২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রথমবার অস্কাকারের নিয়মিত শাখায় বাংলাদেশের ছবি

-

অস্কার। চলচ্চিত্র দুনিয়ার অন্যতম সেরা সম্মাননার নাম। ১৯২৯ সালের ১৬ মে হলিউডের রুজভেল্ট হোটেলের ব্লজম রুমে প্রথম এই পুরস্কার দেয়া হয়। একাডেমি অব মোশন পিকচার্স এ- সাইন্স (এএমপিএএস) নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান এই পুরস্কারের প্রবর্তক। উদ্দেশ্য শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞানের সমন্বয় চলচ্চিত্র নামের যে মাধ্যম গড়ে উঠেছে তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রবর্তন করবে এবং সংশ্লিষ্টদের উৎসাহী করে তুলা। এর ফলেই জন্ম হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র পুরস্কারের। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো ছবি এই পুরস্কারের নিয়মিত বিভাগে প্রতিযোগিতা করার জন্য মনোনিত হয়নি। প্রথমবারের মতো গাজী রাকায়েত এই বিভাগে বাংলাদেশে নাম পরিচিত করিয়েছেন তার ‘দ্য গ্রেভ’ সিনেমার মাধ্যমে।
অস্কার ৯৪তম আসরের জন্য যে তালিকা প্রণয়ন করেছে সেখানে ‘দ্য গ্রেভ’-এর নাম আছে। ফলে সেরা সিনেমা থেকে শুরু করে পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, সিনেমাটোগ্রাফিসহ অন্য যেকোনো বিভাগে মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে দ্য গ্রেভ সিনেমাটির।
৯৪তম অস্কারে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগ ছাড়া সব বিভাগে মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতা যে সিনেমাগুলোর আছে, সেসব সিনেমার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে অস্কার কর্তৃপক্ষ। সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে দেশের সিনেমা দ্য গ্রেভ। বাংলায় সিনেমাটির নাম ‘গোর’। গাজী রাকায়েত পরিচালিত সিনেমাটি বাংলাদেশের সিনেমা হলেও এটি অস্কারের নিয়মিত শাখাগুলোয় প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পেয়েছে। এটি দেশের সিনেমার ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। ২০ জানুয়ারি অস্কার কর্তৃপক্ষ এ তালিকা প্রকাশ করে।
অস্কার তাদের প্রেস নোটে জানিয়েছে, এবার একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স (অস্কার) অ্যাওয়ার্ডসের জন্য ২৭৬টি সিনেমা নির্বাচন করেছে। সিনেমাগুলোর মধ্যে ভোট দেবেন অস্কার মনোনয়ন কমিটির সদস্যরা। ২৭ জানুয়ারি শুরু হবে ভোটিং, চলবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মনোনয়ন ঘোষণা করা হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। এ বিষয়ে গাজী রাকায়েত বলেন, ‘আমি শুক্রবার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এটি দেশের সিনেমার জন্য নতুন একটি যাত্রা। আমরা মনোনয়ন পাব কিনা জানি না। তবে নিশ্চিতভাবে এটি আমাদের দেশের পরিচালকদের জন্য অনন্য এক পাওয়া বলে মনে করি।’
অস্কার মনোনয়ন নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা পরিষ্কার করে এর আগে রাকায়েত বলেন, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। আমাদের সিনেমা কিন্তু বিদেশী সিনেমা (বিশেষ বিভাগ) হিসেবে অস্কারের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার যে বিভাগটি রয়েছে সেখানে মনোনয়ন পায়নি। দ্য গ্রেভ নিয়মিত বিভাগে অন্যান্য আমেরিকান ও ইংরেজি ভাষার সিনেমা যেভাবে অস্কারের সব বিভাগে মনোনয়ন পায়, সেসব সিনেমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এটা সত্যি অনেক বড় পাওয়া।’ সরকারি অনুদান পাওয়া গোর বা দ্য গ্রেভ সিনেমাটি দেশের প্রথম বাইলিঙ্গুয়াল সিনেমা। বাংলা ও ইংরেজিতে সিনেমাটির দৃশ্যায়ন হয়েছে এবং দু’টি সিনেমা ভিন্নভাবে সেন্সর পেয়েছে।
তাহলে দেশের সিনেমাটি কিভাবে আমেরিকান সিনেমা হিসেবে অস্কারের সব শাখায় মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যাতা রাখে? অস্কার কমিটি তাদের প্রেস নোটে জানিয়েছে, অস্কারের সব শাখায় মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য যেকোনো দেশের পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা কমপক্ষে ছয়টি মার্কিন মেট্রোপলিটান এলাকার মধ্যে একটিতে বাণিজ্যিকভাবে মোশন পিকচার থিয়েটারে প্রদর্শিত হতে হবে। মেট্রোপলিটান এলাকাগুলো হলো লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি, নিউইয়র্ক শহর, উপসাগরীয় এলাকা, শিকাগো, ইলিনয়, মিয়ামি, ফ্লোরিডা, আটলান্টা ও জর্জিয়া। ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ ভেনুর যেকোনো একটিতে টানা সাত দিন প্রদর্শন করতে হবে সিনেমা। দ্য গ্রেভ সিনেমাটি এ প্রক্রিয়ায় অর্জন করেছে অস্কারের সব শাখায় মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতা। ‘রিমাইন্ডার লিস্ট অব প্রডাকশন এলিজিবল ফর দ্য নাইনটি ফোর্থ একাডেমি অ্যাওয়ার্ড’ তালিকায় জায়গা করে নেয়ায় সেরা সিনেমা থেকে শুরু করে পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, সিনেমাটোগ্রাফিসহ অন্য যেকোনো বিভাগে মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে দ্য গ্রেভ সিনেমাটির।
তবে এরই মধ্যে অস্কারের ১০টি বিভাগের শর্ট লিস্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম, ডকুমেন্টারি ফিচার, ডকুমেন্টারি শর্ট সাবজেক্ট, মেকআপ ও হেয়ারস্টাইলিং, অরিজিনাল স্কোর, অরিজিনাল সং, অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্ম, লাইভ অ্যাকশন শর্ট ফিল্ম, সাউন্ড ও ভিজুয়াল ইফেক্টস।
এসব বিভাগে নেই দ্য গ্রেভ সিনেমার মনোনয়ন। এ বছর বাংলাদেশ থেকে অস্কারের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতা করার জন্য পাঠানো হয়েছিল রেহানা মরিয়ম নূর। সিনেমাটি শর্ট লিস্টে আসতে পারেনি।


আরো সংবাদ



premium cement