২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খেরসনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করলেন জেলেনস্কি

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, প্রত্যেক খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে। - ছবি : বিবিসি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, খেরসন থেকে রাশিয়ান বাহিনী পিছু হটার সময় তাদের সংঘটিত ৪০০-এর বেশি যুদ্ধাপরাধ উন্মোচন করেছে তদন্তকারীরা। বেসামরিক নাগরিক ও সৈন্যদের লাশ পাওয়া গেছে।

বিবিসি এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করার বিষয়টি অস্বীকার করছে মস্কো।

এদিকে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ খেরসনে কারফিউ জারি করেছে এবং খেরসনের ভেতরে ও বাইরে যাতায়াতে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে।

জেলেনস্কি তার রাতের ভিডিও ভাষণে বলেন, ‘খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ান সেনাবাহিনী আমাদের দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো একই নৃশংসতার চিহ্ন রেখে গেছে, যেসব জায়গায় তারা প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিল। আমরা প্রত্যেক খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনব কোনো সন্দেহ নেই।’

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বুচা, ইজিয়ুম এবং মারিউপোলসহ বিভিন্ন এলাকায় গণকবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেন এই নৃশংসতার পিছনে রুশ সেনাদের দায়ী করছে।

জাতিসঙ্ঘের একটি কমিশন গত মাসে বলেছে যে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং আক্রমণের শুরুর দিকে রাশিয়ার বাহিনী বেশিরভাগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী।

ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার দখলে থাকা একমাত্র আঞ্চলিক রাজধানী ছিল খেরসন।

সেপ্টেম্বরে ক্রেমলিনে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরো তিনটি অঞ্চলসহ খেরসনকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার ইউক্রেনের সেনারা খেরসন শহর মুক্ত করে। ইউক্রেনের পতাকা বহনকারী জনতার ভিড় কিয়েভের সৈন্যদের আলিঙ্গন ও চুম্বন দিয়ে স্বাগত জানায়।

প্রায় ৩০ হাজার রাশিয়ান দখলদার সৈন্য পিছু হঠার পর কর্মকর্তারা খেরসনের প্রশাসন পরিচালনায় ফিরে এসেছেন।

ইউক্রেনীয়রা এটিকে একটি বড় জাতীয় বিজয় এবং ক্রেমলিনের জন্য বড় অপমান হিসেবে দেখছে। যাকে তারা মনে করছে মার্চ মাসে কিয়েভের শহরতলী থেকে রাশিয়ার প্রত্যাহারের সমতুল্য। কিছু রাশিয়ান সৈন্য ছদ্মবেশে থেকে যেতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার দখলদারিত্বের সময় তাদের সাথে আঁতাতকারীদের এখন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ান সৈন্য এবং ভাড়াটে সৈন্যদের আটক করা হয়েছে, যাদের এই অঞ্চলে ফেলে যাওয়া হয়েছে এবং নাশকতাকারীদের দমনেও কাজ চলছে।

তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী খেরসনে ইন্টারনেট এবং টেলিভিশন সংযোগ পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঠিক করা হবে।

আশঙ্কা রয়েছে যে এখন দিনিপ্রো নদীর বিপরীত তীরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা রাশিয়ান সৈন্যরা আবার গোলাবর্ষণ শুরু করতে পারে। খেরসনের কর্মকর্তারা ১৩ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত দিনিপ্রো নদীতে পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করেন।

রাশিয়ার ফেলে যাওয়া বিস্ফোরক এই অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং যারা ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাদের বাড়িঘরে মাইন বা কোনো ফাঁদ আছে কি না তা পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বাড়ি ফিরে না আসার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

খেরসনের গভর্নর ইয়ারোস্লাভ ইয়ানুশেভিচ নাগরিকদের জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলতে বলেছেন এবং সোমবার শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে দূরে থাকতে বলেন কারণ সামরিক বাহিনী সেখানে মাইন চিহ্নিত করে তা নিষ্ক্রিয় করার জন্য কাজ করবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement