১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

৫২ অভিবাসীকে গ্রহণ করতে অস্বীকার ইতালি ও মাল্টার

- ছবি : সংগৃহীত

ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার হওয়া ৫২ জন অভিবাসীকে বহনকারী একটি লেবাননের মালবাহী জাহাজকে ইতালি ও মাল্টায় প্রবেশের করতে দেয়া হয়নি। জাহাজের নোংরা গবাদিপশুর খাঁচায় আটকা পড়া লোকদের থাকার জন্য জাহাজের ক্যাপ্টেনকে বাধ্য করা হচ্ছে।

গবাদিপশু বহনকারী জাহাজটির ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ সাবান টেলিফোনে আল জাজিরাকে জানান, আমি তাদেরকে খাবার ও পানি দিতে পারছি না। তিনি জানান, গত শুক্রবারে একটি ডুবন্ত ডিঙ্গি নৌকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় যারা লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছিল।

তিনি বলেন, “এই জাহাজ প্রাণীদের জন্য, এটা মানুষের জন্য নয়। মাল্টা, ইতালি, এমনকি স্পেনকে এই মানুষদের গ্রহণ করতে হবে। আমি কোনো সরকারী সংস্থা নই, এর জন্য কোম্পানী আর বেশি ক্ষতি সহ্য করতে পারবে না।”

ক্যাপ্টেন শাবান জানান, তালিয়ার বেশিরভাগ যাত্রী সোমালিয়া ও জিবুতি থেকে এসেছেন এবং লিবিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্র পাড়ি দিয়ে ও সমুদ্রে পাঁচ থেকে অনেকের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

রোববার মাল্টার সশস্ত্র বাহিনী তালিয়া জাহাজটি থেকে দু'জনকে মেডিকেল নেওয়ার অনুমতি দিলেও অন্যদের নিতে অস্বীকার করে।

আটকা পড়া অভিবাসীদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী ইয়াকুবা বারি বলেছেন যে তাকে লিবিয়ার বনি ওয়ালিদ শহরের একটি বেসরকারী কারাগারে ১৪ মাসের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল, তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টায় তাকে বেশ নির্যাতন করা হয়েছে।

ব্যারি আল জাজিরাকে জানায়, আমার বাবা মারা গেছেন এবং আমার মা বৃদ্ধ নারী যার কোনো কিছুই নেই। আমি ভেবেছিলাম যে তারা আমাকে মেরে ফেলবে কারণ আমি মুক্তিপণ দিতে পারিনি।

মুক্তিপণ আদায় না করতে না পেরে অবশেষে তাকে ছেড়ে দেয়, একটি ট্রকের ভেতরে করে উপকূলে নিয়ে বুধবার রাতে লিবিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ডিঙ্গি নৌকায় উঠিয়ে দেয়া হয়।

তারপর শুক্রবার সকালের দিকে ডিঙ্গি নৌকার ইঞ্জিনটি বন্ধ হয়ে যায় এবং নৌকাটি ডুবে যেতে শুরু করে।

জার্মান মানবিক এনজিও সি ওয়াচের একটি বিমান ইতালির লাম্পেডুসা দ্বীপ থেকে ডিঙ্গি নৌকাটিকে ৩০ নটিক্যাল মাইল (৫৫ কিমি) দূরে শনাক্ত করে। সেখান থেকে স্থানীয় কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আশেপাশের সকল জাহাজকে এসওএস বার্তা পাঠায়।

এসময় লিবিয়াতে পশুসম্পদ খালাস করে স্পেনের দিকে যাওয়া জাহাজ তালিয়া মাল্টার সাথে সমন্বয় করে তার দিক পরিবর্তন করে তাদের উদ্ধার করতে যায়।

ক্যাপ্টেন সাবান বলেন, পরে মাল্টা জাহাজটিকে ইতালির নিরাপদ বন্দর লাম্পেডুসাতে যেতে বললে ইতালি তার পানি সীমায় প্রবেশ করতে জাহাজটিকে বাধা দেয়। উল্টো ইতালি জাহাজটিকে মাল্টা যেতে বলে।

তিনি বলেন, শনিবার আমি মাল্টায় পৌঁছার পরে, আমি তাদের ঢুকতে বাধ্য করলাম কারণ (একটি ঝড় আসছিল) এবং আমি খুবই বিপদের মধ্যে ছিলাম। সুতরাং তারা আমাকে আসতে দিয়েছে, তবে বলেছে যখন আবহাওয়া ভাল হবে তখন আমাকে মাল্টার পানিসীমা ছেড়ে চলে যেতে হবে।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে অভিবাসীদের জাহাজের উপরের ডেক থেকে গবাদি পশুদের জন্য সংরক্ষিত জায়গায় চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল যা পণ্য খালাসের পর খুবই নোংরা অবস্থায় রয়েছে।

ল্যাম্পেডুসার নিকটে সমুদ্র থেকে উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের কোন দেশে নেয়া হবে তা নিয়ে ইটালি ও মাল্টা প্রায়শই এক দেশ অন্য দেশকে দেখিয়ে দেয়।

করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর থেকেই উভয় দেশ জরুরী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে তাদের বন্দরকে "অনিরাপদ" ঘোষণা করে, লিবিয়া থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের মেনে নিতে ক্রমশ অনীহা প্রকাশ করে চলেছে।

তারা অভিবাসীদের করোনা পরীক্ষার জন্য তীর থেকে দূরে সমুদ্রে "কোয়ারেন্টাইন জাহাজ" ভাড়া নিয়েছেন। আল জাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement