১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠাতে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি

- ছবি - ইন্টারনেট

জার্মানির রামস্টেইনে শুক্রবার ন্যাটো মিত্রদের ইউক্রেন ডিফেন্স কন্ট্রাক্ট গ্রুপের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগে ইউক্রেন বলেছে, পশ্চিমকে অবশ্যই অস্ত্র সরবরাহের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। কারণ রুশ বাহিনীর আক্রমণের মুখে তার সৈন্যরা বর্তমানে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে আছে।

সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কয়েক ডজন বেসামরিক লোক নিহত হয়। শনিবার নিপ্রো শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলোনস্কি সোমবার বলেছেন, সপ্তাহের শেষে রামস্টেইনে জোটের যে নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, ওই বৈঠকে আমাদের অংশীদারদের পক্ষ থেকে কিছু মৌলিক সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছি।

এদিকে ব্রিটেন কিয়েভে ১৪টি ‘চ্যালেঞ্জার-২’ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করবে বলে ঘোষণা দেয়ার পর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রশংসা করে বলেছেন, আমাদের ঠিক এটাই দরকার ছিল।

চ্যালেঞ্জার-২ হলো ব্রিটেনের প্রধান যুদ্ধট্যাঙ্ক। ১৪টি ট্যাঙ্কের স্কোয়াড্রন সামরিক সহায়তার একটি বড় প্যাকেজের অংশ। প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে এএস ৯০ স্ব-চালিত কামান, বুলডগ সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদ, বেশ কিছু গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম, স্টারস্ট্রিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং মাঝারি-পাল্লার এয়ার ডিফেন্স মিসাইল।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস সোমবার আইন প্রণেতাদের বলেন, এটি এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে দেয়া ব্রিটেনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তির প্যাকেজ।

ওয়ালেস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ২০২৩ সালে বর্ধিত এই চালান ইউক্রেনের প্রশিক্ষণের উন্নতি এবং কূটনৈতিক সংকল্পকে আরো শক্তিশালী করার পাশাপাশি, রাশিয়ার দুর্বল নেতৃত্ব এবং দুর্বলভাবে সজ্জিত সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সফল হতে সাহায্য করবে।

তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার ইউক্রেনে ব্রিটেনের ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ব্রিটেন যতই ট্যাঙ্ক সরবরাহ করুক, আমাদের বিশেষ সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং এই ট্যাঙ্কগুলো বাকিগুলোর মতোই পুড়ে যাবে। যেভাবেই হোক, এই বিশেষ সামরিক অভিযানের লক্ষ্য অর্জিত হবেই।

ব্রিটেনের এই সামরিক প্যাকেজ জোটের অন্যান্য মিত্রদের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। ইউক্রেনকে জার্মানির তৈরি ‘লিওপার্ড-২’ ট্যাঙ্কগুলো পুনরায় পাঠানোর জন্য অন্যান্য দেশের অনুরোধের ফলে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছে জার্মানি।

পোল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ডও চায় ইউক্রেনে লেপার্ড ট্যাঙ্ক পাঠানো হোক। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি জার্মানিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার বার্লিনে জার্মান বিরোধী খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে মোরাউইকি বলেন, ইউক্রেনের পরাজয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে পারে। অতএব কিয়েভের জন্য সমর্থন অবরুদ্ধ করার কিংবা বিলম্বিত করার কোনো কারণ নেই। আমি ইউক্রেনের কাছে সমস্ত ধরণের অস্ত্র সরবরাহের জন্য জার্মান সরকারের চূড়ান্ত পদক্ষেপের আহ্বান জানাই।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠানোর জন্য বুধবার তার সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। মিশেল ইইউ আইন প্রণেতাদের বলেছেন, এখনই সময়, তাদের জরুরিভাবে আরো সরঞ্জামের প্রয়োজন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক সরবরাহের পক্ষে।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বুধবার বলেছেন, তিনি একটি ঘোষণা আশা করেছিলেন, ইউক্রেনে আরো প্রধান যুদ্ধট্যাঙ্ক পাঠানো হবে।

তবে জার্মানি ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে মার্ডার সাঁজোয়া কর্মী বাহক, একটি প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল ব্যাটারি, হাউইটজার, বিমান বিধ্বংসী বন্দুক এবং আইরিস-টি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে।

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement

সকল