২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা নিয়ে জেলেনস্কি যা বললেন

- ছবি : ইন্টারনেট

ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা চালিয়ে ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘হত্যা চেষ্টার’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তিনি বলেন, ‘আমরা মস্কো বা পুতিনের ওপর কোনো হামলা চালাইনি। আমরা আমাদের ভূখণ্ডে লড়াই করছি। আমরা আমাদের গ্রাম ও শহরকে রক্ষা করতে লড়াই করছি।’

ফিনল্যান্ডে সফরে এক সংবাদ সম্মেলেন তিনি এই বক্তব্য দেন। এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, ক্রেমলিনে গত মঙ্গলবার রাতে দুটো ড্রোন দিয়ে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ওই রাতেই ড্রোন দুটো আকাশে ধ্বংস করে দিয়েছে।

হামলার অভিযোগ করে রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, সময় অনুযায়ী তারা এর উপযুক্ত জবাব দিবে।

বুধবার (০৩ মে) দিনের শুরুর দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে তাতে দেখা যায় ক্রেমলিনের আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠছে। যেখানে দেখা যায় একটি বস্তু মস্কোর কেন্দ্রস্থলে বড় একটি সরকারি কমপ্লেক্সের উপর উড়ছে এবং তারপরই বিস্ফোরণ ঘটে।

দ্বিতীয় একটি ভিডিওতে দেখা যায় ওই এলাকার সিনেট বিল্ডিংয়ে ছোট বিস্ফোরণ, সেখানে আগুনও জ্বলতে দেখা গেছে। ওই সময় দু’জন ব্যক্তিকে ওই ভবনের গম্বুজের দিকে উঠতেও দেখা যায়।

ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি ভিন্ন দিক থেকে দুটি ড্রোন এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে দেখতে পারেনি বিবিসি।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ইউক্রেনের হামলার চেষ্টার ঘটনাকে ক্রেমলিন দেখছে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী আক্রমণ ও প্রেসিডেন্টকে হত্যার চেষ্টা’ হিসেবে।

ওই দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক র‍্যাডার অ্যাসেট ব্যবহার করে ড্রোন দুটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

মস্কো জানিয়েছে, হামলার সময় পুতিন ক্রেমলিনে ছিলেন না এবং হামলায় ভবনেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।

রাশিয়ার এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেন বলেছে তাদের ভূখণ্ডে ব্যাপক রুশ আক্রমণের একটি অজুহাত।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা রাশিয়ার দাবিগুলো অনেক সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে।

পুতিন কতটা সুরক্ষিত?
বিশ্বে যেসব নেতারা কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চলাফেরা করেন পুতিন তাদের একজন।

মস্কোতে পুতিনের বিভিন্ন ইভেন্টে যোগ দেয়া বিবিসির রাশিয়াবিষয়ক সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, পুতিনকে যেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হয় তার মধ্যে ড্রোন কিভাবে এতো দূরে ক্রেমলিনের কাছে গিয়ে পৌঁছালো সেটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা। কারণ পুতিন যেখানে যান সেখানে ব্যাপক তল্লাশি ব্যবস্থা থাকে। দীর্ঘ রাস্তাজুড়ে ট্রাফিক আটকে দেয়া হয় এবং রাস্তায় থাকে নিরাপত্তারক্ষীদের কনভয় এবং আকাশপথও বন্ধ থাকে। তবে ক্রেমলিন যা বলছে তা যদি সত্যি হয় তাহলে প্রেসিডেন্টর র‍্যালি আসলেই কতটা সুরক্ষিত থাকে সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠবে।

রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর ছাদে ও এর আশপাশের বেশ কয়েকটি অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট সিস্টেম চিহ্নিত করা হয়েছে। অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট সিস্টেমগুলো সেখানে বসানো হয়েছে কারণ ক্রেমলিন উদ্বিগ্ন, তারা মনে করছে ইউক্রেন বা যেসব দেশ ইউক্রেনকে সমর্থন দিচ্ছে তারা মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বিমান হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে।

এই ড্রোন হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে এখন প্রশ্ন জাগছে যে রাশিয়া কিভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাবে।

কিছু কর্মকর্তা ইতোমধ্যে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়ান জেনারেলরা বারবার সতর্ক করেছেন, রুশ ভূখণ্ডে যে কোনো হামলার কঠোর জবাব দেয়া হবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement