২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চেরনোবিলের মতো বিপর্যয়ের আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ

ইউক্রেনে গুতেরেস, এরদোয়ান ও জেলেনস্কির বৈঠক - ছবি : সংগৃহীত

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে জাপোরিঝজিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে লড়াই নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে এক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। ইউক্রেনের লভিভ শহরে এ বৈঠকের সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান উপস্থিত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘জাপোরিঝজিয়ায় যেকোনো সম্ভাব্য ক্ষতিসাধন হবে আত্মঘাতী।’

গুতেরেসে উদ্বেগের সাথে ঐক্যমত পোষণ করেন এরদোগান। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে আরেকটি চেরনোবিলের মতো বিপর্যয়ের আশঙ্কা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

জাপোরিঝজিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওই কেন্দ্রের কাছের এলাকাগুলোতে তীব্র লড়াই হচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। কিয়েভ ও মস্কো এজন্য একে অপরকে দায়ী করছে।

ভলোদিমিরি জেলেনস্কি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়ার ইচ্ছাকৃত হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।

মস্কোকে ওই পারমাণবিক কেন্দ্রটিকে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করার জন্য অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

লভিভের বৈঠকে তিন নেতাই ওই এলাকাকে বেসামরিক জোনে পরিণত করার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

ওদিকে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়া উপত্যকায় বেলবেক সামরিক বিমানবন্দরের কাছে বেশ-কয়েকটি বড় ধরণের বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

তবে সেবাস্তপোলের রাশিয়ার মনোনীত গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভ বিস্ফোরণে কারো আহত হওয়া বা কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। যদিও বিস্ফোরণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

রাশিয়ার নির্দেশনায় ইউক্রেনের যেসব স্টাফ এখনো পারমাণবিক কেন্দ্রটিতে কাজ করছেন, তারা ওই কেন্দ্র নিয়ে একটি বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তারা বলেছেন, গত দু’ সপ্তাহে এটি ধারাবাহিকভাবে সামরিক হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

টেলিগ্রামে একটি পোস্টে ইউক্রেনের একজন স্টাফ লিখেছেন যে 'যা হচ্ছে তা ভয়ঙ্কর এবং কমনসেন্স ও নৈতিকতাবিরোধী'।

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের একজন সরকারি কর্মকর্তা টুইট করে জানিয়েছেন যে রাশিয়ার কর্মকর্তারা দ্রুত পারমাণবিক কেন্দ্র ত্যাগ করেছেন এবং অপ্রত্যাশিতভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ইউক্রেনের সেন্টার ফর ইনফরমেশন সিকিউরিটির টুইটে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেনের গোয়েন্দারা বিশ্বাস করেন যে রাশিয়া ওই কেন্দ্র নিয়ে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।’

‘তারা গোলাবর্ষণ জোরদার করার কারণে বিপদ হতে পারে এবং ইউরোপের বৃহত্তম এই পারমাণবিক কেন্দ্রে সত্যিকার অর্থেই সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে।’

তবে এ দাবির সত্যতা যাচাই করা হয়নি।

এসব টুইটের আগে জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্ব একটি পারমাণবিক বিপর্যয়ের কাছে এবং এ জন্য তিনি রাশিয়ার 'দায়িত্বহীন পদক্ষেপ আর পারমাণবিক ব্লাকমেইলিংকে' দায়ী করেন।

তবে এসব উদ্বেগ সত্ত্বেও ওই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চেরনোবিল কেন্দ্রের চেয়ে এটি অনেক বেশি নিরাপদ।

এর আগে খবর বের হয়েছিল যে এরদোগান জেলেনস্কির সাথে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দিতে পারেন।

তবে জেলেনস্কির সাথে বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, তার বিশ্বাস -আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান হবে।

জেলেনস্কি অবশ্য বলেছেন যে মস্কো শান্তির জন্য প্রস্তুত এরদোগানের কাছে এটি শুনে তিনি 'খুবই বিস্মিত'।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রতি কোনো বিশ্বাস নেই। রাশিয়াকে শিগগিরই তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।’

তবে বৈঠকে নেতারা তুরস্ক ও জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, সেটি সম্প্রসারণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

বৃহস্পতিবার কিয়েভ জানিয়েছে, ওই চুক্তির পর ২৫তম জাহাজটি বন্দর ছেড়ে গেছে।

ওদিকে খারকিভ শহরে গভর্নর জানিয়েছেন যে সেখানে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে সতেরো জন নিহত হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

 


আরো সংবাদ



premium cement