২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আটেই আশির ভার শরীরে, প্রোজেরিয়ায় মৃত্যু শিশুর

- সংগৃহীত

চুলে পাক ধরেছিল। ‘বার্ধক্যে’ এক-এক করে বিকল হয়ে গিয়েছিল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ। শেষে ‘বয়সের ভারে’ মাত্র আট বছর বয়সেই মৃত্যু হল ইউক্রেনের এক শিশুকন্যার। জিনগত রোগ ‘প্রোজেরিয়া’য় আক্রান্ত ছিল মেয়েটি। তবে এই অসুখেও এত অল্প বয়সে মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। চিকিৎসা বিজ্ঞানের হিসেব বলছে, ইউক্রেনে মারা যাওয়া এই শিশুকন্যা অ্যানা স্যাকাইডন বিশ্বের কনিষ্ঠতম মানুষ, যে প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেল।

শিশুকন্যা অ্যানা গত মাসে আট বছর বয়সে পা দিয়েছিল। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই বয়সেই অ্যানার শরীর এসে গিয়েছিল বৃদ্ধের ছাপ। ঠিক যেমনটা ৮০ বছর বয়সে কোনো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার শরীরে হয়ে থাকে। পাশাপাশি একাধিক শরীরিক সমস্যাও দেখা দিয়েছিল অ্যানার। আট বছর বয়সেও তার ওজন ছিল মাত্র সাড়ে সাত কেজি। অ্যানার মা ইভানা মেয়েকে সুস্থ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন।

ইউক্রেনের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান টিমোফি নাগরোনি বলেন, ‘ইভানা প্রতিদিন শুধু এই আশাতেই বাঁচতেন, চিকিৎসকেরা এসে জানাবেন, তারা রোগ ধরতে ভুল করেছেন। অ্যানার প্রোজেরিয়া হয়নি।’

শিশুটির এক চিকিৎসক বলেন, ‘হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিন্ড্রোম হয়েছিল অ্যানার। এতে হাড় স্বাভাবিক ভাবে বাড়ে। ফলে শরীরের বৃদ্ধি স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্রুত গতিতে বুড়িয়ে যায়। এক বছর বয়সই তার দশ বছরের শামিল। এ ধরণের রোগীদের মৃত্যু হয় সাধারণত স্ট্রোকে। অ্যানার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। একাধিক স্ট্রোক। হাত-পায়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত (পঙ্গু) হয়ে গিয়েছিল।’

তিনি আরো জানান, মাত্র ১১ মাস বয়সেই বড়দের মতো হাঁটতে পারতো অ্যানা (কারণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বৃদ্ধিতে তখন সে দশ বছর বয়সীদের মতো)। কিন্তু আলোতে যেতে ভয় পেত। তাই বাড়ির বাইরে যেতে পারতো না অ্যানা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি দুই কোটি মানুষের মধ্যে এক জনের এই রোগ হয়। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে ১৬০ জন প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত।


আরো সংবাদ



premium cement