৮৭ হাজার কোটি টাকার করোনা তহবিলের প্রস্তাব

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের প্যাকেজ প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
স্বল্পমেয়াদি খাতে ৬১ হাজার কোটি টাকা, মধ্যমেয়াদি খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অতিরিক্ত আরো আট হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবনা রয়েছে এতে। তবে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনায় সুনির্দিষ্টভাবে খাতওয়ারি বরাদ্দের কথা বলা হয়নি।
স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি খাতের আওতায় ২৭ দফার এই প্রস্তাবনায় সুপারিশগুলো সরকারের কাছে প্রেরণ করবে বিএনপি।
গতকাল শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্যাকেজ প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে দলের বক্তব্য তুলে ধরেছি। এখন আমরা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য কতগুলো পদক্ষেপের প্রস্তাব রাখছি। তন্মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে স্বল্পমেয়াদি অবিলম্বে, আর সময়ক্ষেপণ না করে। কিছু মধ্যমেয়াদি এবং কিছু দীর্ঘমেয়াদি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রদত্ত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩ শতাংশ অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল ঘোষণা করতে হবে। শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশোধিত আর্থিক প্যাকেজ প্রদান করতে হবে, যাতে সব সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধারণ ছুটিপূর্ব স্তরে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।
এই দুর্যোগ মোকাবেলায় দলের অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় ও বৈশ্বিক মহাদুর্যোগ মোকাবেলায় যেকোনো গঠনমূলক ও কল্যাণমুখী উদ্যোগে শামিল হতে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দম্ভ, অহঙ্কার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে সরকারকেই ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। কারণ উদ্যোগ পুরোটাই সরকারের।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমিন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে দরিদ্র গৃহহীন দুস্থ জনগোষ্ঠীর মুখে খাবার তুলে দিতে দেশের জনহিতৈষী ও বিত্তবানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সকালে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময়ে বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।
গত সপ্তাহে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দুই দফা টেলি করফারেন্সের মাধ্যমে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজ নিজ বাসায় বসে বৈঠক করে এই ২৭ দফা প্যাকেজ প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। স্বল্পমেয়াদি প্রস্তাবনার মধ্যে ‘দিনে এনে দিনে খায়’ ক্যাটাগরির সব শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক, হকার, ভাসমান শ্রমিক, ছিন্নমূল, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, সিএনজিচালক, ভাড়াভিত্তক গাড়িচালক (উবার, পাঠাও) পরিবহন শ্রমিক, বস্তিবাসী প্রভৃতি মহামারীর কারণে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে খাবার তুলে দিতে চাল-ডাল-লবণ-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এপ্রিল-মে-জুন তিন মাসের জন্য জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ, আশ্রয়হীনদের অস্থায়ী আবাসন ও প্রয়োজনে তাদের জন্য তৈরি খাবার সরবরাহে ন্যূনতম আট হাজার কোটি টাকা, সব শ্রমিক শ্রেণীকে (গার্মেন্ট, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতার শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত) সেবার জন্য অর্থ ও জীবনযাত্রায় সমর্থন প্রদান ও তাদের নগদ অর্থ সাহায্য প্রদান, ছয় মাসের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে কর্মরত শ্রমিক, রফতানিমুখী গার্মেন্টশ্রমিক, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় পরিচালিত অন্যান্য শিল্প কারখানা শ্রমিকদের জন্য আলাদাভাবে ১০ হাজার কোটি টাকা, কৃষকদের উন্নয়ন ও বীজসহ কৃষি উপকরণ সরবরাহ পাঁচ হাজার কোটি টাকা, এক বছরের জন্য পোলট্রিসহ সব ধরনের কৃষিঋণের কিস্তি ও সুদ মওকুফ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সব ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ, প্রবাসী শ্রমিক যারা দেশে ফিরেছে, তাদের তিন মাসের জন্য মাসিক ১৫ হাজার টাকার আপৎকালীন সাপোর্ট প্রদানে এই খাতে এক হাজার কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাত এবং করোনা মোকাবেলার সাথে যুক্ত হাসপাতাল ও সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্ত প্রতি চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু, চিকিৎসকদের জন্য এক কোটি, নার্সদের জন্য ৭৫ লাখ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমার বিপরীতে প্রিমিয়াম সরকারকে বহন করা, বয়স্ক নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ষাটোর্ধ্ব বয়স্কদের আগামী তিন মাস পাঁচ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদানে এই খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে যারা গ্রামে চলে গেছেন, তাদের সহযোগিতার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকা আপাৎকালীন ভাতা প্রদান, দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোকে আগামী তিন মাসের জন্য রান্নার গ্যাস ও গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার সরবারহের সুপারিশ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অবিলম্বে দেশের বরেণ্য অর্থনীতিবিদদের নিয়ে একটি আপদকালীর ‘অর্থনৈতিক টাস্কফোর্স’ গঠনের সুপারিশও করেছেন অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক মির্জা ফখরুল। করোনাভাইরাসের চিকিৎসার বিষয়ে স্বল্পমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে করোনা চিকিৎসক, নার্স, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার সাথে যুক্ত চিকিৎসা সহকারীদের জরুরি ভিত্তিতে পিপিই, কিট ও আনুষঙ্গিক ওষুধ ও দ্রব্যাদি সরবারহ, রাজধানী ঢাকাসহ, জেলা-উপজেলাপর্যায়ে করোনা রোগীদের জন্য আলাদা হাসপাতাল স্থাপন, পৃথক কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, পর্যাপ্ত টেস্টিং কিট আমদানি ও উৎপাদন, দ্রুত নতুন আইসিইউ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর ও চিকিৎসাসামগ্রী আমদানির ব্যবস্থা করা, কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল ও রাজধানীর বড় বড় শূন্য আবাসিক হোটেলগুলোকে সাময়িকভাবে হাসপাতালে রূপান্তরিত করা, নদীতে ভাসমান জাহাজে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
মধ্যমেয়াদি প্রস্তাবনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু সিদ্ধান্তের সাথে ঋণগ্রহীতাদের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সুদ মওকুফ ও ঋণের নিয়মিত কিস্তি তিন মাসের জন্য স্থগিতকরণ, সব ব্যাংককে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা প্রদান, তারল্য বৃদ্ধি করে ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটের আস্থা বাড়াতে সম্প্রসারণশীল মনিটরিং পলিসি গ্রহণ, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ন্যূনতম ১৫ শতাংশ-১৬ শতাংশ পর্যায়ে উন্নীতকরণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট, সিআর, এসএলআর, রেপোর হার কমানো, ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বন্ড ক্রয়, ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পের জন্য এবং বিশেষ করে দেশীয় পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য রি-ফাইন্যান্স করা, এসএমইর অর্থপ্রবাহ নিশ্চিত করতে তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট রিলিফ প্যাকেজ প্রদান, সরকারের ব্যয় সঙ্কোচন, অপচয় রোধ করে সেই অর্থ দিয়ে রফতানিমুখী শিল্প, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিল্পকে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান, করনীতির আওতায় করপোরেট করের হার হ্রাস, আপৎকালীন সময়ের জন্য কর মওকুফ, ব্যক্তিগত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অ্যাডভান্স ইনকামট্যাক্স আদায় বন্ধ রাখা, অপ্রয়োজনীয়, অনুৎপাদনশীল ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দেয়া, অপচয় রোধ, কঠোর কৃচ্ছ্রতা সাধন করা, মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থ ব্যয় কিছুটা মন্থর করা, অসাধু ব্যবসায়ী ও দালাল শ্রেণীর লোকদের ওপর নজরদারি রেখে সুষ্ঠু বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা, উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন নির্বিঘœ রাখা, অবিলম্বে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও আইএমএফসহ দ্বিপক্ষীয় আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে অর্থ সংগ্রহ করা, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি জমা দুর্যোগকালীন সময় পর্যন্ত স্থগিত রাখা, প্রবাসী শ্রমিকরা যাতে এই সময়ে ছাঁটাই না হন সে জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা, আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকাণ্ড স্থবির হওয়ায় তা সচল করতে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, কৃষি খাতে সহায়তা প্রদানে প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, খাদ্যপ্রবাহ যেন বন্ধ না হয় সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ রয়েছে।
গণমাধ্যমের জন্য আর্থিক প্যাকেজ প্রদানের সুপারিশ করে বলা হয়, গণতন্ত্র,মানবাধিকার, আইনের শাসন,স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, তথ্যপ্রবাহ ও জনমতামত তুলে ধরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব পালন করে আসছেন। করোনাভাইরাস মহামারীতে সংবাদকর্মীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে যে আর্থিক প্যাকেজ পেশ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই যুক্তিসঙ্গত। দেশের এই ক্রান্তিকালে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সাংবাদিকদের আর্থিক ও অন্য দাবিগুলো সুবিবেচনা করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে তাদের মৌলিক ভূমিকায় ফিরিয়ে এনে বিধবস্ত অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যথাযথ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, আর্থিক, ব্যাংকিং ও কর ব্যবস্থায় সংস্কার, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত নীতি গ্রহণ, প্রবাসীরা দেশে ফিরলে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা রয়েছে।
সংক্রামক মহামারীর প্রসঙ্গ টেনে প্রস্তাবনায় বলা হয়, দেশে ইবোলা, ডেঙ্গু বা করোনাভাইরাসের মতো মহামারী মোকাবেলায় যথাযথ সক্ষমতা গড়ে তুলতে দক্ষ জনবল, পরীক্ষা কিট, পিপিই, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সংবলিত পর্যাপ্তসংখ্যক পৃথক বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারা যুদ্ধাবস্থার মতো যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। সররকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ভেন্টিলেটর নির্মাণ শিল্প গড়ে তোলা, ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বিএনপির ঘোষিত ভিশন-২০৩০ মোতাবেক জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে।
২৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সুপারিশগুলো জরুরিভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমের সাংবাদিক, দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, বিজ্ঞানী, রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিরলস ভূমিকার প্রশংসা করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিএনপি মহাসচিব।
করোনা সংক্রামণ থেকে রক্ষায় কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যথাযথ সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ রয়েছে এই প্যাকেজ প্রস্তাবনায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে বেশির ভাগ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও আইইডিসিআরে হটলাইনে ফোন করে সেবা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী দেশে গত দুই মাসে আট লাখ মানুষ করোনা হটলাইনে টেস্টের জন্য ফোন করেছে। আইইডিসিআর একাই ৭০ হাজারের ঊর্ধ্বে কল পেলেও ২৮ মার্চ পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জনকে টেস্ট করেছে তারা। তার মধ্যে ৪৮টি কেস পজেটিভ পাওয়া গেছে। অর্থাত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বারংবার তাগিদ সত্ত্বেও বাংলাদেশ সর্বনিম্ন টেস্টিং দেশের অন্যতম। অন্য দিকে ফেটালিটি রেটের (ভয়াবহতার হার) চিত্র দেখলে এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে করোনা মৃত্যুর হার বিধবস্ত ইতালীর তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশে করোনা মৃত্যুর হার ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ ইতালিতে করোনায় মৃত্যুর হার ১০ দশমিক ২ শতাংশ। নিঃসন্দেহে রোগ পরীক্ষার স্বল্পতাই এই হিমশীতল মৃত্যুহারের কারণ। প্রতি হাজারে দক্ষিণ কোরিয়া যেখানে টেস্ট করেছে ছয়জন সেখানে বাংলাদেশ প্রতি ১০ লাখে টেস্ট করেছে মাত্র ছয়জন। এটা উদাসীনতা না উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত তা আমাদের বোধগম্য নয়। এই মহাদুযোর্গের সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যের অস্বচ্ছতার কারণে জাতিকে কোনো চড়া মূল্য দিতে হয় কি নাÑ সেটিই আশঙ্কা।