২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশে বয়স্কদের মৃত্যুহার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি : অধ্যাপক ডা: মো: মোজাহেরুল হক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক পরিচালক

-

বাংলাদেশে বয়স্কদের মৃত্যুহার ৮৩.৩৩ শতাংশ। এ সংখ্যাটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে এবং এরা সবই ষাটোর্ধ্ব। আজ (গতকাল) বুধবারও ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি মারা গেলেন। এটা প্রমাণ করে যে, বয়স্কদের চিকিৎসায় খুব বেশি ব্যবস্থা নেই বাংলাদেশে। এটা ঠিক যে, বয়স্করা সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকেন। তারা যে হারে সংক্রমিত হয়েছেন (গতকাল বুধবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৩৯ জন) বিশ্বের অন্য যেকোনো করোনা আক্রান্ত দেশের চেয়ে এ সংখ্যাটা বেশি। অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার কারণ হলো বয়সের কারণেই তারা ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, কিডনি জটিলতা, অ্যাজমাসহ (হাঁপানি) অন্যান্য রোগে ভুগে থাকেন। সে কারণে বয়স্কদের করোনার চিকিৎসা করতে হলে এ সম্বন্ধে প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও নার্স লাগবে। তাদের জন্য লাগবে ভেন্টিলেশন-আইসিইউ সুবিধা। তাদের চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট সম্বন্ধে দক্ষ চিকিৎসক, প্যারামেডিক ও নার্স লাগবে।
বাংলাদেশে যে বয়স্কদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি তা গত ২৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার বক্তব্য থেকেই পাওয়া যায়। অধ্যাপক ফ্লোরা বয়সভিত্তিক আক্রান্তদের তথ্য দিতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব মোট ছয়জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত যে পাঁচজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদের সবাই কো-মরবিডিটি (করোনার সাথে অন্যান্য অসুখ) ছিল। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হলে শতাংশে তা ৮৩-এর বেশি হয়। এ সংখ্যাটি করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত চীন থেকেও বেশি। চীনে ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সীদের মৃত্যু ছিল ৩.৬ শতাংশ, ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সীদের মৃত্যু ছিল ৮ শতাংশ এবং ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে করোনা আক্রান্তদের মৃত্যু ছিল ১৪.৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নেই। এখানে যারা মারা গেছেন তাদের সবার বয়স ৬০ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যেই ছিল। চীনের এ তথ্য থেকেই তুলনা করা যায় যে, বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুহার বেশি। তা ছাড়া ইউরোপেও এত বেশি বয়স্ক মারা যাননি। বয়স্কদের মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে, যদি তাদের জন্য আরো বেশি হাসপাতাল কেয়ার বাড়ানো এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের আইসিইউ ও ভেন্টিলেশন সাপোর্ট সিস্টেম শক্তিশালী করা যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement