২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শিল্পীদের স্টেজ শো করেই বেঁচে থাকতে হয় : সালমা

শিল্পীদের স্টেজ শো করেই বেঁচে থাকতে হয় : সালমা -

কুষ্টিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তার সালমা ‘ক্লোজআপ ওয়ান’ তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন। এরপর কয়েকটি লোকগান গেয়ে তিনি দারুণ পরিচিতি পান। সম্প্রতি সালমা মিউজিক থেকে প্রকাশ হয়েছে তার গাওয়া দ্বৈত গান ‘মনের কথা কই’। দ্বৈত গান ছাড়াও একাধিক গানের কাজ নিয়ে ব্যস্ত তিনি। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির
করোনা সব কিছুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ব্যক্তিগতভাবে আপনি কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন?
সালমা : করোনা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করেছে। আত্মবিশ্বাস নষ্ট করেছে। এর প্রভাবটা অন্য সবার মতো আমার উপরও পড়েছে নেতিবাচকভাবে। যে মেয়ে নিয়মিত গান চর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকত সে যখন ঘরবন্দী জীবন কাটায়, একই রুটিনে দিনের পর দিন থাকতে হয় তখন কেমন লাগবে আপনিই বলুন। তবে এখন বন্দিজীবন থেকে বের হয়ে আসার অনুভূতি কেমন, তা কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি। অডিওতে গিয়ে নতুন গান রেকর্ড করার আনন্দটা জীবন ফিরে পাওয়ার মতো। অন্তত আমার মতো যারা শিল্পী তারা এবং মিউজিশিয়ান এটা স্বীকার করবেন। ২০১৯ সালে বেশ কিছু স্টেজ শো করব বলে পরিকল্পনা করেছিলাম। ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাস প্রায় সব ছুটির দিন স্টেজ শোর জন্য বরাদ্দ ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সব বাতিল করতে হয়েছে।
স্টেজ শো থাকলে শিল্পীদের বেশির ভাগ সময় বাইরে কাটাতে হয়। সে হিসেবে পরিবারকে সময় দেয়ার জন্য তো আশীর্বাদ ছিল?
সালমা : এটা ঠিক যে, করোনার সময় পরিবারের অনেক সময় ব্যয় করতে পেরেছি। সাগর (স্বামী সানাউল্লাহ নূর) আর আমি সংসারের কাজগুলো ভাগ করে করেছি। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকেই বাসায় কাজের লোক খুব প্রয়োজন ছাড়া রাখা হতো না। যতটা সম্ভব নিজেদের কাজ নিজেরাই করতাম। এই দিক থেকে করোনাকে আশীর্বাদই বলা যায়। মহামারী এখন অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। আল্লাহ চান তো দ্রুত সময়ের মধ্যে পৃথিবী থেকে দূর হবে করোনা। তবে লকডাউনের দিনগুলো থেকে আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি তা কাজে লাগবে সারা জীবন।
আপনার নতুন গান থেকে শ্রোতাদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সালমা : নাফির সাথে আমার গাওয়া গানটি প্রকাশ হয়েছে মাত্র কয়েক দিন আগে। এরই মধ্যে গানটি নিয়ে শ্রোতাদের বেশ আগ্রহ দেখছি। অনেকেই মোবাইল ফোন আর ফেসবুকে গানটির বেশ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গানটির ভিডিও কমেন্ট বক্সে বেশির ভাগ শ্রোতার প্রশংসা পাচ্ছি। শ্রোতাদের মনোমুগ্ধকর মন্তব্য পড়ে বোঝা যাচ্ছে, গানটি সফলতা পাবে আরো। রাসেল কবিরের লেখা গানটির সুর করেছেন পলাশ লোহ এবং সঙ্গীতায়োজন করেছেন এইচ আর লিটন।
আজকাল একক গানের চেয়ে দ্বৈত গানে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এর কারণ কী?
সালমা : বিশেষ কোনো কারণ নেই। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে, আমার গাওয়া পরপর কয়েকটি দ্বৈত গান শ্রোতারা পেয়েছেন। দর্শক-শ্রোতা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের চাওয়ার কারণে গানগুলো করা হয়েছে। এরই মধ্যে নাট্যাভিনেতা আ খ ম হাসান, নোলক বাবু, নাফিসহ কয়েকটি দ্বৈত গান করেছি। নোলক বাবুর সাথে ১৩ বছর পর গাইলাম।
অনেক দিন মঞ্চে গান করছেন না। মঞ্চে ফেরা নিয়ে কিছু ভাবছেন?
সালমা : করোনার প্রাদুর্ভাব কমলেও স্টেজ শো আসলে সেভাবে শুরু হয়নি। হাতেগোনা কিছু গানের আয়োজন হচ্ছে ইনডোরে। খোলা আকাশের নিচে গান গাওয়ার আনন্দই আলাদা। সেখানে সরাসরি শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। আমরা যারা পেশাদার শিল্পী, তাদের স্টেজ শো করেই বেঁচে থাকতে হয়। অডিও-ভিডিও প্রকাশ করে যে টাকা পাওয়া যায়, তা খুবই কম। অ্যালবাম বা একক গান প্রকাশ করে সচ্ছলভাবে বেঁচে থাকা কঠিন। শুধু আমি নই, দেশের বেশির ভাগ শিল্পীর জন্য এটা সত্য। মনেপ্রাণে চাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করোনার এই দুঃসময় যেন কেটে যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা স্টেজ শোর মৌসুম। করোনার প্রাদুর্ভাব কমলে প্রাণ খুলে আবার মঞ্চে ফিরতে চাই।
শুনেছি, টিভি আয়োজনে নিয়মিত হচ্ছেন-
সালমা : হ্যাঁ। কিছুদিন আগে বিটিভির জন্য ‘আমার যত গান’ শিরোনামের একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে গান করেছি। রেকর্ড করা এ গানের অনুষ্ঠানটিতে আমার গাওয়া শ্রোতাপ্রিয় ছয়টি গান স্থান পেয়েছে।
লোকগানের শিল্পী হিসেবে আপনি পরিচিত। ইদানীং ভিন্ন ধাঁচের গানও করছেন। কারণ কী?
সালমা : দীর্ঘদিন ধরে ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের চর্চা করে আসছি। আধুনিক গানের চর্চাও থেমে নেই। তাহলে ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার গান গাওয়ায় ক্ষতি কি? সব ধরনের গান গাইতে আমার ভালো লাগে।
আপনার ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে নতুন পরিকল্পনা-
সালমা : করোনা আমাদের নতুন অনেক কিছু শিখিয়েছে। সে কারণেই নিজের ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে নতুন করে ভাবছি। নিজের গানের পাশাপাশি এসএস মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে আরো কিছু কাজ করতে চাই। এ ছাড়া চ্যানেলে ইসলামিক কনটেন্ট প্রকাশ করারও ইচ্ছা আছে।


আরো সংবাদ



premium cement