২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাশিয়ায় পরমাণু বিস্ফোরণ নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার আভাস!

রাশিয়ায় পরমাণু বিস্ফোরণ নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার আভাস! - ছবি : সংগ্রহ

রাশিয়ার সুদূর উত্তরের নয়োনস্কা টেস্ট রেঞ্জের সামরিক ঘাঁটিতে পারমাণবিক বিস্ফোরণের খবর প্রথমে চাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও সেটি দিন কয়েকের মধ্যেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে একটি রহস্যজনক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে দু’জন নিহত হওয়ার খবর প্রথম আসে। তারপর ওই অঞ্চলে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া যায়।

অবশেষে, ১৩ আগস্ট বিস্ফোরণের পাঁচ দিন পরে ক্রেমলিন বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে এবং নিশ্চিত করে যে, প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের অস্ত্রাগারে একটি নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা করার সময় পাঁচজন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং কমপক্ষে আরো দু’জন মারা গিয়েছেন। ওই দিন সকালে পুতিনের মুখপাত্র একটি সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুর্ঘটনাবশত এটি ঘটেছে।’

গত বছর রুশ পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে পুতিন এই ক্ষেপণাস্ত্রের কথা উল্লেখ করেছিলেন। ওই ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র যেকোনো দূরত্বে আঘাত হানতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যে দুর্ঘটনায় পাঁচজন প্রকৌশলীর প্রাণ গেছে সেখানে হয়তো ভিন্ন কোনো সমরাস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এর একটি হতে পারে জাহাজবিধ্বংসী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন। এটি হাইপারসনিক, শব্দের চেয়ে আট গুণ বেশি গতিতে চলতে পারে। অথবা হতে পারে নতুন ধরনের দূরপাল্লার এক ড্রোন, পসাইডন। এটি সাগরের নিচ দিয়ে যায় এবং সাবমেরিন থেকে পরিচালনা করা যায়।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট নামে একটি গবেষণা সংস্থার মার্ক গ্যালিওটি বলেন, বুরেভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্র শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে অনেক সংশয় আছে। তিনি জানান, এর আগে রাশিয়ার আরেকটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বুলাভার অনেক পরীক্ষাও ব্যর্থ হয়েছিল।

তবে জিরকন এবং পসাইডন আরো অনেক অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। পানির নিচ দিয়ে চলে যে পসাইডন ড্রোন, সেটির প্রোটোটাইপ এখনই আছে। তবে এটি এরকম মারাত্মক এবং ব্যাপক বিধ্বংসী সমরাস্ত্র যে, কেবল সর্বাত্মক পারমাণবিক যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধে এটির ব্যবহার অবাস্তব।

রাশিয়ার সরকারি সংবাদপত্র রসিস্কায়া গেজেটা গত মাসে বুরেভেস্টনিককে একটি প্রতিহিংসার মারণাস্ত্র বলে উল্লেখ করেছিল। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনো যুদ্ধে রাশিয়ার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র শত্রু দেশে আঘাত হানার পর এই বুরেভেস্টনিক লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে অবশিষ্ট সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম।

সম্প্রতি মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি আইএনএফ ভেঙে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন করে মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। গ্যালিওটি বলছেন, রাশিয়াও একই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র অর্জন করতে চাইছে। কারণ তারাও চীনকে নিয়ে ভয়ে আছে।

সূত্র : টাইম ম্যাগাজিন


আরো সংবাদ



premium cement