১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`

নাৎসি যুগের জাতীয় সংগীত গাওয়ায় দর্শকের ‘শাস্তি’

জার্মানির টেনিস খেলোয়াড় আলেকসান্ডা স্ভেরেফ - ছবি : সংগৃহীত

ইউএস ওপেনের ম্যাচের সময় এক দর্শক জার্মানির নাৎসি যুগের জাতীয় সংগীত গাওয়ায় তাকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। জার্মানির টেনিস খেলোয়াড় আলেকসান্ডা স্ভেরেফের অভিযোগের পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের ওই ম্যাচে স্ভেরেফ ইটালির ইয়ানিক সিনার বিরুদ্ধে খেলছিলেন। একপর্যায়ে এক দর্শককে ওই সংগীত গাইতে শুনে তিনি ম্যাচ রেফারির কাছে অভিযোগ করেন।

খেলা শেষে স্ভেরেফ বলেন, ‘তিনি (দর্শক) হিটলারের জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করেন। একজন জার্মান হিসেবে আমি ইতিহাসের ওই সময়টা নিয়ে গর্বিত নই এবং এর জন্য এটা করা ঠিক নয়। তিনি (দর্শক) প্রথম সারিতে ছিলেন, ফলে অনেক মানুষ সেটা শুনেছে। আমি যদি প্রতিক্রিয়া না দেখাতাম, তাহলে তা আমার দিক থেকে খারাপ হতো।’

স্ভেরেফ আরো বলেন, ‘তিনি (দর্শক) শুধুমাত্র হিটলারের সবচেয়ে পরিচিত বাক্যটা বলছিলেন। এটা গ্রহণযোগ্য নয়, এটা অবিশ্বাস্য।’

২৬ বছর বয়সী স্ভেরেফের মা-বাবা রাশিয়ার। তবে ১৯৯০ সালের দিকে তারা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ত্যাগ করেছিলেন।

জার্মানির জাতীয় সংগীত নেয়া হয়েছে ‘জার্মানদের গান’ কবিতা থেকে। এই কবিতায় তিনটি চরণ আছে। প্রথম চরণের প্রথম লাইনটি এমন ‘জার্মানি, সবার ওপরে, বিশ্বের সবকিছুর ওপরে জার্মানি’। এক সময় জাতীয় সংগীতে কবিতার এই অংশটি ব্যবহৃত হতো। নাৎসি আমলেও সেটি বলবৎ ছিল। কিন্তু অতীতের তুলনায় বেশি আক্ষরিক অর্থে গানের কথাগুলো গ্রহণ করেছিল নাৎসি সরকার।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতীয় সংগীতে ওই কবিতার প্রথম চরণ বাদ দিয়ে শেষ চরণটি নেয়া হয়। সুর একই রাখা হয়। শেষ চরণের প্রথম লাইনটি এমন, ‘জার্মান পিতৃভূমির জন্য ঐক্য এবং ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা।’ বর্তমানে এটিই জাতীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ওই দর্শক রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য প্রদর্শন করতে নাৎসি আমলের জাতীয় সংগীত গাইছিলেন কি-না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। কিংবা ওই জাতীয় সংগীতকে যে অনেক আধুনিক জার্মান নেতিবাচক হিসেবে দেখেন, ওই দর্শক সেটা জানতেন কি-না, তা-ও জানা যায়নি। কারণ, জাতীয় সংগীতে যে পরিবর্তন এসেছে সেটি জার্মান ভাষাভাষী দেশগুলোর বাইরের মানুষ যে জানবেনই, বিষয়টা তেমন নয়।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement