২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনাভাইরাস : বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্কদের ফেলেই পালাচ্ছে স্পেনের কর্মীরা

- সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যার হিসেবে চীনকে ছাড়িয়েছে স্পেন। মোট মৃত্যুর হিসেবে এখন পর্যন্ত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইউরোপের এই দেশটিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে মারা গেছে ৭৩৮ জন। এ নিয়ে স্পেনে কোভিড-১৯ রোগে মোট মৃতের সংখ্যা ৩,৬৪৭।

করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনে তিন হাজার ২৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ইতালিতে মারা গেছে সাত হাজার ৫০৩ জন। স্পেনে সংক্রমণের হার বেড়ছে পাঁচগুণ এবং বর্তমানে প্রায় ২৭ হাজার মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে রাজধানী মাদ্রিদে, তবে উত্তর-পূর্বের কাতালোনিয়া অঞ্চলে দ্রুতবেগে বাড়ছে সংক্রমণের হার। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী কারমেন কালভো করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার। আরো দুই সপ্তাহের জন্য বাড়িয়ে ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত স্পেনে জরুরি অবস্থা বাড়ানো হবে কি-না, তা নির্ধারণ করতে ভোট দেবেন দেশটির সংসদ সদস্যরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি কেনাকাটা বা ওষুধ কেনা এবং কাজের জন্য ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে - এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজারের বেশি মানুষের, আর এখন পর্যন্ত এক লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ আরোগ্য লাভ করেছে।

এই ভাইরাসকে 'মানবতার জন্য হুমকি' হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসঙ্ঘ। বিশ্বের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করার লক্ষ্যে দুইশো কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল তৈরির আহ্বান জানিয়ে বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, "বিশ্বের সব দেশের একতাবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নেয়া খবুই জরুরি। দেশগুলোর বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম এই সঙ্কট মোকাবেলায় যথেষ্ট হবে না।"

স্পেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি কী?
বুধবার পর্যন্ত স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা গেছেন ৭৩৮ জন, আর করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে সাত হাজার ৯৭৩ জন। একদিনে স্পেনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর সংখ্যা এটিই। দেশটিতে এখন করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৭ হাজার ৬১০ জন। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত রয়েছে কাতালোনিয়ায়। তবে সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত হয়েছে রাজধানী মাদ্রিদ, সেখানে ১৪ হাজার ৫৯৭ জনের মধ্যে সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মাদ্রিদ শহরে মৃতদের সৎকার করার প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার জানায় যে, তারা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের লাশ সংগ্রহ করা বন্ধ করে দিয়েছে। শহরের প্রধান আইস রিঙ্ক বা বরফের মধ্যে স্কেটিং করার জায়গা ব্যবহার করা হবে অস্থায়ী মর্গ হিসেবে। নাগরিকদের সহায়তা করতে যেসব সেনাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, তারা সোমবার কিছু বৃদ্ধ নিবাসে গিয়ে দেখতে পান যে সেখানে প্রবীণদের ফেলে রেখেই চলে গেছে নিবাসের কর্মীরা। সেখানে কয়েকজনকে মৃত অবস্থায়ও পান তারা।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, নিবাসের কয়েকজন বাসিন্দার মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তাদের ফেলে চলে যান কয়েকটি নিবাসের কর্মীরা। সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement