১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে আরো ৫ জন আক্রান্ত

খাগড়াছড়িতে আইসোলেশনে থাকা রোগী ও খুলনায় করোনা সন্দেহভাজনের মৃত্যু
-

দেশে আরো পাঁচজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া বুধবার রাতে খাগড়াছড়িতে হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা এক রোগী মারা গেছেন। খুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে দুই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া এক রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আরো পাঁচজনের মধ্যে পাওয়া গেছে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি। এটা নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো মৃত্যু নেই এবং গতকাল আরো চারজন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত ৪৪ জনের মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছে ১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় যে চারজন সুস্থ হয়েছেন এদের পর পর দু’বার পরীক্ষায় কোনো ভাইরাস পাওয়া যায়নি। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংক্রমণ মৃদু। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রোগতত্ত্ব¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা: মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে বিচলিত হবেন না, সাহস রাখুন। ১৬২৬৩ নাম্বারে আইইডিসিআরের সাথে যোগাযোগ করুন।
এ দিকে ছুটি পেয়ে যারা ঢাকার বাইরে চলে গেছেন তাদের মধ্যে হয়তো কেউ কেউ কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। তাদের ব্যাপারে মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আপনারা যারা কোয়ারেন্টিনে ছিলেন তারা যদি গ্রামের বাড়ি গিয়ে থাকেন তারা বাড়িতে গিয়েই কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। আপনাদের দ্বারা হয়তো আরো অনেকে সংক্রমিত হতে পারেন। ১০ দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করার পর ঢাকা হাজার হাজার মানুষ ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। দেখা গেছে, তারা একজনের গায়ের সাথে গা লাগিয়ে অপর একজন পরিবহনে আরোহণ করেছেন। এদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অনেকেই পরিবহন থেকে জীবাণু সংক্রমিত হয়েই বাড়িতে যাবেন এবং নিজের অজান্তেই এভাবে তারা অনেকের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেবেন। মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ ব্যাপারটির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, যে পাঁচজন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এদের সবাই পুরুষ। আক্রান্তদের একজন বিদেশফেরত, অপর তিনজন আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছিলেন। অপর একজন কার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন তা এখনো জানা যায়নি। তিনি কার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। অধ্যাপক ফ্লোরা জানান, যে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে এদের মধ্যে দুইজনের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, অপর দুইজনের বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং অবশিষ্ট একজন ষাটোর্ধ্ব। গত ২৪ ঘণ্টায় যে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে এদের মধ্যে একজন কোমরবিডিটি (অন্যান্য রোগ) রয়েছে।
করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ব্যাপারে ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক ফ্লে¬ারা বলেন, আগে বিভিন্ন স্থান থেকে বিশেষত হাসপাতাল থেকে আইইডিসিআরে নমুনা সংগ্রহ করে দিয়ে যেত। এখন থেকে নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি আরো প্রসারিত করেছি। এখন হাসপাতালও নমুনা সংগ্রহ করে আমাদের পাঠাতে পারবে। আইইডিসিআর ছাড়াও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম শুরু করেছি। মহাখালীর ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ বা আইপিএইচে, শিশু হাসপাতালে এবং চট্টগ্রাম ট্রপিক্যাল ডিজিজ ইনস্টিটিউটে পরীক্ষার সুবিধা সম্প্রাসারণ করা হয়েছে। এর আগে আমরা মূলত নমুনা সংগ্রহ করেছি যারা বিদেশ থেকে এসেছেন এবং যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের থেকে। এ ছাড়া যারা ঝুঁকিপূর্ণ ছিলেন এবং যারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন তাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করতাম।
তিনি বলেন, দয়া করে ঘরের বাইরে যাবেন না। সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের যে কর্মসূচি চলছে তা মেনে চলুন। সবার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্যই এসব করা হয়েছে। তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান, শিষ্টাচার মেনে চলুন। বয়স্ক অথবা যাদের অন্যান্য রোগ আছে তারা ঘরে থাকুন, বাইরে যাবেন না। যেখানে-সেখানে থুতু ফেলবেন না। কিছুক্ষণ পর পর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। উল্লেখ্য, হাঁচি-কাশি দিলে টিস্যু ব্যবহার করতে বলা হয়েছে এবং একবার ব্যবহার করে তা ঢাকনাযুক্ত স্থানে ফেলে দিতে বলা হয়েছে। টিস্যু না থাকলে শার্টের হাতায় অথবা শাড়ির আচলে হাঁচি দিতে বলা হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে আইসোলেশনে থাকা রোগীর মৃত্যু
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বয়স ৩০ বছর। সে পেশায় একজন দিনমজুর ছিল। গত বুধবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানান খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পূর্ণজীবন চাকমা।
দীর্ঘ দিন ধরে ওই রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছিল বলে জানান স্বজনরা। বুধবার সকালে শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গেলে লক্ষণ দেখে তাকে আইসোলশেন ওয়ার্ডে রাখা হয়। নিহত ব্যক্তি থেকে সংগ্রহকৃত নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। এ দিকে তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার, নার্স এবং আয়াসহ চারজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। নিহতের লাশ যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে নিহতের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
খুলনায় একজনের মৃত্যু : সন্দেহ করোনা
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে মোস্তাহিদুর রহমান (৪৫) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি করোনায় আক্রান্ত রোগী ছিলেন বলে চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন) ও করোনা ম্যানেজমেন্টের ফোকাল পার্সন ডা: শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিটে মোস্তাহিদুর রহমান ভর্তি হন। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, দুই সপ্তাহ আগে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মোস্তাহিদুর রহমানের থাইরয়েড সার্জারি করা হয়। তিনি সেখানকার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, এখানে ভর্তির সময় তিনি সেই তথ্য গোপন করেন। মডার্ন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার পর হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তা মানেননি এবং তথ্য গোপন করে এখানে ভর্তি হন। তার কারণে ঝুঁকি বেড়ে গেল। তাকে চিকিৎসা দেয়া ১৫ থেকে ২০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের ৯০ শতাংশ সন্দেহ ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
বরিশালে আরো ৩ রোগী করোনা সন্দেহে হাসপাতালে
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো তিনজন রোগীকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে পাঁচজন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাশি ও জ্বর নিয়ে বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদকাঠি এলাকার বিথি আক্তার (২৬) বুধবার বিকেলে ভর্তি হন। একই দিন সন্ধ্যায় একই কারণে ভর্তি হন আগৈলঝাড়া উপজেলার চান্দো গ্রামের তৃষ্ণা রানী (৪৫)। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ভর্তি হয়েছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নিমদি গ্রামের নোমান (২৫)।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি শ্যামনগর উপজেলার দাতনিখালী গ্রামের এস এম সুলতান মাহমুদ সুজন নামের ওই যুবকের শরীরে কোনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। আইইডিসিআরের বরাত দিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন সাফায়েত। তিনি গতকাল সাংবাদিকদের জানান, তাকে এরই মধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল ছেড়ে তিনি ফিরেছেন নিজ বাড়িতে। এ দিকে জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশফেরত আরো নতুন ৪০২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে। এ নিয়ে গত আট দিনে বিদেশফেরত সাতক্ষীরার এক হাজার ৫৬২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহে দুই নারীকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি : করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে বুধবার রাতে দুই নারীকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বাসিন্দা।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও করোনা ম্যানেজমেন্টের ফোকাল পার্সন ডা: শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, বুধবার মধ্যরাতে জ্বর ও সর্দি-কাশি আক্রান্ত অবস্থায় এক নারীকে তার বান্ধবী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার লক্ষণ দেখে বান্ধবীসহ তাকে করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ডাক্তাররা তাদের পর্যবেক্ষণ করছেন। তাদের অবস্থা এখন ভালো আছে। যদি খারাপের দিকে যায় তাহলে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে। মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে একজন পুলিশ সদস্য ও সাথে আসা তার বাবাকে খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তারা এখনও সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন ডা: শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
রংপুর বিভাগে হোম কোয়ারেন্টিনে ১৮৩২ জন
রংপুর অফিস জানায়, রংপুর বিভাগের আট জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে গেছেন বিদেশ ফেরত আরো ১৩৯ জন। এ নিয়ে এই বিভাগে মোট হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছেন এক হাজার ৮৩২ জন।
রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ও করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন জেড এম সিদ্দিকী নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই বিভাগের ৮ জেলায় মোট দুই হাজার ৭১৯ জন হোম কোয়ারেন্টিনে গেছেন। এর মধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৮৯০ জনকে। এখন হোম কোয়ারেন্টাইন আছেন এক হাজার ৮৩২ জন। যাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে এ গেছেন ১৩৯ জন। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি আছেন একজন।
ঝালকাঠিতে সেনা টহল
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, বুধবার বেলা ২টা থেকে ঝালকাঠি জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এরপর থেকে ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলার মূল সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও শহর ও শহরতলীর অলিগলি এবং এলাকার ভেতরের দোকানগুলোতে ভিড় করছে জনসাধারণ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সেনা সদস্যরা ঝালকাঠিতে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। তারা জেলা শহরসহ চার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় টহল দিচ্ছে।
কোম্পানিগঞ্জে কোয়ারেন্টাইনে আরো ৪ প্রবাসী
কোম্পানিগঞ্জ (নোয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে বসুরহাট পৌরভবনে স্থাপিত কোয়ারেন্টিন সেন্টারে আরো চার প্রবাসী যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৩৫ জন কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছে। ১৪ দিন পূর্ণ হওয়ায় পর কোনোরূপ অসুস্থতার লক্ষণ না থাকায় ৯ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২৯ জন। বৃহস্পতিবার পৌরসভার কোয়ারেন্টিন কন্ট্রোল রুম থেকে এই তথ্য জানা যায়।
টাঙ্গাইলে ২টি বাড়ি লকডাউন, এক জনকে জারিমানা
টাঙ্গাইল ও বাসাইল সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাস সন্দেহে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের দু’টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এই দু’টি বাড়িতে তিনটি পরিবার রয়েছে। পরিবারে সদস্য রয়েছেন মোট ১২ জন। এই তিন পরিবারের কর্তারা হলেনÑ লুৎফর রহমান, ফজলুর রহমান ও আতোয়ার রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী এই লকডাউনের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ঢাকার মিরপুরে লকডাউন হওয়া একটি বাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বাসাইলের ওই গ্রামে তার শ^শুর লুৎফর রহমানের বাড়িতে এসে ওঠেন। গত পাঁচ দিন ধরে তিনি ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে প্রশাসনকে জানায়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ি তিনটি লকডাউন ঘোষণা করেন। এ সময় জাহাঙ্গীর আলমের শ্বশুর লুৎফর রহমানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কুষ্টিয়ায় তথ্য গোপন করায় প্রবাসীর বাড়ি লকডাউন
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সন্দেহে এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর সাত মাস বয়সী শিশুকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সেই সাথে করোনাভাইরাসের আশঙ্কায় সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ওই বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, সিঙ্গাপুর প্রবাসী তৌহিদুল ইসলাম গত ৯ মার্চ দেশে ফেরেন। গত ২৩ মার্চ ওই সিঙ্গাপুর প্রবাসীর সাত মাস বয়সী শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই সময় শিশুটির শরীরে জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশি ছিল। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তৌহিদুল ইসলামের বিদেশ থেকে আসার বিষয়টি গোপন করেন। বৃহস্পতিবার শিশুটির অবস্থা অবনতির দিকে যায়। সন্দেহ হলে চিকিৎসকেরা ওই পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় ওই পরিবারের সদস্যরা স্বীকার করেন শিশুটির বাবা তৌহিদুল ইসলাম একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী। ডা: তাপস কুমার সরকার জানান, বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করে রিপোর্ট দেয়ার পর বোঝা যাবে শিশুটি করোনাভাইরাস পজেটিভ কিনা।
রাজশাহীতে হোম কোয়ারেন্টিনে ৪৪০ জন
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে এখন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৪০ জন বিদেশফেরত ব্যক্তি। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৭ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনে আনা হয়েছে। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা: এনামুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, গত ১ মার্চ থেকে রাজশাহী জেলায় মোট ৬০৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ দিন পূর্ণ হওয়ায় ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১৬৫ জনকে।


আরো সংবাদ



premium cement