নৌকাডুবিতে নিখোঁজ অভিবাসীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে ইতালির কোস্টগার্ড
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ জুন ২০২৪, ২২:৪১
চলতি সপ্তাহে ক্যালাব্রিয়ান উপকূল থেকে ১৯৫ কিলোমিটার (১২০ মাইল) দূরে বিপজ্জনক মধ্য ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকাডুবিতে নিখোঁজ কয়েক ডজন অভিবাসন প্রত্যাশীর সন্ধানে সমুদ্র পথে ইতালির কোস্টগার্ড অনুসন্ধান চালানোর পর বৃহিস্পতিবার থেকে আকাশ থেকেও অনুসন্ধান শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধান অভিযানের কমান্ডার বলেছেন, আংশিক ডুবে যাওয়া নৌকাটি এখনও দৃশ্যমান, তবে সেখানে কোনও মৃতদেহ দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার নৌকাডুবির পর একটি মাছ ধরার নৌকা সেখান থেকে ১১ জনকে উদ্ধার করেছিল। যদিও উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে একজন পরে মারা যান। এছাড়া ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা বলছেন, আরও ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বেঁচে যাওয়া আরোহীদের বরাতে ইউএন শরণার্থী সংস্থা এবং জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা বলছে, ইরান, সিরিয়া ও ইরাকের প্রায় ৭৫ জন আরোহী নিয়ে তুরস্ক থেকে রওনা হওয়ার আট দিন পর নৌকার মোটরটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় এটি ইতালির উপকূলে ডুবে যায়। এদের মধ্যে ২০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারের এক মুখপাত্র বলেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা মানসিক ও শারীরিক উভয় ধরনের আঘাতের শিকার হয়েছেন এবং 'খুবই বিভ্রান্ত' রয়েছেন।
গোষ্ঠীটির মানবিক বিষয়ক দায়িত্বে থাকা সিসিলিয়া মোমি বলেছেন, ‘তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ... এবং এখনও জানি না তাদের পরিবারের মধ্যে কে বেঁচে আছেন এবং কে সমুদ্রে মারা গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকের পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। কেউ হারিয়েছেন স্ত্রীকে, কেউ হারিয়েছেন সন্তানকে, আবার হারিয়েছেন স্বামীকে, বন্ধুকে এবং ভাতিজাকে।’
সোমবার আরেকটি ঘটনায় দাতব্য উদ্ধারকারী জাহাজ নাদির সিরিয়া, মিশর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা ৫১ জনকে উদ্ধার করে ল্যাম্পেদুসা বন্দরে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনার শিকার ওই পাচারকারী নৌকার নিচের ডেক থেকে আরও ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। যারা সেখানে শ্বাসরোধে মারা যান।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এই মৃত্যুর ফলে ৮০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছরে মধ্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় তারা মারা গেছেন। সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন মারা গেছেন।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস বলেছে, এই ঘটনাগুলো ‘অভিবাসন এবং আশ্রয়ের ক্ষেত্রে ইউরোপের ব্যর্থ দৃষ্টিভঙ্গির আরেকটি প্রমাণ। যা মানবিক অভ্যর্থনার চেয়ে বাধাদান এবং প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার দেয়।’ সূত্র : ইউএনবি