২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

খাদ্য সঙ্কটের শঙ্কা বিশ্বে

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে ভুগবে কয়েক প্রজন্ম; ক্যালিফোর্নিয়ায় সংক্রমণের হটস্পট চার্চ; চীনের শাস্তি দাবি আইসিজির
-

আক্রান্ত : ১২,৫৩,০৬৬, মৃত : ৬৮,১৫৪ৎ
দেশ                   আক্রান্ত              মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র              ৩,২৭,৮৭১         ৯,৩২৫
স্পেন                  ১,৩০,৭৫৯          ১২,৪১৮
ইতালি                 ১,২৮,৯৪৮         ১৫,৮৮৭
জার্মানি                  ৯৮,৭৬৫          ১,৫২৪
ফ্রান্স                      ৮৯,৯৫৩          ৭,৫৬০
চীন                        ৮১,৬৬৯          ৩,৩২৯
ইরান                      ৫৮,২২৬           ৩,৬০৩
ব্রিটেন                     ৪৭,৮০৬          ৪,৯৩৪

১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল নভেল করোনাভাইরাস। পরদিন দেশটির বাইরে প্রথম রোগী শনাক্ত হলো থাইল্যান্ডে। এর পরপরই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত পাওয়া গেল। এভাবে দু-একটি দেশ করে এখন পুরো বিশ্বই প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত। এমন সঙ্কট আর দেখেনি মানবজাতি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে গতকালও প্রায় ৬শ’ মৃত্যু ঘটেছে। বিশ্বের সাত মহাদেশের ২০৫ দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনায় এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৬৮ হাজার ১৫৪ জনের। আক্রান্ত হয়েছে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ জন। চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৯৯ জন। ৯ লাখ ২৭ হাজার ৭১৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন এবং ৪৫ হাজার ৩৭৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক টাইমস, পিটিআই, আনাদোলু এজেন্সি, আলজাজিরা, এবিসি, ডেইলি মেইল, দ্য গার্ডিয়ান ও ওয়ার্ল্ডোমিটারস এর।
করোনার পর খাদ্য সঙ্কটে পড়বে বিশ্ব : দেশে দেশে চলছে লকডাউন। কিন্তু এর সময়সীমা নিশ্চিত করে বলতে পারছে কোন দেশই। তাই বিভিন্ন দেশে বিত্তবানরা আতঙ্কে বাড়িতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি খাদ্যসামগ্রী মজুদ করে রাখছেন। ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে জাতিসঙ্ঘ। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আপাতত গোটা বিশ্বের কোনো প্রান্তে খাদ্য জোগানের কোনো অভাব নেই। কিন্তু লকডাউন পর্ব যদি বাড়ানো হয়, আর বিত্তশালী ও খাদ্য সরবরাহকারীরা যদি আতঙ্কে অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ করতে শুরু করেন, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে খাবার পাবেন না দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষ। বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকার গরিব দেশগুলো এতে প্রবল সমস্যায় পড়বে। এই পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, সে জন্য সব দেশের সরকারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহে কড়া নজরদারি রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। খাবার নিয়ে যাতে কোনো ধরনের কালোবাজারি না হয় সে দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিপর্যয় কয়েক প্রজন্মকে ভোগাবে : করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় নেমেছে, তাতে আগামী কয়েক প্রজন্ম ভুগতে পারে। এই সঙ্কট মোকাবেলায় সব দেশের সমন্বিত পরিকল্পনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে লেখা মতামতে তিনি বলেন, করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় ব্যর্থ হলে এর প্রভাবে সারা বিশ্বে আগুন জ্বলতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, করোনার পরে বিশ্ব আর কখনোই একই রকম থাকবে না।
কঠিন সময়ের সাথে লড়াই নিউ ইয়র্কে : নিউইয়র্কে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, ঠেকানো যাচ্ছে না মৃত্যু। চিকিৎসা সরঞ্জামের আকাল নিউ ইয়র্কের পরিস্থিতিকে আরো সঙ্কটময় করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্যটিতে তিন হাজার ৫৬৫ জন মারা গেছে করোনায়। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৭৪ জন। শহরটির অন্তত এক হাজার ৪০০ পুলিশ কর্মকর্তার শরীরেও ধরা পড়েছে এই ভাইরাস, মারা গেছেন ১০ জন। গর্ভনর অ্যান্ড্রু কুওমো বলছেন, সংক্রমণ ৪ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে আরো বাড়তে পারে। মেয়র বিল ডে ব্লাসিওর আশঙ্কা, আগামী চার থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। এ দিকে নিউ ইয়র্কে কবরের জায়গার জন্য সর্বনি¤œ এক হাজার ৩০০ ডলার থেকে দুই হাজার ডলার লাগে। হাসপাতাল থেকে বাক্সবন্দী (কাস্কেট) লাশ পরিবহন করে কবরস্থানে পৌঁছে দেয়া ও ডেথ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করার জন্য ফিউনারেল হোমকে দিতে হয় এক হাজার ৮০০ ডলারের বেশি। কবর খনন ও মাটি ভরাট করানোর জন্য আরো দুই হাজার ৫০০ ডলার। সব মিলে ছয় হাজার ডলারের প্রয়োজন পড়ছে প্রতিটি লাশ দাফন করতে। অনেক পরিবারের জন্য এ অর্থের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় সংক্রমণের হটস্পট চার্চ : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট হয়ে উঠেছে স্যাক্রামেন্তা কাউন্টির বেথানি স্লাভিক মিশনারি চার্র্চ। ওই চার্চ সংশ্লিষ্ট ৭১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। চার্চের প্রায় তিন হাজার ৫০০ সদস্য রয়েছে। কোনো কোনো প্রার্থনা সভায় উপস্থিতির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। স্যাক্রামেন্তা কাউন্টির জনস্বাস্থ্য পরিচালক পিটার বেইলেনসন জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে আক্রান্তদের মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ মানুষেরই ওই চার্চের সাথে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাউন্টির কর্মকর্তারা ৩৫০ জন আক্রান্ত এবং ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিগগিরই সঙ্কটমুক্ত হবে না যুক্তরাষ্ট্র : হোয়াইট হাউজ করোনভাইরাস টাস্ক ফোর্সের ব্রিফিংয়ের সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আরো মৃত্যু হবে। অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র করোনার কারণে আরোপিত লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসবে না। করোনার কারণে উদ্ভূত সঙ্কট থেকে যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই মুক্ত হবে না। মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং কয়েক সপ্তাহ ও সম্ভবত কয়েক মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার ৫০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ হাজার ৯৯৭ জন। চিকিৎসাধীন দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৩৬ জন, তন্মধ্যে পাঁচ হাজার ৭৮৭ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সবচেয়ে বড় সঙ্কটে স্পেন : জাতীয় সতর্কতার মেয়াদ আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো শানচেজ বলেছেন, ‘আমরা এখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সঙ্কটের মুখোমুখি। আরো দুই সপ্তাহ নির্জন ঘরে একাকী থাকা কতটা কঠিন তা আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু এই সঙ্কটের মুখে এ ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। আরো কয়েক সপ্তাহ আমাদের এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকতে হবে। আমাদের জীবনে এই দিনগুলোই সবচেয়ে কঠিন দিন।’ স্পেনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা একটানা প্রায় তিন সপ্তাহ অব্যাহত থাকার পর এখন মনে করা হচ্ছে, সংক্রমণ তার শিখরে স্থিতিশীল হয়েছে। তবে রাশ টানা সম্ভব হলেও তা কমিয়ে আনার প্রচেষ্টায় এক নতুন বাধা তৈরি হয়েছে চিকিৎসাসামগ্রী সংগ্রহে তৃতীয় একটি দেশের বাধার কারণে। স্পেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ৪১৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯ জন।
মোদির কাছে সহায়তা চাইলেন ট্রাম্প : করোনায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যবহার হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ওষুধ। ভারত বিপুল পরিমাণে ওই ওষুধ রফতানি করে থাকে। তবে আপাতত তা বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র সরকার। রফতানি আবার চালু করার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে সহায়তা চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টা ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে করোনা মোকাবেলায় গঠিত টাস্কফোর্সের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ কানাডায় মাস্ক ও কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের যন্ত্র রফতানি বন্ধে চিকিৎসাসামগ্রী নির্মাণকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান থ্রিএমকে নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
ব্রিটেনে ২০ হাজার মারা যাওয়ার শঙ্কা : যুক্তরাজ্যে সাত থেকে ২০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় মহামারী বিশেষজ্ঞ নীল ফার্গুসন। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, করোনায় যুক্তরাজ্যে ৭ হাজার থেকে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। লকডাউনের কারণে করোনার বিস্তারের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে। তবে ব্রিটেনে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছতে পারে এই মহামারী।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবীও আক্রান্ত : ২৭ মার্চ প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আইসোলেশনে যেতে বাধ্য হন। এক সপ্তাহের মাথায় তার অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীর করোনা আক্রান্তের খবর বেরিয়েছে। কেরি সাইমন্ডস টুইটারে এক পোস্টে জানিয়েছেন, গত সাত দিন তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিছানাশায়ী। ব্রিটেনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ৯০৩ জন। এর মধ্যে চার হাজার ৩১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিকে যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের পরিবেশ ও সরঞ্জামের শোচনীয় অবস্থা উঠে এসেছে নিবিড় পরিচর্যা বিভাগের একজন চিকিৎসকের বক্তব্যে। করোনার কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, যাদের অবস্থা সঙ্কটময় তাদের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতালগুলো।
ফ্রান্সে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ : দিন যতই যাচ্ছে ক্রমেই ফ্রান্সে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশটিতে করোনার থাবায় মারা গেছে সাত হাজার ৫৬০ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯ হাজার ৯৫৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩৮ জন। বর্তমানে ৬৬ হাজার ৯৫৫ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি ছয় হাজার ৮৩৮ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের বেশির ভাগই আইসিউতে রয়েছে।
করোনা ছড়ানোয় চীনের শাস্তি দাবি আইসিজির : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মূলত চীনের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফল। নিজেকে বিশ্বে সুপার পাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই জৈব মারণাস্ত্রের সাহায্য নিয়ে দেশটি মানবতার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করেছে। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে চীন সরকারের অনিচ্ছা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক না করার জেরেই ভাইরাসটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমন অভিযোগ করে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনে চীনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মোটা অঙ্কের জরিমানা করার দাবি করেছে লন্ডনের সংগঠন আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞ সংসদ (আইসিজি)। আইসিজির সভাপতি আদিশ আগরওয়াল বলছেন, এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চীন সরকারের অনীহার জন্য বিশ্বব্যপী মন্দার সৃষ্টি হয়েছে। এই ভাইরাস চীনের সব প্রদেশে ছড়ায়নি, অথচ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
নিউজিল্যান্ডে আক্রান্ত হাজার ছাড়াল : নিউজিল্যান্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ সময় ৫ এপ্রিল রোববার দুপুরে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৩৯ জন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরো ৮৯ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যমান লকডাউন উপেক্ষাকারীদের নির্বোধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অরডার্ন।
টোকিওতে এক দিনে ১১৮ রোগী শনাক্ত : জাপানের রাজধানীতে এক দিনে করোনায় সংক্রামিত নতুন ১১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন সরকারের কর্মকর্তারা। জাপানে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৭৭ জন। ৫১৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
বিদেশীদের চলে যেতে বললেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী : অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ঘোষণা দিয়েছেন, ‘মহামারী করোনার এ সময়ে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছাড়া আর কারো কোনো দায়িত্ব নেবে না সরকার। শুধু অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেই তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। যারা অস্থায়ী ভিসা নিয়ে এ দেশে আছেন তাদের দ্রুত নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে। আমাদের নিজেদের রক্ষা করার জন্যই এ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’ অস্থায়ী ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানকারী প্রায় পাঁচ লাখ বিদেশী শিক্ষার্থী এবং ২০ লাখ হলিডে ওয়ার্কারকে অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে ‘দ্য কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অস্ট্রেলিয়া’ বলছে, এখন অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
দুবাইয়ে দুই সপ্তাহ বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ : করোনার বিস্তার ঠেকাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাইয়ে আগামী দুই সপ্তাহব্যাপী ২৪ ঘণ্টা জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে। তাই সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৬ মার্চ থেকে দেশটিতে জীবাণুনাশক স্প্রে কর্মসূচি চলছে, যা আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় দেশের বাসিন্দাদের নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করার নির্দেশ দেয় দেশটির সরকার। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫০৫ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ জন।
ইকুয়েডরে রাস্তায় লাশ ফেলে যাচ্ছেন স্বজনরা : দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীই গুয়াইয়াকুইল শহরে। সেখানকার হাসপাতালগুলোর ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে। নতুন রোগী ভর্তি হতে না পেরে হাসপাতালের সামনে, রাস্তায় পড়ে থাকছেন অনেকে। বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে সেখানেই। করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ বাড়িতে মারা গেলেও প্রিয়জনের লাশ সড়কেই রেখে যাচ্ছেন অনেকে। দেশটির করোনা নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স সড়ক থেকে প্রতিদিন লাশ সংগ্রহ করছেন। ইকুয়েডরে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৪৬৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ১৭২ জন।
বিচ্ছিন্ন দেশগুলোতে করোনা নেই : এখনো করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি এমন কিছু দেশও রয়েছে। জাতিসঙ্ঘের সদস্যভুক্ত দেশের সংখ্যা ১৯৩টি। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৮টি দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এগুলোর বেশির ভাগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপরাষ্ট্র। দেশগুলো হলো কমোরোস, কিরিবাতি, লেসোথো, মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, উত্তর কোরিয়া, পালাউ, সামোয়া, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিনসিপ, সলোমোন আইল্যান্ডস, দক্ষিণ সুদান, তাজিকিস্তান, টোঙ্গা, তুর্কমেনিস্তান, টুভালু, ভানুয়াতু ও ইয়েমেন। কিছু বিশেষজ্ঞ একমত, উত্তর কোরিয়া ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মতো দেশগুলোতে সরকারিভাবে করোনা শনাক্তের সংখ্যা শূন্য বলা হলেও সেখানে আক্রান্ত হননি, এমনটি মনে হয় বলা যাবে না।
আগে থেকেই গণকবর খুঁড়ছে ইউক্রেন : আগে থেকেই গণকবর খোঁড়া শুরু হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ডিনিপ্রো শহরে। সরকারের সহায়তায় খোঁড়া হয়েছে এসব গণকবর। গত ৩ এপ্রিল ৬০০টির মতো গণকবর খোঁড়া হয়েছে ডিনিপ্রো শহরে। এ ছাড়া লাশের জন্য কয়েক হাজার ব্যাগও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শহরটির কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনায় মৃতদের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তারা। এ ছাড়া এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা মানুষকে কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে সচেতন করতে চান। ইউক্রেনে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৫১ জন। মারা গেছেন ৩২ জন।


আরো সংবাদ



premium cement
‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সকল