২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সমুদ্রে বার বার ভেসে আসছে জুতা পরা কাটা পা!

সমুদ্রে বার বার ভেসে আসছে জুতা পরা কাটা পা! - ছবি : সংগৃহীত

১৮৮৭ সাল। ভ্যাঙ্কুভারের সমুদ্রসৈকতে হেঁটে বেড়ানোর সময় ঝোঁপের মধ্যে মানুষের কাটা পা দেখতে পান এক নারী। বুটের ভিতর যেন সযত্নে রাখা ছিল ওই পা। সেই থেকেই ওই জায়গার নাম হয়ে যায় লেগ ইন বুট স্কোয়ার। সেই ঘটনায় তাৎক্ষণিক চাঞ্চল্য তৈরি হলেও সেভাবে মানুষের মনে সাড়া ফেলেনি।

১৯১৪ সালে আবারো একই ঘটনা ঘটে। সমুদ্রসৈকত থেকে ফের বুটের ভিতর মানুষের পা উদ্ধার হয়। এভাবে একের পর এক জুতসহ মানুষের পা উদ্ধার হয় ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সমুদ্রসৈকত থেকে। পর পর একইভাবে এতগুলো মানুষের পা উদ্ধার স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

শুধু ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২১টি এরকম পা উদ্ধার হয়েছে। শেষ বার উদ্ধার হয়েছিল ওয়াশিংটনের জেটি আইল্যান্ড থেকে। এই উদ্ধার হওয়া দেহাংশগুলো কাদের, কিছু ক্ষেত্রে তার খোঁজ মিললেও বেশিরভাগেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে উদ্ধার হওয়া মানুষের কাটা পা’টি যেমন অ্যান্টোনিও নেইল নামে এক ব্যক্তির ছিল, যিনি ২০১৬ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

২০১৮ সালে পশ্চিম ভ্যাঙ্কুভারের সমুদ্রসৈকতে নাইকির জুতোর মধ্যে ভেসে এসেছিল পা। নীল রঙের মোজাও পরা ছিল। এটি কোন ব্যক্তির পা ছিল তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরীক্ষার পর শুধু জানা গিয়েছিল, ৫০ বছর বয়স ছিল তার।

২০০৭ সালে আবার ওয়াশিংটন থেকে ওই সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে আসা এক কিশোরী একটি অ্যাডিডাসের জুতা পড়ে থাকতে দেখেন। সেটি হাতে নিয়েই আঁতকে ওঠেন তিনি। ভিতরে তখনো রয়ে গিয়েছে মানুষের কাটা পা। ওই পা কার তা জানা যায়নি কিন্তু ২০০৩ সালে অ্যাডিডাস সংস্থা ভারতে ওই জুতা প্রস্তুত করত এবং ভারতেই এই জুতা পাওয়া যেত। তাই ওই ব্যক্তি ভারতীয় বলেই মনে করা হয়েছিল।

তেমনই আবার জানা যায়, ২০০৮ সালে নাইকির জুতার মধ্যে উদ্ধার হওয়া পা ২১ বছরের এক কিশোরের ছিল। যিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তবে বেশিরভাগেরই খোঁজ মেলেনি।

বছরের পর বছর ধরে রহস্যজনকভাবে সমুদ্রসৈকতে জুতার মধ্যে মানুষের কাটা পা ভেসে আসায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল মানুষের মনে। ওই সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা ঝিনুক কিংবা নানা রকম সামুদ্রিক প্রাণীর খোঁজ করতেন না, তাদের সমস্ত ইন্দ্রিয় বরং সজাগ থাকত ভেসে আসা জুতা খুঁজে পেতে।

বহু দিন ধরেই এই রহস্যের কোনো উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রথম প্রথম তদন্তকারীদের অনুমান ছিল, এটা কোনো ধারাবাহিক খুনির কাজ। খুন করে পা কেটে এভাবেই হয়তো দেহাংশ সমুদ্রে ভাসিয়ে দিত। স্রোতের সাথে ভেসে যা পৌঁছে যেত ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সমুদ্রসৈকতে।

পরবর্তীকালে বহু তদন্তের পর তদন্তকারীরা জানান, বিভিন্ন সময়ে সমুদ্রে ঘটা দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যার কারণে লাশগুলো সমুদ্রেই পড়ে থাকে। সমুদ্রের নোনা পানিতে সেগুলোতে পচন ধরে যায়। কিন্তু পায়ের যে অংশ বুটের ভিতর ঢাকা থাকে সেগুলোতে নোনা পানি সহজে ঢুকতে পারে না।

পানি ঢুকতে পারে না বলে বুটের ভিতরে সেই অংশটুকুতে সহজে পচন ধরে না। তার উপর বুট পানিতে ভেসে থাকায় ভিতরে পানি ঢোকার সম্ভাবনা কমে যায়। সে কারণেই হয়তো শুধুমাত্র বুটের মধ্যে সযত্নে রয়ে যাওয়া পায়ের অংশ ভেসে চলে আসে সমুদ্রসৈকতে। দেহের অন্য কোনো অংশ কখনো এভাবে উদ্ধার হয়নি।

এর পরও একটি প্রশ্ন রয়ে যায়। কেন ব্রিটিশ কলম্বিয়াতেই বার বার ভেসে আসে এগুলো? যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইনস্টিটিউট অব ওসিয়ান সায়েন্সেসের সমুদ্রবিদ রিচার্ড থম্পসন জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণভাবেই সমুদ্র স্রোতের কারণে হয়ে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement
বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী

সকল