২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানচিত্রে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর

- ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেনের শহরগুলোকে টার্গেট করে রাশিয়া নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের শহরগুলোর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। এতে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছে।

কিয়েভ, ওডেসা ও খারকিভের ভবন ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এক দফায় চালানো সবচেয়ে বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

লাভিভে পাঁচজন নিহত হয়েছে, অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে দনিপ্রো, খেরসন এবং ঝিটুমির।

রাশিয়া বলেছে, হামলায় কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

পারমাণবিক এনার্জি অপারেটর ইউরেটমের মতে, জাপোরিশিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি হামলায় ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্ল্যান্টটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

এক বছর আগে রাশিয়া এটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো প্লান্টটি ডিজেল জেনারেটর দিয়ে চালাতে হচ্ছে। এটি চালানোর জন্য আর মাত্র দশ দিনের মতো জ্বালানি অবশিষ্ট আছে।

জাতিসঙ্ঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএর প্রধান প্ল্যান্টের নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি সতর্কতা জারি করেছেন। রাফায়েল গ্রসি বলেন, ‘বুঝতে পারি না এরকম ঘটনা কেমন করে ঘটতে দেয়া হচ্ছে... ভাগ্য তো সব সময় আমাদের পক্ষে থাকবে না।’

বাখমুতের চারিদিকে লড়াই
ইউক্রেনের বাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতে এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। সেখানে তারা নিয়মিত রুশ বাহিনী এবং ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সেনাদের দিক থেকে তীব্র চাপের মুখে আছে।

বুধবার ওয়াগনার গ্রুপের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন জানান, তার বাহিনী পূর্ব বাখমুতের পুরোটাই দখল করেছে।

‘দৃশ্যমান অনেক প্রমাণের সাথে দাবিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে জানিয়েছে দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডব্লিউ)।

অনেক সামরিক বিশ্লেষক বলছেন, শহরটির কৌশলগত গুরুত্ব সীমিত।

তবে আইএসডব্লিউ বলছে, ‘রাশিয়ান বাহিনী শহরটি দখল করে নিলেও বাখমুতের বাইরে দ্রুতই কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই।’

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত ডিসেম্বরে বলেছিল শহরটি দখল হলে ‘ক্রামাতোরস্ক এবং স্লোভিয়ানস্কের শহুরে এলাকাগুলো রাশিয়ার হুমকির মুখে পড়বে।’

পশ্চিমা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, বাখমুত এবং এর আশেপাশে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।

বসন্তকালে রাশিয়া যে জোরদার হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, বর্তমান আক্রমণকে তারই একটি অংশ বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর নেভাল অ্যানালাইসিসের মাইকেল কফম্যান বলেছেন, এখন পর্যন্ত রাশিয়ার অর্জন ‘হতাশাজনক’৷

তবে রাশিয়া তাদের অবস্থান ব্যাপক শক্তিশালী করায় পাল্টা আক্রমণ চালানোর জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় দুর্বলতা খুঁজে পেতে ইউক্রেনকে বেশ বেগ পেতে হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

দক্ষিণে স্থিতিশীল সম্মুখভাগ
দেশটির দক্ষিণে খেরসনকে ঘিরে কামান হামলা অব্যাহত রয়েছে। দনিপ্রো নদীর বাম তীর বা পূর্ব দিক থেকে নভেম্বরে রাশিয়ান সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়।

মার্কিন সরবরাহ করা হিমার্স মাল্টিপল রকেট লঞ্চার দিয়ে সজ্জিত ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা রাশিয়ার অবস্থানকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

ইউক্রেন বলেছে, বুধবার তাদের বাহিনী খেরসনের পশ্চিমে রাশিয়ান গোলাবারুদের একটি ডিপো ধ্বংস করেছে।

তবে শহরের চারিদিকে কম সময়ে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ রাশিয়া এই অঞ্চলে তার সৈন্য এবং সরঞ্জামগুলোর জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষা তৈরি করেছে।

তবে শহরটিকে ঘিরে রাশিয়ার বাহিনী নিজেদের সৈন্য ও সরঞ্জামের জন্য যে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয় তৈরি করেছে, তা খুব কম সময়ের মধ্যে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই ভাবছেন অনেক বিশ্লেষক।

এক বছরেরও বেশি লড়াই
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ভোর হবার আগে ইউক্রেনের শহরগুলোতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হয়েছিল।

রাশিয়ার স্থল সেনারা দ্রুত এগোতে থাকে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইউক্রেনের বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়।

তারা কিয়েভের শহরতলির দিকে অগ্রসর হয় এবং সুমির আশেপাশে দেশের উত্তর-পূর্বের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

রাশিয়ান বাহিনী খারকিভে বোমা বর্ষণ করে এবং পূর্ব ও দক্ষিণে খেরসন পর্যন্ত অঞ্চল দখলের পর বন্দর শহর মারিউপোলকে ঘিরে ফেলে।

কিন্তু প্রায় সবখানেই তারা ইউক্রেনীয়দের শক্তিশালী প্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং খাবার, পানি এবং গোলাবারুদের ঘাটতিসহ মনোবল ভেঙে পড়া রাশিয়ান সৈন্যদের নিয়ে গুরুতর লজিস্টিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।

পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অস্ত্র যেমন এনলো অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক সিস্টেম দ্রুত মোতায়েন করে ইউক্রেনীয় বাহিনী, যা রাশিয়ার এগোনো রুখে দিতে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়।

ইউক্রেন আরো পশ্চিমা অস্ত্র পাওয়ার পর অক্টোবরের দিকে যুদ্ধের নাটকীয় পরিবর্তন হয়। কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ায় রাশিয়া উত্তর দিক থেকে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়।

খারকিভ থেকে রাশিয়াকে পিছিয়ে দেয়া এবং খেরসনে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ইউক্রেন প্রথম বড় কোন সাফল্য পায়।

আক্রমণের এক বছর পর খেরসন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আপাতত পূর্বদিকে রাশিয়ার অগ্রগতি অনেকাংশে রুখে দিয়েছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
কুবিতে আল্টিমেটামের পর ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলাল শিক্ষক সমিতি সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহতের খবরে ঈশ্বরগঞ্জে শোক দুর্যোগে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কেন বাংলাদেশে? জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত

সকল