সীমিত আকারে চলছে তাবলিগ জামাতের কাজ
- ফয়েজ উল্লাহ ভূ্ইঁয়া
- ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
সীমিত আকারে চালু রয়েছে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কাজ। সরকারি ছুটি ঘোষণার পর থেকে যারা দেশের যেখানে ছিলেন তাদেরকে সে এলাকার মসজিদে বা আশপাশে সুবিধাজনক ভবনে অবস্থান করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত ইবাদত করার জন্য বলা হয়েছে। এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদে যাতায়াত এবং পাড়া-মহল্লায় গিয়ে দাওয়াতি কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নতুন করে জামাত পাঠানো বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়ের ও সাদপন্থীদের দু’টি গ্রুপের অন্তত পাঁচ শতাধিক বিদেশী নাগরিক বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তাদেরকেও নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং শীর্ষস্থানীয় আলেমদের পক্ষ থেকে তাবলিগের মুরব্বিদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তাবলিগ জামাতের অন্যতম পরামর্শদাতা শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ এ ব্যাপারে গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার কাছে কিছুদিন আগে তাবলিগের মুরব্বিরা পরামর্শ চেয়েছিলেন। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি তাবলিগের কাজ বন্ধ রাখার জন্য।
তিনি বলেন, যেভাবে মসজিদের জামাতের মতো ওয়াজিব বা সুন্নাতে মোয়াক্কাদা পর্যন্ত বাদ দেয়া হচ্ছে, সেখানে তাবলিগের মতো মুস্তাহাব কাজ চালু রাখার কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, এরপর আমাকে রিপোর্ট করা হয়েছে, আমাদের পরামর্শ মতো নতুন জামাত পাঠানো বন্ধ আছে। তবে যেসব জামাত আটকা পড়েছে সেগুলোকে মসজিদে কোয়ারেন্টিনের মতো দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করে ব্যক্তিগত আমলের মধ্যে থাকতে বলা হয়েছে। নামাজের পর সুযোগ থাকলে মাত্র ৫-১০ মিনিট মসজিদের মধ্যেই তালিম জারি রাখতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতিমার মাঠে যারা ছিলেন তাদের একটি অংশকে সেখানে টিনশেডে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। কিছু লোককে আশপাশের বিভিন্ন ভবনে রাখা হয়েছে। লকডাউন অবস্থায় তারা কোথাও চলাচল করবেন না।
মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাথে শীর্ষ আলেমদের বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হয়েছে এবং সেই আলোকে তাবলিগের শীর্ষ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেককে নিজ নিজ দেশের সরকারের নিয়ম মেনে চলার জন্য ইসলামে নির্দেশনা রয়েছে। বিশেষকরে এই ধরনের দুর্যোগের সময় সরকারি নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
তাবলিগের জুবায়েরপন্থী অংশের একজন সমন্বয়কারি মুফতি জহির ইবনে মুসলিম জানান, এসএসসি পরীক্ষার পর ছাত্রদের তিন হাজারের ওপরে জামাত বের হয়। সেগুলোর কিছু এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গেছে। তাদেরকে বলা হয়েছে যারা চান নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাবেন। আর যারা থাকতে চান তারা যেন সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে যেখানে আছেন অবস্থান করেন। তিনি বলেন, ঢাকায় কাকরাইল মসজিদ ছাড়াও আটটি মারকাজ রয়েছে। সেগুলোতে বসে মুরব্বিরা পরামর্শ করেন। কোনো বিষয় নিয়ে পরামর্শের দরকার হলে আলেমদের মতামত নেয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিতেও আলেমদের মতামত নেয়া হয়েছে।
তাবলিগে আসা বিদেশীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে জুবায়েরপন্থীদের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানা যায়নি। এ ব্যাপারে মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, কিছুসংখ্যক বিদেশী আছে, এটা আমাকে জানানো হয়েছে, তবে সংখ্যাটা বলেনি। অন্য একটি সূত্র জানায়, তাদের বিদেশী মেহমানের সংখ্যা দুই শতাধিক হবে।
জানার জন্য বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের শূরার ছয় সদস্যের অন্যতম মাওলানা জুবায়েরের মেবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
অন্য দিকে গতকাল একটি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সাদপন্থীদের ৩৪১ জন বিদেশী এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ১৬১ জন ভারতের ১৪৩ জন, ইথিওপিয়ার ১০ জন, মিসরের তিনজন, ফিলিপাইনের দুইজন ও থাইল্যান্ডের তিনজন উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে জানতে সাদপন্থীদের বাংলাদেশের প্রধান মুরব্বি মাওলানা ওয়াসিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদে এখন দুই সপ্তাহের পালায় সাদপন্থীরা অবস্থান করছেন। তবে সেখানে কিছু লোক অবস্থান করলেও নতুন কোনো জামাত পাঠানো বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষকরে দিল্লি নিজামুদ্দিন মারকাজের জমায়েত থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু ও ২৪ জন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পর সাদপন্থীদের কার্যক্রমও সীমিত করা এবং নতুন জামাত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা