২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশ চীনে পাঠাচ্ছে মাস্ক স্যানিটাইজার : পাচ্ছে টেস্ট কিট

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চীনা রাষ্ট্রদূতের সংবাদ সম্মেলন : নয়া দিগন্ত -

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ চীনকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লাভস দিচ্ছে আর চীন বাংলাদেশকে দিচ্ছে করোনাভাইরাস টেস্টের ৫০০ কিট। গতকাল রোববার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ও চীনের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিনমিং ব্রিফিং করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, চীনের হোবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে এখনো ১৬১ জন বাংলাদেশী আছেন। তাদের আনতে হলে চীন সরকারের অনুমতি লাগবে। করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে গেছে। গত সপ্তাহে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল আগের চেয়ে কম। ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, চীন সরকারের রয়েছে উন্নতমানের টেকনোলজি। তারা রোগীদের উন্নত মানের কেয়ারিং করছে। বাংলাদেশীরা সেখানে ভালো আছেন। চীন সরকার সেখানে প্রতিটি নাগরিককে সহায়তা করছে। বাংলাদেশীরাও বাদ পড়ছেন না। তারা বাংলাদেশীদের খাবারসহ সব ধরনের সহায়তা করছে। ৩৬১ জন বাংলাদেশী নাগরিকের দেশে ফেরত আসার কথা ছিল। এসেছেন ৩১২ জন। আরো ১৭১ জন ফেরত আসতে চান কিন্তু চীন সরকারের অনুমতি ছাড়া তাদের আনা সম্ভব নয়। কারণ খুবই বিপজ্জনক এ ভাইরাসটি যাতে অন্য কোথাও না ছড়াতে পারে সেজন্য চীন সরকার হোবেই প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্রিফিংয়ে বলেন, আবার চীন থেকে তাদের আনতে গেলেও সমস্যা। চীন গেলে বিমানের পাইলট ও অন্যরা (ক্রু) অন্য কোনো দেশে যেতে পারেন না। সে কারণে তারা চীন যেতে চান না।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে উদ্দেশ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি চিঠি লিখেছেন। তা গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রী চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রেস ব্রিফিংয়ে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিঠিতে, করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে নিহত ও অসুস্থদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের সেবা দেয়ার জন্য তিনি চীনা প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ বাংলাদেশ চীনে মাস্ক হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লাভস পাঠাচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত ব্রিফিংয়ে বলেন, বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ বাংলাদেশকে করোনা ভাইরাস টেস্ট করতে ৫০০ কিট দেবে। তিনি বলেন, চীন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে বদ্ধ পরিকর।
সিঙ্গাপুর ছাড়া আর কোথাও কোনো বাংলাদেশী আক্রান্ত হননি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যে ৩১২ জন চীন থেকে ফেরত এসেছেন তারা সবাই ভালো আছেন এবং নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত গেছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে চীনের সাথে বাণিজ্য কমবে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাণিজ্যে সাময়িক সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বড় কোনো সমস্যা হবে না। কারণ করোনা একটি নতুন ধরনের ভাইরাস। এখনো এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।
এ ব্যাপারে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘উহান মূলত ইলেকট্রনিক সিটি। সে কারণে বাংলাদেশের সাথে চীনের বাণিজ্যে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কারণ বাংলাদেশে যেসব মালামাল আসে তা উহানের বাইরে থেকে আসে। চীন ইতোমধ্যেই হোবেই প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। চীনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতোমধ্যে ২৬ হাজার মেডিক্যাল পেশাজীবীকে হোবেই প্রদেশে পাঠানো হয়েছে। হোবেই প্রদেশের বাইরে আমাদের কাছে খুবই ভালো খবর আছে। হোবেইর বাইরে গত ১২ দিন থেকে করোনা কমে আসছে। হোবেই প্রদেশের বাইরে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিনমিং বলেন, ‘আমি অনেক সান্ত¡নাসূচক চিঠি পেয়েছি এবং স্থানীয় সংস্থা ও মানুষের কাছ থেকে অনুদান পাচ্ছি। চীনে নববর্ষের ছুটি দীর্ঘায়িত করা হয়েছিল এবং এখন কাজে ফেরত যাচ্ছেন। আমার বিবেচনায় বাণিজ্যে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।’


আরো সংবাদ



premium cement