১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লিজবনে ঈদের জামাত হবে খোলা মাঠে, বাংলাদেশী মুসলিমরা খুশি

লিজবনে ঈদের জামাত হবে খোলা মাঠে, বাংলাদেশী মুসলিমরা খুশি - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেখতে দেখতে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস শেষ প্রান্তে। আর মাত্র কয়েক দিন। এরপর বিশ্ব মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন, ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে মুসলমাদেনর দ্বারে কড়া নাড়তে শুরু করেছে ঈদুল ফিতরের ধ্বণি। যদিও করোনা মহামারীর কারণে আগের মতো এখন আর ঈদের আমেজ নেই। একই দুর্যোগের মধ্যে গত বছরও ঈদ কেটেছে।

তবে এবারের ঈদে খুশির খবর আছে ইউরোপের দেশ পর্তুগালের মুসলিমদের জন্য। গত এক বছর করোনার কারণে দেশটির রাজধানী লিজবনের ঐতিহাসিক প্রাসা দ্য মার্তিম মনিজ পার্কে ঈদুল জামাত আয়োজনের অনুমতি মেলেনি। কিন্তু এবার পর্তুগালের করোনা পরিস্থিতি আশানুরূপ উন্নতি হওয়ায় কর্তৃপক্ষ খোলা মাঠে ঈদের জামাত আয়োজনের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যবিধির কঠোর নির্দেশনা থাকছে আগের মতোই। তবে খোলা মাঠে ঈদের নামাজের জামাত করার অনুমতি পেয়ে লিজবনে বসকারী বাংলাদেশীসহ স্থানীয় মুসলিমরা বেশ খুশি।

এ বিষয়ে স্থানীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সভাপতি রানা তসলিম উদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা ২০১১ সাল থেকে এই পার্কে ধারাবাহিকভাবে বছরে দু’টি ঈদের জামাত আয়োজন করে আসছি। করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ঈদের জামাত আয়োজন করার অনুমতি মেলেনি। এ বছর আমরা পর্তুগালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরিকল্পনা তাদের কাছে পেশ করলে তাতে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে ঈদের জামাতের অনুমতি দিয়েছে।

পর্তুগাল প্রবাসী এই বাংলদেশী লিজবনে বসবাসকারী সকল বাংলাদেশী মুসলিমকে ঈদের জমাতে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা প্রত্যেকেই ঘর থেকে অজু করে, জায়নামাজ সাথে নিয়ে ঈদগাহে আসবেন। মাঠে সবাই দেড় থেকে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখবেন। কোনো অবস্থাতেই ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি করা যাবে না।

লিজবনের বায়তুল মোকররম মসজিদের প্রধান ইমাম ও খতিব অধ্যাপক মুফতি আবু সাঈদ ঈদের জামাতের অনুমতি পেয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন, বছরের এ দিনটি পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক অভূতপূর্ব মিলন হয়। সবাই একসাথে জড়ো হয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। তিনি বলেন, ইউরোপের এই দেশে কয়েক হাজার মুসলমান একসাথে খোলা আকাশের নিচে নামাজ আদায়ের অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ যাবে না।

তিনি দোয়া করে বলেন, ‘আল্লাহ যেন এই মাঠকে কেয়ামত পর্যন্ত সেজদার জন্য, ইসলামের জন্য ও মুসলমানদের জন্য কবুল করে নেয়। একইসাথে আল্লাহ তায়ালার আছে আমাদের আবেদন, লিজবন কর্তৃপক্ষকে হেদায়তের নুর দিয়ে আলোকিত করে দেয়ার জন্য। পর্তুগালকে যেন আল্লাহ ইসলামের জন্য কবুল করে নেয়।’

লিজবনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুকিতুর রহমান চৌধুরী বলেন, ঈদের জামাতের অনুমতি পেয়ে যে আনন্দ লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। করোনা মহামারীর কারণে গত বছর আমরা অনুমতি পাইনি। তখন মনটা খারাপ হলেও বিশ্বাস ছিল সুদিন আসবেই। এ মহামারী কেটে যাবে। আবারো নতুন দিনের সূর্যোদয় হবে পৃথিবীতে। এমন প্রত্যাশা ও আল্লাহর কাছে আমাদের দোয়া সব সময়।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ এক বছর পর আবারো আমরা একসাথে মিলিত হব। এতে লিজবনে বসবাসকারী পুরো বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটি সত্যিই আনন্দিত। তিনি দোয়া করে বলেন, এই অনুমতি পেতে যারা চেষ্টা করেছেন ও ঈদের জামাত আয়োজনে যারা শ্রম দিবেন তাদের সবাইকে আল্লাহ যেন উত্তম বিনিময় দান করেন।

উল্লেখ্য, পর্তুগালের রাজধানী লিজবনসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে এবারে ঈদুল ফিতরের নামাজ খোলা মাঠে ও মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এ দিকে পর্তুগালের বিভিন্ন ঈদগাহে ও মসজিদে ঈদের নামাজের জন্য সময়সূচি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের পরিচালিত বায়তুল মোকাররম মসজিদ, লিজবন ও মার্তিম মনিজ জামে মসজিদের উদ্যোগে ঈদুল ফিতরের একমাত্র জামাতটি অনুষ্ঠিত হবে ঈদের দিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টায়। তা ছাড়া লিজবন সেন্ট্রাল মসজিদে প্রথম জামাত স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ও দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা ৩০ অনুষ্ঠিত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement