২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
এক বছরের বেশি সময় ধরে স্থগিত শ্রমবাজার

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর ঢাকায় ব্যস্ত সময়

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারান প্রতিনিধিদল নিয়ে এখন ঢাকায় : নয়া দিগন্ত -

স্থগিত শ্রমবাজার উম্মুক্তে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ সভায় যোগ দিতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকা এসেছেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এ সময় তাদের বিমানবন্দর ভিআইপি লাউঞ্জে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা।
মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বায়রার সাধারণ সদস্যরা আশা করছেন, এই বৈঠকের পর স্থগিত শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে কাক্সিক্ষত ঘোষণা আসার সম্ভবনা রয়েছে। অবশ্য তিন দিন আগেও খবর রটেছিল, কুলসেগারান ঢাকা আসার সফর অনিবার্য কারণে বাতিল করেছেন।
এ দিকে মানবসম্পদ মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গতকালই ঢাকার অদূরে ‘মুন্সী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার’ নামে একটি টেকনিক্যাল সেন্টার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এই টেকনিক্যাল সেন্টারটির মালিক একজন জনপ্রতিনিধি।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ পর্যায়ের চতুর্থ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ সভাটি আগামীকাল সোমবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
এর আগে অবশ্য রুটিন ওয়ার্ক অনুযাযী মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারান বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টদের সাথে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার শিডিউল রয়েছে।
গতকাল জনশক্তি রফতানিকারক একজন ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, এবার যাতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কেউ যাতে কোনো সিন্ডিকেট না করতে পারে সেভাবেই দুই দেশের নীতিনির্ধারকরা ঐকমত্য পোষণ করছেন।
কম খরচে (অভিবাসন ব্যয়) কর্মী পাঠানো এবং সরকারের ডাটা ব্যাংক থেকে কর্মী নিয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়াতে তারা মালয়েশিয়াতে এবার লোক পাঠাতে বেশি আগ্রহী। তা ছাড়া মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারানও চাচ্ছেন, বাংলাদেশ থেকে যেনো এবার দ্রুত তার দেশে শ্রমিক যেতে পারে। সে লক্ষ্য নিয়ে এবার তিনি ঢাকায় এসেছেন বলে মনে করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া সরকার এক ঘোষণায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার (এসপিপিএ) কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। এরপর থেকেই গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে বৈধভাবে কর্মী যাওয়ার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে শ্রমবাজারটি খুলতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং সচিব সেলিম রেজা, মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম এবং জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বায়রার বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিবসহ কার্যনির্বাহী কমিটি ও অন্যান্যরা ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেন। তাদের তৎপরতা কারণে গতকাল মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারান ঢাকায় এসেছেন। এবং কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন বলে রিক্রুটিং এজেন্সি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে গতকাল রাতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি টেলিফোন ধরেননি। তবে জনশক্তি রফতানিকারক একাধিক ব্যবসায়ী গতরাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা চাই আগে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হোক। তারা বলছেন, এবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুললে অবশ্যই আমরা কম টাকার মধ্যে (সরকার নির্ধারিত) কর্মীদের পাঠানোর চেষ্টা করব। একই সাথে যারা শ্রমবাজারে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করবে তাদের যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে গতবারের মালয়েশিয়ার জনশক্তি পাঠানোর সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃত্ত বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের কোনো বিষয়ের খবর রাখছি না’। এর আগে বায়রার সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুর আলী সাংবাদিকদের কাছে ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, এবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট হবে না। আর ব্যবসা করলে বায়রার সব সদস্যই করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement