২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা রাশিয়ার

- সংগৃহীত

করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারে বাজিমাত করে ফেলল রাশিয়া! মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদিত ভ্যাকসিনটি প্রথম প্রয়োগ করা হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের মেয়ের শরীরেই।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন রাশিয়া বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাস টিকা উদ্ভাবক হিসাবে নাম নথিভুক্ত করেছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দু মাস ধরে মানুষের ওপর পরীক্ষা করার পর সেটির ব্যবহারিক প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় দীর্ঘদিন ধরেই ভ্যাকসিন বাজারে আনার প্রস্তুতি চালাচ্ছিল রাশিয়া। একদিকে যখন তুমুল উত্তেজনা অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন নিয়ে, তখনই মস্কো জানিয়ে দেয় যে- রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট (Gamaleya Research Institute) ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই করোনার টিকা তৈরি করে ফেলেছে। রুশ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ওলেগ গ্রিদনেভ জানিয়েছিলেন, করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পরীক্ষাটির শেষধাপ চলছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হলেই বাজারে আসবে রাশিয়ার করোনা টিকা।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে- মঙ্গলবার পুতিন ঘোষণা করেন,‘আজ সকালে পৃথিবীর প্রথম করোনা টিকা রেজিস্টার করেছে রাশিয়া।’

পাশাপাশি দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কোকে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ আপডেট দিতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি আত্মবিশ্বাসী, প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এই ভ্যাকসিনের ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। এই ভ্যাকসিন প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত সমস্ত কর্মীদেরও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুতিন।

পুতিনের বিশ্বাস, খুব শিগগিরই গণহারে এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করে ফেলতে পারবে রাশিয়া।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এর আগে নানাধরনের সন্দেহ প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠিত নিয়মকানুন মেনে চলার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কো ঘোষণা করেছেন যে, এই ভ্যাকসিন “খুবই কার্যকর এবং নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে” এবং মি. পুতিন বলেছেন এই ভ্যাকসিন “প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে”।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী আরো বলেছেন যে- কয়েক হাজার মানুষের ওপর এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল অব্যাহত থাকবে।

মি. পুতিন বলেছেন তিনি এই ভ্যাকসিনের গণ উৎপাদন চান। তিনি বলেন তার এক কন্যা এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করেছেন এবং শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার পর তিনি পুরো সুস্থ বোধ করেছেন।

বিভিন্ন দেশে একাধিক টিকার ট্রায়াল এই মুহূর্তে চলছে। এ মাসেই আরও আগের দিকে আমেরিকার সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি বলেছিলেন ভ্যাকসিন কারো ওপর প্রয়োগ করার আগে রাশিয়া “আসলেই তা যথাযথভাবে পরীক্ষা করে দেখবে” বলে তিনি আশা করেন।

রুশ প্রেসিডেন্টের নির্দেশ- অন্তত ৬০ শতাংশ রুশ নাগরিকের শরীরে করোনা টিকা দিতে হবে। রাশিয়ার পরিকল্পনা এই বছর অন্তত চার কোটি টিকা বাজারে আনার। এই মুহূর্তে রুশ প্রশাসন চাইছে, রিস্ক ওয়ার্কার বলয়ে যারা রয়েছেন অর্থাৎ স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের এ মাসেই টীকাকরণ করতে। অক্টোবর থেকে টিকাকরণ হবে গণহারে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রতিটি পরীক্ষায় ও প্রতিটি ধাপে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে তাদের ভ্যাকসিন। ১৮ জুন মাত্র ৩৮ জন ভলেন্টিয়ার নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে রাশিয়া। এর পরের ধাপের পরীক্ষা চলে ১৫-২০ জুলাই।

গোটা বিশ্ব সাগ্রহে অপেক্ষমান, দেখতে চাইছে, রাশিয়া কত তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন বাজারজাত করে, কী ভাবে এই ভ্যাকসিন বিশ্বে ছড়িয়ে দেয় এই দেশ।

অবশ্য রাশিয়া যে পরিমাণ দ্রুততার সাথে এই টিকা তৈরির কাজ চালাচ্ছিল তাতে পশ্চিমা দেশগুলোর বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন দ্রুত টিকা বের করার জন্য কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে রুশ গবেষকরা সম্ভবত পরীক্ষা পদ্ধতিতে কাটছাঁট করতে পারেন বলে তাদের আশংকা।


আরো সংবাদ



premium cement