১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইউক্রেন সম্মেলনের আগে শলৎসের মুখে শঙ্কা

ইউক্রেন সম্মেলনের আগে শলৎসের মুখে শঙ্কা - ছবি : সংগৃহীত

আগামী জুন মাসে সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ঘিরে জার্মান চ্যান্সেলরের তেমন প্রত্যাশা নেই। জার্মানি ও নর্ডিক দেশগুলো ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার অঙ্গীকার করেছে।

আগামী কয়েক মাসে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ আরো জোরালো হবে বলে যখন আশঙ্কা বাড়ছে, তারই মাঝে ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে আগামী জুন মাসে সুইজারল্যান্ডে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রাশিয়া অবশ্য সেই সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়নি। ফলে ‘শান্তির ফর্মুলা’ সম্পর্কে ঐকমত্য সম্ভব হলেও মস্কোর ওপর তা কার্যকর করার জন্য চাপ দেয়া কঠিন হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস আগে-ভাগেই সুইজারল্যান্ডের সম্মেলন সম্পর্কে অবাস্তব প্রত্যাশা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। জার্মানির ‘স্ট্যার্ন’ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সেই সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি সম্পর্কে দরকষাকষি হবে না। সব কিছু ভালোভাবে এগোলে বড়জোর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি সংলাপ ঘটতে পারে বলে শলৎস মনে করেন। আলোচনার অ্যাজেন্ডার মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা, শস্য রফতানি, বন্দি বিনিময় ও পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সংযমের মতো বিষয় থাকছে। ইউক্রেনের জন্য ইউরোপের বাকি দেশগুলো যথেষ্ট অস্ত্র দিচ্ছে না বলে শলৎস কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নর্ডিক দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের সাথে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। নর্ডিক দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের সাথে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।

সোমবার জার্মানি ও নর্ডিক দেশগুলো রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র সাহায্য চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস স্টকহোমে সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীদের সাথে আলোচনার পর বলেন, যতকাল প্রয়োজন ইউক্রেনের সহায়তা করা হবে।

ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতেরি অর্পো খারকিভ শহরের কাছে রাশিয়ার সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পশ্চিমা বিশ্বের দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে খারকিভের দশা মারিউপোলের মতো হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করে রাশিয়া সেই শহরটিকে কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছিল।

রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সোমবার বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যদি যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের হয়ে লড়াই করতে চায়, রাশিয়া সেই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া-র সূত্র অনুযায়ী লাভরভ বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের অবশ্যই ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে নামার অধিকার রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে ন্যাটোর সাথে সরাসরি সঙ্ঘাত সম্পর্কেও সতর্ক করে দিচ্ছে রাশিয়া। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ কোনো এক সময়ে ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশের সৈন্য পাঠানোর সম্ভাবনার উল্লেখ করার পর থেকে রাশিয়া হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের মতে, সে ক্ষেত্রে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

লাভরভ সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন সংক্রান্ত শান্তি আলোচনা সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন। তার মতে, রাশিয়াকে ছাড়াই এমন আলোচনার অর্থ মস্কোকে সরাসরি ‘আল্টিমেটাম’ দেয়া। তিনি এই সম্মেলনকে কোনো স্কুলপড়ুয়ার জন্য শাস্তির সাথে তুলনা করেন। তার মতে, শিশুকে বাইরে রেখে শিক্ষকরা ঘরের মধ্যে যেভাবে শাস্তি স্থির করেন, বিশেষ করে রাশিয়ার সাথে সে রকম আচরণ করা যাবে না।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

 


আরো সংবাদ



premium cement