২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘আমাদের ঘর নাই যাবো কোথায়?’

এই শিশু ও তার মা জানেনা কোয়ারেন্টিন-লক ডাউন কী। তাই তো করোনার ঝুঁকিতেও নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। রাজধানীর মহাখালী থেকে ছবিটি তুলেছেন আমাদের সিনিয়র আলোকচিত্রী নাসিম সিকদার -

যাদের ঘর নেই তারা চলমান লকডাউনের মধ্যে যাবেন কোথায়? এমন অসংখ্য মানুষ এখনো রাস্তাঘাটে পড়ে আছে। ফাঁকা স্টেশনের প্লাটফর্মে তারা ঘুমাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীইবা তাদেরকে কোথায় নিয়ে যাবে? পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন কিছুই নেই তাদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লোকগুলো ঝুঁকি বাড়াতে পারে। আপাতত হলেও এদের জন্য শেল্টার তৈরি করা উচিত। বৃহত্তর স্বার্থে এই লোকগুলোকে এখন সরকারের কেয়ারে রাখা উচিত।

কমলাপুর স্টেশনের ভেতরে এক কোণে চুপটি মেরে বসে আছে সিয়াম। শিশুটির বয়স ৪-৫ বছরের বেশি হবে না। শিশুটির মা স্টেশনেই ভিক্ষে করে। এখন ভিক্ষেও নেই। শিশুটিকে নিয়ে কোথায় যাবেন তাও জানা নেই। সিয়ামের মা নিজের নামটাও বলতে নারাজ। তবে স্টেশনের কয়েকজন জানালেন, কয়েক বছর ধরেই তার অবস্থান এই স্টেশনে। শিশুটিকে ছোট নিয়ে এখানে এসেছেন। তার বক্তব্য তাদের তো ঘর নেই; কোথায় যাবেন। তিনি বলেন, তার জন্য না, শিশুটির জন্য তার কষ্ট হয়। শিশুটির যদি কিছু হয়ে যায় এই আশঙ্কা। তার পরেও কিছুই করার নেই। তাদের ঘর নেই। রাস্তার পাশেই থাকতে হবে। 

মানবাধিকার নেটওয়ার্ক ম্যাপসি বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা সোহেল বলেন, ফুটপাথে অসংখ্য মানুষ এখনো পড়ে আছেন। বাচ্চাগুলোর কাছে জিজ্ঞেস করলে বলছে, ‘আমাদের ঘর নেই, আমরা কোথায় যাবো?’ এসব মানুষের থাকার জায়গা নেই। এই মানুষগুলো সবচেয়ে ঝুঁঁকির মধ্যে আছে। তারা নিজেরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে আছে, তেমনি ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এরা যেকোনো সময় সংক্রমিত হতে পারে। আবার তারা অন্যকে সহজে সংক্রমিত করতেও পারে। তাদের নিরাপদ খাদ্য নেই, পানীয় নেই। যেকোনো কিছুর মাধ্যমেই তারা সংক্রমিত হতে পারে। মোস্তফা সোহেল বলেন, আপাতত এই মানুষগুলোর জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের দরকার। সে ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি ধনীদের এগিয়ে আসতে হবে। 

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গতকালও দেখা গেছে বেশকিছু ছিন্নমূল মানুষ শুয়ে বসে দিন কাটাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য জানালেন, ওরা কোথায় যাবে? ওদেরতো ঘর নেই। ওদেরকে এক স্থান থেকে তাড়ালে পাশেই আরেক স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। শুধু দৌড়াদৌড়ি, আসলে তো কোনো কাজ হয় না। ওদের কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। এভাবেই এক প্লাটফর্ম থেকে আরেক প্লাটফর্মে গিয়ে থাকতে হবে ওদের। ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ওদেরকে কোথাও রাখার ব্যবস্থা না করে সরাতে চাইলেই সরানো যাবে না। ঘুরে ফিরে আবারো চলে আসবে। নির্দিষ্ট কোথাও নিয়ে রাখার নির্দেশ দিলে তখন হয়তো তা বাস্তবায়ন সম্ভব হতো।

মানবাধিকার কর্মী রেজা কবির বলেন, আপাতত এ মানুষগুলোকে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা খোলা মাঠে শেল্টার তৈরি করে রাখা যেতে পারে। না হলে এরা মারাত্মক হুমকি হতে পারে। কবির বলেন, এই মানুষগুলোর স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে তাদেরকে স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনা উচিত।

গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এমন অনেক মানুষের দেখা মেলে। যাদের কোনো ঘর নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আরো কিছু মানুষ। যাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ যানবাহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বাড়ি ফিরতে পারেননি। এদেরও কেউ কেউ নানা জায়গায় অবস্থান করছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নাটোরে স্কুলছাত্রকে ডেকে নিয়ে হত্যা, আটক ৪ মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই দুর্ঘটনায় তরুণ নিহত ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের

সকল