২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
করোনায় আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতার আহ্বান

মসজিদ চালু রাখার ব্যাপারে অনড় আলেমরা

-

করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশে অঘোষিত লকডাউনের মধ্যেও দেশের সব মসজিদ চালু রাখা এবং জুমার জামাতসহ সব জামাত চালু রাখার মতামতে অনড় রয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা। এমনকি পরিস্থিতির আরো অনবতি হলেও কোনোভাবেই মসজিদ বন্ধ করা যাবে না বলে মত দিয়েছেন অনেকে। তবে সে ক্ষেত্রে উপস্থিতি একেবারে সীমিত করে মসজিদ চালু রাখতে হবে বলে মতামত এসেছে।
গতকাল রোববার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে আলেমরা এই মতামত ব্যক্ত করেন। সংস্থার আগারগাঁও কার্যালয়ে বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠকটি ৩টার দিকে শেষ হয়।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে মসজিদ বন্ধের ব্যাপারে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফতোয়া এবং কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্রে নামাজ বন্ধ করার বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশেও মসজিদ বন্ধ রাখা বা মুসল্লিদের মসজিদে যেতে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যায় কি নাÑ মতামত জানতে দ্বিতীয়বারের মতো আলেমদের ইফায় ডাকা হয়। ঢাকার বাইরে অবস্থান করা কিছু আলেমেরও মতামত নেয়া হয় ফোনে।
তবে আলেমরা কোনোভাবেই মসজিদ বন্ধের পক্ষে নন বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন। বৈঠকে অংশ নেয়া আলেম ও ইফা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ইফার পক্ষ থেকে বৈঠক সম্পর্কে কোনো কিছু জানানো হয়নি। এ রিপোর্ট লেখার সময় ইফা ডিজি আনিস মাহমুদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার অন্য ব্যস্ততার কারণে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, বৈঠকে আলেমরা বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি একেক দেশে একেক রকম। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় এখানকার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো কোনো মুসলিম দেশে মসজিদ বন্ধ করা হলেও বাংলাদেশে মসজিদ বন্ধের পরিস্থিতি হয়নি বলে মত দেন অনেকে। এমনকি পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটলেও যেকোনোভাবে মসজিদে জামাত চালু রাখার পক্ষেই অধিকাংশ আলেম মত ব্যক্ত করেন।
তবে বৈঠকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রতি কোনো রকমের ঘৃণা প্রদর্শন না করা, দূরে সরিয়ে না দিয়ে সহমর্মিতা প্রদর্শন এবং মৃতদের প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করে দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট যারা এই সময়ে ঝুঁকি নিয়ে সেবা অব্যাহত রাখছেন তারা আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা ও সওয়াবের অধিকারী হবেন বলেও আলেমরা মতামত ব্যক্ত করেন।
মসজিদের ব্যাপারে বলা হয়, শুক্রবার জুমার জামাত এবং অন্যান্য দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য মসজিদ খোলা থাকবে। সীমিত মুসল্লির অংশগ্রহণে জামাত অব্যাহত থাকবে। করোনায় আক্রান্ত এবং আক্রান্তের আশঙ্কা করা হচ্ছে এমন ব্যক্তি, অসুস্থ, বৃদ্ধ, শিশুরা মসজিদে গমন থেকে বিরত থাকবেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, শায়েখ জাকারিয়া রহ. ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মুফতি দিলাওয়ার হুসাইন, মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. মাওলানা কাফিলউদ্দীন সরকার সালেহি, বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান, পেশ ইমাম মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভি প্রমুখ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আনিস মাহমুদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৪ মার্চ আলেমদের নিয়ে ইফা বৈঠকে বসে মতামত নিয়ে আলেমদের তিনটি আহবান প্রচার করেছিল। মসজিদেরর জামাতে মুসল্লি সীমিত করা এবং ব্যক্তিসুরক্ষা নিয়ে মসজিদে যাওয়া এবং অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের মসজিদে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে গত ২০ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে ইফা মুসল্লিদের বাসা থেকে অজু করে নফল ও সুন্নত নামাজ পড়ে শুধু জুমার ফরজ নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে পরামর্শ দিয়েছিল। অসুস্থ ব্যক্তি, জ্বর, হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত এবং বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের মসজিদে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement