগ জামাতের ১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিভিল সার্জন ডা: আনোয়ারুল আমিন আখন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে আরো দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তাদের একজন তাবলিগ জামাতের সদস্য।
জামালপুরে চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়ন লকডাউন
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ঢাকার এক কারখানায় একজন নারী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় তার সংস্পর্শে থাকা ৩৫ জন নারী-পুরুষ জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চলে আসেন। অন্য দিকে গত রোববার জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বীর ঘোষেরপাড়া গ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় ওই দিন রাতেই ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। তার সংস্পর্শে আসা পাশের চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়নের ৩০টি বাড়িও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মো: মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। সার্বিক নিরাপত্তা ও করোনা ঝুঁকি এড়াতে এ ইউনিয়নটিকে লকডাউন করা হয়েছে।
বকশীগঞ্জে ১০ বাড়ি লকডাউন : জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার মাঝপাড়া গ্রামে দুই পরিবারের ১০টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। গত সোমবার দুপুরে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, পাশের শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলা সরকারি হাসপাতালের একজন আয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার দুই পরিবারের দুই শিশুসহ সব রোগীকে ছুটি দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই দুই শিশুর বাড়ি বকশীগঞ্জ পৌরসভার মাঝপাড়া গ্রামে। তারা বাড়িতে ফিরে গেলে ওই গ্রামে আতঙ্ক দেখা দেয়। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ স ম জামশেদ খোন্দকার গত সোমবার দুপুরে ওই গ্রামে গিয়ে দুটি পরিবারের ১০টি বাড়ি লকডাউন করে বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেন। লকডাউন নিশ্চিত করতে ওই গ্রামে পুলিশ ও গ্রামপুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে নতুন করে চারজনের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত দু’জনের নমুনা সংগ্রহ গতকাল মঙ্গলবার সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় ঝালকাঠি থেকে আইইডিসিআর এ পাঠানো ছয়জনের নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা: শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার। এ ছাড়া আরো ১১ জনের পাঠানো নমুনার রিপোর্ট এখনো আসেনি বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিগপাশা গ্রামে কিডনি সমস্যা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাবেয়া আক্তার কলি নামে ছয় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুর বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে একজনের মৃত্যু
ইউএনবি জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্বসাহেব গ্রামের এক ব্যক্তি জ্বর, গলাব্যথা নিয়ে সোমবার রাতে মারা গেছেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই গ্রামের মৃত হাসিমুদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল (৪৫) মারা যাওয়ার পর গ্রামটিকে লকডাউন করা হয়। সিভিল সার্জন ডা: জাহিদ নজরুল চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোমস্তাপুর সার্কেল) জাহিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুর রহমান জানান, মোজাম্মেল মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর এলাকায় কৃষিকাজে (ধান কাটতে) গিয়েছিলেন। গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে আসেন। মোজাম্মেল বাড়িতে ফিরেই নিজেকে একটি ঘরে আবদ্ধ করে ফেলেন। মৃতের শরীরে জ্বর ও গলাব্যথা ছিল। তবে সর্দি বা শ্বাসকষ্ট ছিল না। মৃত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানান উপজেলা চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: সারোয়ার জাহান।
ফরিদপুরের সাথে অন্য জেলার যোগাযোগ বন্ধ : করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ফরিদপুর জেলার সাথে অন্য জেলার সব ধরনের পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার দুপুরে জারি করা এক নতুন গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসক অতুল সরকার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো প্রকার যানবাহন এ জেলা হতে বাইরে যাবে না এবং বাইরে থেকে এ জেলায় প্রবেশ করবে না। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অতি অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্যান্য সব দোকানপাট, সাপ্তাহিক হাট, প্রতিষ্ঠান এবং গণপরিবহন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধের দোকান, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান যথারীতি খোলা থাকবে।
চুয়াডাঙ্গায় স্বেচ্ছায় লকডাউনে এলাকাবাসী : চুয়াডাঙ্গা শহরের একটি এলাকাকে স্বেচ্ছায় লকডাউন ঘোষণা করেছেন স্থানীয়রা। পৌর শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একাংশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে জনবিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। তবে ওই এলাকার কেউ করোনা শনাক্ত হয়নি। এলাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে বাঁশ দিয়ে বহিরাগত লোকজনকে আটকে গতিরোধ করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ওই মহল্লার কাউকে বাইরে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেয়ালে ‘আসুন আমরা নিজে সচেতন হই, পরিবার এবং মহল্লাবাসীকে সচেতন করি’, ‘আপনার সচেতনতায় আমরা সম্মিলিতভাবে করতে পারি ভয়াবহ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই’ ও ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এ এলাকায় প্রবেশ বা বের না হওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে’ লিখে এলাকাবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে।
ত্রিপুরা থেকে দেশে ফেরা ৬ বাংলাদেশী কোয়ারেন্টিনে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে চার নারীসহ ছয় বাংলাদেশী মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরই আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পুলিশের প্রতিনিধিরা তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য স্থলবন্দর থেকে বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
মেহেরপুর পৌর এলাকা লকডাউন : মেহেরপুর পৌরসভা এলাকায় সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে অঘোষিতভাবে লকডাউন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাসিন্দাদের করোনা মহামারী থেকে রক্ষার লক্ষ্যে পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন এ ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, মেহেরপুর শহরের প্রবেশদ্বার ‘গেটলক’ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কার্যকর করা হবে। এ ছাড়া মেহেরপুর শহরে বিনা প্রয়োজনে রিকশা, ভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানসহ যারাই ঘরের বাইরে আসবে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।
টাঙ্গাইলে দুইজনের মৃত্যু
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ও কালিহাতীতে মঙ্গলবার করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হচ্ছেনÑ ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের পাটিতাকান্দি গ্রামের কলেজ মিয়া (৭৫) এবং কালিহাতী উপজেলার বাঁশি গ্রামের ইসমাইল হোসেন (৫৫)। আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান তালুকদার জানান, বৃদ্ধ কলেজ মিয়া ১০-১২ দিন আগে তাবলিগ জামাত থেকে বাড়ি ফিরলে তার মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: সাইফুর রহমান খান জানান, কলেজ মিয়ার লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানান, ওই মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
অন্য দিকে কালিহাতী উপজেলার বাঁশি গ্রামের ইসমাইল হোসেন (৫৫) নামে এক দিনমজুর মঙ্গলবার দুপুরে মারা গেছেন। প্রতিবেশীরা জানান, কয়েক দিন ধরে তিনি জ্বর, ঠাণ্ডা এবং পাতলা পায়খানায় ভুগছিলেন। তবে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: সাইদুর রহমান জানান, আমরা সেখানে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছিলাম। আমি নিজেও ওই পরিবারের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, তার মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল না। শারীরিক দুর্বলতা ও পাতলা পায়খানায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ জন্য তার কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে তিনি জানান।
রাজশাহীতে রোগী শনাক্ত হয়নি, আইসোলেশনে ৪ জন
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে করোনার উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী সংক্রমণ ব্যাধি (আইডি) হাসপাতালে চারজন আইসোলেশনে রয়েছেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য গঠিত কমিটির নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা: আজিজুল হক আজাদ বলেন, আইসোলেশনে থাকা চারজন রোগীর মধ্যে তিনজন নতুন। তাদের একজন রাজশাহী শহরের। একজন এসেছেন রাজশাহীর চারঘাট থেকে। অপরজন পাবনা থেকে। তাদের প্রত্যেককে পৃথক করে রাখা হয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩৫, ২৫ ও ১৮। প্রত্যেকেই মাস্ক পরে আছেন। আর চিকিৎসকরা সুরক্ষিত পোশাক পরছেন। তিনি বলেন, আইসোলেশনে থাকা চারজনের মধ্যে একজন প্রচণ্ড আতঙ্কিত। তাকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। ওষুধও দিতে হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement