২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জার্মানিতেও বাড়ছে ডেল্টা সংক্রমণ

জার্মানিতেও বাড়ছে ডেল্টা সংক্রমণ। - ছবি : সংগৃহীত

সংক্রমণের হার কমলেও জার্মানিতে করোনাভাইরাসের ছোঁয়াচে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের অনুপাত বেড়ে চলেছে। আগস্টের মধ্যেই সবার জন্য করোনা টিকার আশ্বাস দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান।

জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার কমে এসেও প্রবল ছোঁয়াচে ডেল্টা সংস্করণ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার প্রায় ১৩ শতাংশে নেমে এলেও মৃত্যুর হার সামান্য বেড়েছে। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত মানুষদের মধ্যে ডেল্টা সংস্করণের অনুপাতও বাড়ছে। ৩১ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত জিনোম পরীক্ষায় ছয় দশমিক দুই শতাংশ ক্ষেত্রে মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ভেরিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। তার আগের সপ্তাহে সেই হার ছিল তিন দশমিক সাত শতাংশ। এমন গতি বজায় থাকলে ব্রিটেনের মতো জার্মানিতেও ডেল্টা সংস্করণ আধিপত্য বিস্তার করবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সে ক্ষেত্রে চলতি বছরের হেমন্তকালে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ আটকানো সম্ভব হবে না। তার আগেই আরো বেশি মানুষ টিকার দুটি ডোজ পেয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন জার্মানির এসপিডি দলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কার্ল লাউটারবাখ।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এক গবেষণা অনুযায়ী গ্রীষ্মে করোনাভাইরাসের ডেল্টা সংস্করণ তেমন জোরালো থাকে না। তাপমাত্রা কমে গেলে সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। তা সত্ত্বেও এই ভেরিয়েন্ট যথেষ্ট ছোঁয়াচে এবং সংক্রমণ ঘটলে রোগীর শারীরিক অবস্থার গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। ব্রিটেনে শিশুদের মধ্যে এই সংস্করণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে লাউটারবাখ শিশুদেরও টিকা দেবার পক্ষে সওয়াল করেন।

এদিকে জার্মানিতে টিকাদান কর্মসূচি যথেষ্ট গতি পাচ্ছে না বলে সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। টিকা সরবরাহে ঘাটতির কারণে অনেক মানুষ আবেদন করতে পারছেন না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান অবশ্য লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চলতি সপ্তাহেই জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষকে টিকার অন্তত প্রথম ডোজ দেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। জুলাইয়ের শেষে অথবা আগস্ট মাসের শুরুতে সব ইচ্ছুক মানুষ টিকা পেয়ে যাবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বায়োনটেক ও মডার্না কোম্পানির আরো বেশি টিকা সরবরাহ করার কথা। সেপ্টেম্বর মাস থেকে টিকার চাহিদা কমতে শুরু করবে বলে স্পান মনে করেন। বয়স্ক মানুষদের জন্য বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অস্পষ্টতা সত্ত্বেও সরকার টিকাদান কেন্দ্রগুলো চালু রাখবে, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান।

এদিকে জার্মানির কিয়োরভ্যাক কোম্পানির টিকাকে ঘিরে করোনা সংকটের শুরু থেকেই প্রবল প্রত্যাশা থাকলেও সেই উদ্যোগ একের পর এক ব্যর্থতার মুখ দেখছে। দীর্ঘ বিলম্বের পর পরীক্ষায় প্রস্তাবিত টিকার কার্যকারিতা ছিল মাত্র ৪৭ শতাংশ। ফলে কিয়োরভ্যাক কোম্পানির টাকা অনুমোদনের সম্ভাবনা আরো কমে গেল। জার্মানির বায়োনটেকসহ বিশ্বের অন্যান্য অনেক কোম্পানি করোনা টিকার বাজারে আধিপত্য বিস্তার করলেও কিয়োরভ্যাক এখনো অনুমোদনের পর্যায়েই পৌঁছতে পারেনি। দুর্বলতা কাটিয়ে টিকাটিকে যথেষ্ট কার্যকর করতে পারলে বছরের প্রথমার্ধের শেষেই এই কোম্পানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুমোদনের আশা করছিল। সাম্প্রতিক ধাক্কার ফলে সেই প্রক্রিয়ায় আরো বিলম্ব ঘটবে বলে জানিয়েছে কিয়োরভ্যাক। তবে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের আশা ছাড়ছে না জার্মানির ট্যুবিঙেন শহরের এই কোম্পানি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement