ঢাকায় ঢোকা ও বের হওয়া বন্ধ আওতামুক্ত জরুরি সার্ভিস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০, আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০, ২৩:৫৩
জরুরি সেবায় যুক্তদের ছাড়া কাউকে ঢাকায় ঢুকতে কিংবা বের হতে দেয়া হবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ সদর দফতর। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে বাইরে থেকে ঢাকার ভেতরে মানুষের প্রবেশ এবং ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। গতকাল পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো: সোহেল রানা এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, রাজধানী কেন্দ্রিক সাধারণ মানুষের আগমন-বহির্গমন বন্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
এর আগে কিছু কিছু কারখানা চালু হওয়ার খবরের মধ্যে গত শনিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ হাজার হাজার মানুষের ঢাকামুখী ঢল নামে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর ওই রাতে আইজিপি এ নির্দেশনা দেন বলে পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, পরবর্তী সরকারি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জরুরি সার্ভিস ছাড়া সাধারণ জনগণকে ঢাকায় প্রবেশ অথবা ত্যাগ করতে দেয়া হচ্ছে না। একই সাথে জনগণের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এককভাবে বা দলবদ্ধভাবে বাইরে ঘোরাফেরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যে যেখানে আছেন, সেখানেই অবস্থান করবেন, কোথাও সমবেত হতে পারবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। তবে একান্ত জরুরি প্রয়োজন থাকলে তার বা তাদের বিষয়টি শিথিলযোগ্য হতে পারে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও জনগণের ঘরে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে পুলিশ। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কাজে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রোববার থেকে গার্মেন্টস খোলার খবরে গত শনিবার দিনভর বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার শ্রমিককে ঢাকায় আসতে দেখা যায়। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলে ঘরে অবস্থানের নির্দেশনার মধ্যে মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষের হাঁটার মিছিল ও ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পার হওয়ার ছবি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। দেশজুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্তের মধ্যে কারখানা খোলার সিদ্ধান্তের জন্য মালিকদের এবং হাজার হাজার মানুষকে দলে দলে এতটা পথ পাড়ি দিতে দেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। পরে শনিবার রাতে ১১ এপ্রিল সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি পর্যন্ত গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ মালিকদের প্রতি আহ্বান জানায়। এ দিকে শনিবার রাতেই এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রাজধানীমুখী মানুষের ঢল থামাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে নির্দেশনা দিলেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত দেশে মোট ৮৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৩ জন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। এর পর ১৮ মার্চ কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে প্রথম ব্যক্তির মৃত্যুর কথা জানায় আইইডিসিআর। ২৫ মার্চ প্রথমবারের মতো সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে সীমিত আকারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছে প্রায় ৬০ হাজার। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছে ২ লাখের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। রোববার এ ছুটির মেয়াদ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্রবাহিনীও।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা