২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রতিদিনই যেন নারী তার সম্মানটা পায়

-

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়। আজ সেই দিন। জাতিসঙ্ঘ ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ নারী দিবস উদযাপন শুরু করে। যদিও এর আগে ১৯০৯-এর ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার এই দিবস উদযাপিত হয়েছিল। আমেরিকার সোসালিস্ট পার্টি পোশাক তৈরির শ্রমিকদের সম্মান জানাতে ১৯০৮ সালে ধর্মঘট ডেকেছিল। তাদের প্রতি সম্মান জানাতে এই দিনটি বেছে নেয়া হয়। অন্যদিকে, রাশিয়ার মহিলা শ্রমিকরা ২৮ ফেব্রুয়ারি নারী দিবস উদযাপনের সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এছাড়া ৮ মার্চ ইউরোপের মহিলারা শান্তিরক্ষা কমিটির কর্মীদের সমর্থনে এক সমাবেশের আয়োজন করেন। নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কয়েকজ শোবিজ তারকা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। লিখেছেন আলমগীর কবির

জয়া আহসান : নারী হিসেবে জন্ম নিতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমার ভেতরে এই উপলব্ধি যিনি জাগ্রত করে দিয়েছেন তিনি আমার মা। তার প্রদর্শিত পথই আজ আমার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করেছে। আমার নারী জনম আলোকিত করে দিয়েছেন মা। এই বিশেষ দিনে, আমার জীবনে মায়ের অবদানের কথা বর্ণনা করতে আমার কাছে যথেষ্ট শব্দ নেই। সব কিছুর জন্য তোমায় ধন্যবাদ মা।
মেহজাবিন : আমাদের সমাজ জীবন পূর্ণতা দিতে নারীর ভূমিকা অনেক। যেকোনো পরিবেশ আর পরিস্থিতিতে নারীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তাছাড়া প্রতিটি ছেলের জীবনে এক বা একাধিক নারী থাকে। সেটি হতে পারেন মা, বোন বা স্ত্রী। তাই প্রতিটি পুরুষের জীবনে নারীর অবদান অনেক। আর সমাজে বাস করতে হলে নারী-পুরুষ একসাথে চলতে পারলে সব দিক দিয়ে উন্নতি করা সম্ভব। এখন মিডিয়াতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও দিব্যি কাজ করে যাচ্ছে। তারাও এই অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করছে।
দীপা খন্দকার : আমি বুঝি না নারীর জন্য আলাদা দিবসের কেন প্রয়োজন হবে। আমি সব সময় বিশ্বাস করি প্রতিটা দিনই আমার আপনার সবার। এই একটা দিনকে বিশেষভাবে পালন করার পক্ষপাতী না আমি। আমার কাছে সব দিনই নারী দিবস। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নারীরা জীবনযুদ্ধে লিপ্ত হয়। যারা বাইরে চাকরি করেন বা ব্যবসা করেন তারা ঘরে ফিরে ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা সময় বের করেন। স্বামী, সন্তানের পাশাপাশি পরিবারের অন্যদেরও খোঁজখবর রাখতে হয় নারীর। আমার কাছে সব সময় মনে হয় পুরুষের চেয়ে নারীদের অনেক বেশি দায়িত্ব নিয়ে চলতে হয়। আর এই দায়িত্বটা হাসি মুখেই গ্রহণ করেন প্রতিটি নারী।
বাঁধন : প্রতিটি নারী একজন মানুষ। আমাদের সমাজ মেয়ে, নারী বলে তাদেরকে সবসময় আলাদা করে রাখে। আমার কথা হলো নারী হলেও সে কিন্তু একজন মানুষ। তাকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন দিতে জানি না আমরা। যেহেতু আমিও একজন নারী তাই আমি বলবো তাদেরকে প্রাপ্য সম্মানটা দেয়া হোক। আর নারী দিবস পালন করা নিয়ে আমার কোনো বাধা নেই। শুধু একটি দিনই নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবো আর বাকি দিনগুলো অসম্মান করবো এমনটা যেন না হয়। নারীদের প্রতি সম্মানের বিষয়টা যেন একদিনের হয়ে না যায়, প্রতিটা দিনই যেন একটা নারী তার সম্মানটা পায়। আমাদের মা, মেয়েরা যেন সবসময় নিরাপদ থাকে, সবখানে সম্মানটুকু পায় এটাই হোক সবার চাওয়া।
শবনম বুবলী : নারী দিবস পালন করা হয় নারীদের বিশেষ অধিকার আদায়ের জন্য। যার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে নারী, পুরুষ দু’জনেই সমান শক্তির মানুষ। তাই শুধু একদিন নারীদের মর্যাদা না দেখিয়ে সারা বছর দেখানো উচিত। তাহলে সেটা হবে নারীর প্রতি আসল অধিকার প্রদর্শন। আমাদের দেশের নারীরা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। আর যারা অবহেলার শিকার হচ্ছেন তারা প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে আছেন বলেই মনে করি। তাই সব নারীর এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।
মৌসুমী হামিদ : আমি বলবো যে দেশ এত বছরের পর বছর ধরে একজন নারীই পরিচালনা করে আসছেন সে দেশের প্রতিটা দিনই নারী দিবস । নারী সুন্দর, নারী মা, নারী অর্ধাঙ্গী, নারী কন্যা, নারীর নাড়ীর ক্ষমতা পুরো পৃথিবী বাঁচিয়ে রাখে ।
সাবিলা নূর : সত্যি বলতে আমার কাছে মনে হয়, নারী দিবস পালন করতে কোনো উপলক্ষ বা বিশেষ দিনের প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের মায়েরা কিন্তু কোনো বিশেষ উপলক্ষে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকে না। আমাদের বোনরা কিন্তু তাদের ছোট ভাই-বোনকে একটা গিফট্ কিনে দেয়ার জন্য শুধু কোনো বিশেষ দিনেই পাবলিক বাসে চড়ে টিউশনি করতে যায় না।
তাই আমার কাছে মনে হয় প্রতিটা দিনই নারী দিবস। এর জন্য আলাদা কোনো দিবস এর প্রয়োজন নেই। আর একটা বিশেষ ধন্যবাদ সেই পুরুষদের যারা তাদের জীবনসঙ্গীকে প্রতিদিন ভালো কিছু করতে উৎসাহ দেয়।


আরো সংবাদ



premium cement