২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
টেকনাফে মার্কিন দুই শীর্ষ কর্মকর্তা

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দরকার মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ

-

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন মার্কিন সরকারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিচ ওয়েলস এবং ইউএসএআইডির উপপ্রশাসক বনি গ্লিক। মার্কিন এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনে যান।
এলিচ ওয়েলস গতকাল সকালে টেকনাফের শামলাপুর শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে দুপুরে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: মাহাবুব আলম তালুকদারের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ দরকার। প্রত্যাবাসন অবশ্যই স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইন্দো-প্যাসিফিক সম্মেলনে বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে সব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এলিচ বলেন, প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এসব বিষয় নিয়েও চিন্তা করা দরকার। রোহিঙ্গা সমস্যার যাতে দ্রুত ও টেকসই সমাধান হয় সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কাজ করতে হবে। বৈঠকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: মাহাবুব আলম তালুকদারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে ইউএসএআইডির উপপ্রশাসক বনি গ্লিক সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট বর্তমানে একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। পুরো বিশ্ব এ সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটি মূলত মিয়ানমারের কারণেই হয়েছে। বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মার্কিন সরকার মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে। ট্রাম্প সরকার ইতোমধ্যে মিয়ানমার সরকারের ওপর অর্থনৈতিক নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, চার সামরিক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে।
তিনি বলেন, মার্কিন সরকার চায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসন। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে মার্কিন সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে।
এ সময় তিনি কক্সবাজার সদরের পাওয়ার হাউজ এলাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার ভিকটিম শেল্টার হোম এবং রামুতে ইউএসএআইডির অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া তিনি দরিদ্র নারীদের সাথে স্যানিটেশন বিষয়ে মতবিনিময় করেন এবং স্কুলশিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাটিকা উপভোগ করেন।
পরে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস ও বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছড়া শাপলাপুর গ্রামে কোডেক এনজিওর পরিচালনাধীন সূর্যমুখী কামিনী নামক দু’টি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। এ সময় তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ ও কোডেক এনজিওর বিভিন্ন কর্মকর্তা।
এ দিকে বাংলাদেশের চলমান মানবপাচার পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ইউএসএআইডির তহবিল কমিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপপ্রশাসক বনি গ্লিক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে মানবপাচারের দিক থেকে বাংলাদেশ ‘দুই নম্বর ধাপের নজরদারিতে’ থাকা দেশের তালিকায় রয়েছে। পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকলে ইউএসএআইডির তহবিল কমিয়ে দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement