১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরের প্রধান কার্যালয়ে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা

- ছবি - সংগৃহীত

রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়ার সেবাস্তপুলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার নৌবহরের প্রধান কার্যালয়ে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

হামলার কারণে পূর্ব পরিকল্পিত নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব বাতিল করতে হয়েছে।

হামলায় বিস্ফোরণে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কৃষ্ণ সাগরের ধারে ক্রাইমিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী সেবাস্তপুলের গভর্নর মিখাইল রাযভোযায়েভ বলেছেন, ‘আজ সকালে আমাদের নৌবাহিনী দিবস পণ্ড করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন। প্রাথমিক তথ্য বলছে এটি একটি ড্রোন ছিল। যে পাঁচজন আহত হয়েছেন তারা সবাই প্রধান কার্যালয়ের কর্মী।’

তিনি বলছেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নৌবাহিনী দিবসের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে, রয়টার্স লিখেছে। আহতরা কোন স্তরের কর্মী সেটি তিনি নিশ্চিত করেননি।

রয়টার্স বলছে, ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস এই হামলার তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন রাযভোযায়েভ।

ক্রাইমিয়ার সিনেটর ওলগা কভিতিদি এটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের।

নৌবহরের প্রধান কার্যালয়ে ড্রোন হামলার অভিযোগ এমন সময়ে হলো যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার নিজ শহর সেইন্ট পিটার্সবার্গে গিয়ে নৌবাহিনী দিবস উদযাপনের আয়োজনে অংশ নেন এবং তদারকি করেন।

নৌবাহিনী দিবস রাশিয়ার একটি বার্ষিক ছুটির দিন যাতে দেশটির নৌবাহিনী কুচকাওয়াজ করে এবং এই দিনে নাবিকদের সম্মান জানানো হয়।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেন থেকে ক্রাইমিয়াকে বিভক্ত করে। যার কারণে ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহে মস্কোর ভূমিকাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমের সাথে দেশটির বড় ধরনের বিরোধ তৈরি করে।

ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান বলছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের একজন মুখপাত্র, নাটালিয়া গুমেনিউক, হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।

তবে তিনি বলেছেন যে রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করার জন্য ইউক্রেনের অভ্যন্তরে রাশিয়ান সামরিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করে অভিযান পরিচালনা করছে এবং ইউক্রেন ক্রাইমিয়াকে নিজেদের অংশ হিসাবে বিবেচনা করেছে।

‘অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করার জন্য ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং তাতে কাজে লাগবে এমন অস্ত্র ব্যাবহার করছে। আমাদের লক্ষ্য রাশিয়ান ফেডারেশনের সামরিক ব্যবস্থাপনা। আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের ভূখণ্ডে আঘাত করি না। ক্রাইমিয়া ইউক্রেনের অংশ,’ বলেন তিনি।

মিখাইল রাযভোযায়েভের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা কিছু ছবিতে একটি সামরিক ভবনের প্রবেশপথে রক্তের দাগ এবং ভাঙা কাঁচ দেখা যাচ্ছে।

রাশিয়ার সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান লিখেছে ড্রোন হামলার অবস্থানটি একটি ক্যাফেটেরিয়ার প্রবেশদ্বার। নৌ বহরের প্রধান কার্যালয়ের ভেতরের আঙ্গিনা থেকে ৪০ থেকে ৫০ মিটার দূরে সেটির অবস্থান।

পাঁচ মাসব্যাপী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলাকালীন কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার নৌবহরের জন্য এটি সর্বশেষ ধাক্কা। এপ্রিলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়ে এই নৌবহরের মসকোভা ক্রুজার নামের একটি ফ্ল্যাগশিপ ডুবিয়ে দেয়।

কর্তৃপক্ষ তখন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকদিন সময় নিয়েছিল।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement