১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওটিটির জন্য গাইডলাইন তৈরি করছে বিটিআরসি

-

সামাজিক মাধ্যমে আয়ের অন্যতম একটি উৎস এখন ওভার দ্য টপ (ওটিটি)। সিনেমা, নাটক, ওয়েব সিরিজ এখন এই মাধ্যমে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। অন্য যেকোনো মাধ্যমের তুলনায় এখানে আয়টা হয় বেশ স্বচ্ছভাবে। তাই অন্য দেশের মতো ওটিটি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় এখন। তবে এই প্ল্যাটফর্মে ‘অনৈতিক ও আপত্তিকর’ ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশনের অভিযোগ উঠে প্রায়ই। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনাও হেয়েছে। তারাই ধারাবাহিকতায় এসব নিয়ন্ত্রণে উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি গাইডলাইন তৈরি করছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। আগামী ১ নভেম্বর সেই খসড়া গাইডলাইন আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। এই খসড়া গাইডলাইনের মধ্যে যোগাযোগনির্ভর অ্যাপস নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আদায়ের বিষয়টি থাকছে বলে জানা গেছে। দেশে অসংখ্য বিদেশী ওটিটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম যেমনÑ নেটফ্লিক্স, আইফ্লিক্স, হইচই, অ্যামাজন প্রাইম জি-ফাইভ ইত্যাদি রয়েছে। আর দেশীগুলোর মধ্যে আছে বঙ্গ, বিঞ্জ, চরকি, বাংলাফ্লেক্স, বায়োস্কোপ, সিনেম্যাটিক, আড্ডাটাইমস, টফি ইত্যাদি। দেশীগুলোতে কী ধরনের কনটেন্ট আছে তা নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি করা এবং সেসব থেকে রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনাও থাকছে খসড়াতে।
নীতিমালা তৈরির জন্য বিটিআরসি গঠিত আট সদস্যের কমিটিতে বিটিআরসির কমিশনার (এলএল) আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনকে আহ্বায়ক এবং উপপরিচালক (আইন) পদবির একজনকে সদস্য সচিব করা হয়। এ ছাড়া সদস্য করা হয়েছে ছয়জনকে। সদস্যরা হলেনÑ বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস), পরিচালক (আইন), পরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস), তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি (উপসচিবের নিচে নয়), অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের একজন প্রতিনিধি (উপপরিচালকের নিচে নয়) এবং বিটিআরসির একজন আইন পরামর্শক।
এই কমিটি ওটিটি নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন তদারকি এবং শনাক্তকরণের বিষয়ে কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ, ওটিটি নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন রোধ বিষয়ে কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ, ওটিটি নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজস্ব আদায় বিষয়ে কার্যপদ্ধতি নির্ধারণে কাজ করছে। একই সাথে খসড়া গাইডলাইন তৈরির কাজও করছে কমিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বলেন, আগামী ১ নভেম্বর কমপ্লায়েন্স জানানোর জন্য কোর্টে উপস্থাপন করা হবে। এখন খসড়া তৈরির কাজ চলছে। চূড়ান্ত খসড়া কোর্টে উপস্থাপন করা হবে। তিনি জানান, খসড়া তৈরির আগে পার্শ্ববর্তীদের ভারত, সিঙ্গাপুর যে গাইডলাইন তৈরি করেছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, খসড়া চূড়ান্ত করার আগে আমরা ব্রডকাস্ট করার নিয়মটি আমরা দেখব। এ ছাড়া সংযোগ নিয়ন্ত্রণ তথা নেটওয়ার্কে কিভাবে চলে সেটাও দেখা হবে। স্টেক হোল্ডারদের সাথে বৈঠক করে তাদের মতামতও শোনা হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মতামতও জানতে চাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
২০২০ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশী ওয়েব সিরিজের বিতর্কিত অংশ বাদ দিতে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। তবে সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে একই বছরের ১২ জুলাই হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি। তবে পথ বিনোদননির্ভর ও অন্যান্য অ্যাপসে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন তদারকি এবং শনাক্তকরণের বিষয়ে কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ সহজ হলেও যোগাযোগ নির্ভর অ্যাপে সহজ হবে না বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। ভাইবার, মেসেঞ্জার, ইমো, উইচ্যাট, লাইনের মতো যোগাযোগনির্ভর ওটিটি সার্ভিস এ দেশ থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ আয় করলেও সরকারের প্রাপ্তি শূন্য। বিটিআরসি গঠিত কমিটি এসব বিষয়ে দেখভাল, খসড়া নীতিমালা তৈরি ইত্যাদি কাজ করবে বলে জানা গেছে। দেশের আইপি-টিএসপি অপারেটরগুলো পরিচালিত দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের (আলাপ, ব্রিলিয়ান্ট, আম্বার আইটি ইত্যাদি) জন্য একটি গাইডলাইন করছে। দেশীয় ওটিটির ট্যারিফ অনুমোদনের জন্য বর্তমানে সেটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে রয়েছে। সেই গাইডলাইনের ‘জেনারেল প্রভিশন’ অংশের ৭ দশমিক ৫ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছেÑ বিটিআরসি একই পরিপ্রেক্ষিতে (দেশী ওটিটি সেবার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন) বিদেশী ওটিটি পরিষেবার জন্য নির্দেশনা বা নির্দেশিকাও জারি করবে।


আরো সংবাদ



premium cement